৭ বদলি নামিয়ে ব্রাজিল কি ফিফার নিয়ম ভেঙেছে
Published: 21st, March 2025 GMT
করোনার সময়ে একটি দলকে চারের পরিবর্তে সর্বোচ্চ পাঁচজন বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামানোর সুযোগ দেওয়া হয়। ফুটবলের আইন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বোর্ড (আইএফএবি) এই নিয়ম অনুমোদন করার পর ২০২১ সালে তা স্থায়ীভাবে কার্যকর করে ফিফা।
কিন্তু আজ কলম্বিয়ার বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে পাঁচ নয়, সাত বদলি নামিয়েছে ব্রাজিল। এ নিয়ে তাই প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি ব্রাজিল কোচ দরিভাল জুনিয়র ফিফার নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত দুই বদলি খেলোয়াড় মাঠে নামিয়েছেন?
উত্তর হচ্ছে ‘না’। দরিভাল নিয়মের মধ্যে থেকেই বেঞ্চে থাকা সাতজনকে খেলিয়েছেন।
ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা অ্যারেনায় আজ ম্যাচের প্রথমার্ধ ১–১ সমতায় শেষ হয়। যোগ করা সময়ের অন্তিম মুহূর্তে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের গোলে জেতে ব্রাজিল।
দলের হয়ে জয়সূচক গোল করার পরপরই মাঠ ছাড়েন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিসিয়ুস। তাঁর পরিবর্তে ক্ষণিকের জন্য নেমে ব্রাজিলের জার্সিতে অভিষেক হয় ফ্লামেঙ্গোর সেন্টার–ব্যাক লিও ওরতিজের। ম্যাচে ওরতিজই ছিলেন শেষ এবং ব্রাজিলের সপ্তম বদলি।
এর আগে বদলি নেমেছেন জোয়েলিন্তন, মাথেউস কুনিয়া, সাভিনিও, আন্দ্রে, ওয়েসলি ফ্রাঙ্কা ও বেন্তো। তাঁদের জায়গা দিতে গেরসন, জোয়াও পেদ্রো, রদ্রিগো, ব্রুনো গিমারায়েস, ভান্দেরসন ও আলিসন বেকারকে উঠে যেতে হয়। মূলত গোলকিপার আলিসনের কারণেই সাত বদলি খেলাতে পেরেছে ব্রাজিল।
৬৯ মিনিটে একটি ফ্রি–কিক শট পাঞ্চ করে বিপদমুক্ত করতে গিয়ে কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার দাভিদসন সানচেজের মাথার সঙ্গে গোলকিপার আলিসনের মাথা সজোরে ধাক্কা লাগে। দুজন সঙ্গে সঙ্গে মাঠে লুটিয়ে পড়েন। এ ঘটনায় প্রায় ১০ মিনিট খেলা বন্ধ থাকে। দুজনকেই মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁরা আর নামতে পারেননি।
ফিফার কনকাশন প্রটোকলে বলা হয়েছে, কোনো দলের একজন খেলোয়াড় মাথায় আঘাতজনিত চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে তাঁর সঙ্গে অতিরিক্ত আরও একজনকে খেলানো যাবে। এ কারণেই মাথায় আঘাত পাওয়া গোলকিপার আলিসনের পরিবর্তে নামেন বেন্তো এবং শেষ দিকে ভিনির পরিবর্তে নামেন ওরতিজ।
এই নিয়ম অনুযায়ী শুধু ব্রাজিলই নয়, কলম্বিয়ারও সাত বদলি নামানোর সুযোগ ছিল। কারণ, তাদের ডিফেন্ডার সানচেজও মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তবে দলটির কোচ নেস্তর লরেঞ্জো বেঞ্চ থেকে নামিয়েছেন চারজনকে।
আরও পড়ুনঅবশেষে ভিনির ‘হলুদ রাইফেল’ থেকে ছুটল ‘গুলি’১ ঘণ্টা আগেঘরের মাঠে আজকের জয়ের পর দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের (কনমেবল) বিশ্বকাপ বাছাইয়ের পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে উঠে এসেছে ব্রাজিল। ১৩ ম্যাচে দলটির পয়েন্ট ২১। ব্রাজিলের চেয়ে এক ম্যাচ কম খেলে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।
ব্রাজিলের পরেই ম্যাচ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই। বুয়েনস এইরেসের মাস মনুমেন্তাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকালে মুখোমুখি হবে দুই দল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাত বছর ধরে হেলিকপ্টার বানাচ্ছেন রাজমিস্ত্রী আরিফুল, তিন সপ্তাহের মধ্যে ওড়ানোর স্বপ্ন
শিবগঞ্জ উপজেলার কিচক ইউনিয়নের মাটিয়ান গ্রামের রাজমিস্ত্রী আরিফুল ইসলাম হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সাত বছর ধরে একটি হেলিকপ্টার তৈরি করায় এ নিয়ে এলাকায় তাঁকে নিয়ে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে হেলিকপ্টার তৈরির কাজ শেষ করে তা আকাশে ওড়াতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।
আরিফুল মাটিয়ান গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। বাড়িতে ছোট্ট একটি ঘরের মধ্যে তৈরি হচ্ছে হেলিকপ্টার। আশেপাশে পড়ে রয়েছে নানা সরঞ্জাম। হেলিকপ্টার তৈরির স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে ২০১৮ সাল থেকে সাত বছর ধরে দৈনিক আয়ের কিছু অংশ থেকে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন তিনি। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বাঁকি কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও ৫০ হাজার টাকার দরকার বলে জানান তিনি। টাকার ব্যবস্থা হলে আগামী ২০ দিনের মধ্যে অবশিষ্ট কাজ শেষ করে হেলিকপ্টারটি আকাশে উড়াতে সক্ষম হবেন বলে জানান তিনি।
মাটিয়ান গ্রামের জাকারিয়া জুয়েল বলেন, ছোটবেলা থেকে আরিফুল অনেক কিছু তৈরি করতেন। দরিদ্র আরিফুল তাঁর উপার্জনের টাকা দিয়ে সরঞ্জাম কিনে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। সরকারিভাবে কোনো সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে আরও ভালো কিছু তৈরি করতে পারবেন।
আরিফুলের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, এক মেয়েকে নিয়ে অতি কষ্টে আমরা জীবনযাপন করি। আমার স্বামী তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে উপার্জনের টাকা ব্যয় করে হেলিকপ্টার তৈরি করছেন। এতে আমাদের কষ্ট হলেও আমরা খুশি।
কিচক ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন বলেন, হেলিকপ্টার তৈরির বিষয়টি আমি জেনেছি। আমরা তাঁর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, হেলিকপ্টার তৈরি করায় আমরা তাঁকে সাধুবাদ জানাই। এ কাজে উৎসাহ যোগাতে প্রয়োজনে তাঁকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা হবে। হেলিকপ্টার দেখার জন্য প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে শতশত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে।