নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চল চানপুরে আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ যুবক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে মোহিনীপুর গ্রামের সালাম গ্রুপ ও শামসু মেম্বার গ্রুপের সংঘর্ষে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলো- মোহিনীপুর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন (২৩) ও বারেক হাজির ছেলে বাশার (৩৫)। নিহতরা সালাম গ্রুপের সদস্য। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। প্রাথমিকভাবে আহতদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায়নি।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে বিগত কয়েকমাস ধরে ওই চরাঞ্চলের সালাম গ্রুপ এলাকার বাইরে ছিলো। আজ সকালে তারা এলাকায় ঢুকার চেষ্টা করলে অপরপক্ষ শামসু মেম্বার গ্রুপ বাঁধা দিলে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় আমিন ও বাশার নামে দুই যুবক নিহত হয়। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, শুনেছি, দুইজন মারা গেছেন। তবে একজনের লাশ বুঝে পেয়েছি। এলাকার পরিস্থিতি এ মুহূর্তে শান্ত আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মারমাদের মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব যে কারণে হয়, যেভাবে এল
মারমা জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাইং উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হয়ে আছে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব। এই উৎসবে পরস্পরের দিকে পানি ছিটিয়ে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ হন মারমারা। ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’(এসো হে সাংগ্রাইংয়ে সবাই মৈত্রী পানিবর্ষণে) গানটিও দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আছে এই উৎসবের ‘থিম সং’।
গবেষক ও মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবের শুরু গত শতকের সত্তরের দশকে। কিছু তরুণ মিয়ানমারে সাংগ্রাইং উৎসবে এ ধরনের আয়োজন দেখে দেশেও এর প্রচলন করেন। আর ‘সাংগ্রাইংমা ঞি ঞি ঞা ঞা রিকোজাই পামে’ উৎসবের থিম সং হয়েছে ১৯৮৪ সালে।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবকে অনেকেই ‘জলকেলি’ ও ‘পানি খেলা’ বলে থাকেন। তবে এসব নাম আপত্তিকর বলে মনে করেন মারমা সমাজের অনেকেই। তাঁদের দাবি, এর মধ্য দিয়ে ধর্মের যোগ থাকা অনুষ্ঠানটি ভুলভাবে উপস্থাপন হয়।
এবারের সাংগ্রাইং উপলক্ষে আজ বুধবার থেকে বান্দরবান জেলা শহরে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব শুরু হয়েছে। তবে জেলার অন্যান্য জায়গায় গতকাল মঙ্গলবার এই উৎসব শুরু হয়। খাগড়াছড়িতে কোথাও কোথাও সোমবার শুরু হয়েছে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব।
মারমা জনগোষ্ঠীর প্রবীণদের একজন শিক্ষাবিদ থোয়াইংচ প্রু। তিনি প্রথম আলকে বলেন, সাংগ্রাইং আখ্যেয়া বা মূল সাংগ্রাই দিনে বুদ্ধমূর্তি স্নানের আগে মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসব হয় না। এটা প্রথাসিদ্ধ রীতি। তাই মৈত্রী পানিবর্ষণের সঙ্গে ধর্মের যোগ বেশ স্পষ্ট। তিনি বলেন, পানিকে মারমারা পবিত্র মনে করে। তাই সাংগ্রাইং উৎসবে বন্ধুত্বের বন্ধন এবং পরস্পরের প্রতি মৈত্রী ভাবনা নবায়ন ও সুদৃঢ় করার জন্য একে-অপরের দিকে পানি ছোড়েন। পানি ছিটানোর পর কেউ বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখালে বোঝা যাবে, বন্ধুত্বের সম্পর্কে ও বন্ধনে টানাপোড়েন আছে। এটিই মৈত্রী পানিবর্ষণের মূল্যবোধ। এ কারণে অনেক সময় অযাচিত কাউকে পানিবর্ষণ করলে আগে সালিসের মুখোমুখিও হতে হতো।
মৈত্রী পানিবর্ষণ উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। গতকাল বান্দরবানের ডলুপাড়ায়