ধামরাইয়ে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যায় প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫
Published: 21st, March 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে বিএনপি নেতা আবুল কাশেমকে (৫৭) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়। গতকাল ধামরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আব্দুল জলিল (৫০), মো. আব্দুল বাছেদ (৪৭), আবু সাঈম (৪০), আব্দুল গফুর (৪৭) ও আলী হোসেন (৩৩)। তারা সবাই ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকার বাসিন্দা।
এর আগে, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকায় বাড়ির পাশে সড়কের ওপরে তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে দুপুর ১টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে মামলার জন্য আবুল কাশেমের স্ত্রী মোসা.
মামলার আসামিরা হলেন- মো. আব্দুল জলিল (৫০), মো. আব্দুল বাছেদ (৪৭), মো. বাবুল মিয়া (৩৮), মো. বিল্টু (২৭), আব্দুল আহাদ (৪৫), আবু সাঈম (৪০), আব্দুল গফুর (৪৭) ও আব্দুল মালেকসহ (৪২) অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন। তারা ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ও সানোড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
নিহত আবুল কাশেম (৫৭) ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকার মৃত রইজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তিনি গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন।
মামলার এজাহারে পুলিশ বলছে, স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, আবুল কাশেম পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। ২০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে চিকিৎসার জন্য মানিকগঞ্জে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নিজের বাড়ি থেকে ১০০ গজ পশ্চিমে পাকা সড়কে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবুল কাশেমের ওপর হামলা চালায়। তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার কোমরের ডান পাশে পিছনে, কোমরের নিচে বাম পাশে, হাঁটুর উপরে কোমরের নিচে ডান পাশে গভীর গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করে রক্তাক্ত মুমুর্ষু অবস্থায় ঘটনাস্থলে ফেলে যায়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পার্শ্ববর্তী কাওয়ালীপাড়া একটি হাসপাতালে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে মরদেহ ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আতাউল মাহমুদ খান বলেন, ‘‘হত্যার খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সকালে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। অন্যান্য আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’’
সাব্বির/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতা পরিচয়ে হামলা, লুটপাট ও নির্যাতনের অভিযোগ
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি পরিচয়ে নেতা জমির মালিকানা দাবি করে জোরপূর্বক জমি দখল, হামলা, লুটপাট ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকাল ১০টার সময়, সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলী ক্যানেলপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী আকলিমা আক্তার ডলি। অভিযোগের ভিত্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই মাহবুব তাৎক্ষণিক সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টার দিকে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মিজমিজি পাগলাবাড়ি এলাকার কথিত বিএনপি নেতা ইলিয়াস ও জয়নালের নেতৃত্বে ৭০-৮০ জনের একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র, লোহার রড, রামদা ও চাপাতি নিয়ে, জমির মালিকানা দাবি করে বিভিন্ন বাড়িঘরে হামলা করে, এক ভুক্তভোগীর জমির সীমানা প্রাচীন ভাঙচুর করে এবং দখল করার উদ্দেশ্যে কয়েকটি সাইনবোর্ড সাঁটিয়ে দেয়।
এসময় বাড়িওয়ালারা তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা ভুক্তভোগীদের উপর হামলা, নারীদের শ্লীলতাহানি, স্বর্ণালংকার লুট ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় ঘটনাস্থলের সামনে স্থাপিত আল জাকির মাদ্রাসার সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙ্গচুর করা হয়। যেখানে ধরা পরেছিল অভিযুক্তদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কিছু চিত্র।
এদিকে এবিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হামলা, লুটপাট ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ তোলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একাধিক অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগকারী খাদিজা ও আসমা আক্তার জানান, তাদের সম্পদের ক্ষতি সাধন কালে তারা বাঁধা দিতে গেলে, ১৫-২০ জন যুবক তাদের উপর হামলা করে এবং তাদের গলাচিপে ধরে তাদের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এসময় তাদের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।
অপর এক ভুক্তভোগী সাবেক পুলিশ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আক্ষেপ নিয়ে বলেন, আমি ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে আমাদের উপর হামলার বিষয়ে জানিয়ে সাহায্য চাইলেও আমাদের সাহায্যে এখন পর্যন্ত কোন পুলিশ সদস্য আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে এখন থানায় এসে অভিযোগ দিলাম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঘটনার আংশিক সত্যতা স্বীকার করে জানান, এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে ভুক্তভোগী বাড়িওয়ালাদের বাকবিতন্ডা হয়েছে এবং অভিযোগকারীর একটি দোকানের তালা খুলেছিল বসার জন্য, পরে এসআই মাহবুবের নেতৃত্বেই সেই তালা পুনরায় ঝুলিয়ে দেয়া হয়।
এছাড়া নারী নির্যাতন, স্বর্ণালংকার লুট, ও সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙ্গচুরের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।