Samakal:
2025-03-21@17:52:50 GMT

বোলিংয়ে আর বাধা নেই সাকিবের

Published: 21st, March 2025 GMT

বোলিংয়ে আর বাধা নেই সাকিবের

নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে একটা সুখবর পেলেন সাকিব আল হাসান। দু’বার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বারে এসে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় পাস করলেন তারকা এ অলরাউন্ডার। যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে বোলিংয়ে সাকিবের আর কোনো বাধা নেই। তাঁকে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায় থেকে মুক্তি দিয়েছে ইংল্যান্ডের লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার রিপোর্ট।

গত সেপ্টেম্বরে সারের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেট খেলতে গিয়ে সাকিবের বোলিং অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। এর পর ইসিবি (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটে সাকিবের বোলিংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। ২০ বছরের ক্যারিয়ারে কখনোই বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্নের মুখে না পড়া বাঁহাতি এ স্পিনার লাফবোরো ল্যাবেই প্রথম পরীক্ষা দেন এবং অকৃতকার্য হন। গত ডিসেম্বরে বিসিবি (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) জানায়, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট বাদে আর কোথাও বোলিং করতে পারবেন না সাকিব। এর পর চেন্নাইয়ে আরেক দফা পরীক্ষা দিয়েও অ্যাকশন শুদ্ধ প্রমাণে ব্যর্থ হন তিনি। এর পর আর তাড়াহুড়ো না করে বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কিছু কাজ করেন সাকিব। গত ৯ মার্চ সেই লাফবোরোতেই পরীক্ষা দেন সাকিব। গত বুধবার গভীর রাতে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুক্তির সংবাদ।

সাকিবের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, পরীক্ষায় সাকিব মোট ২২টি ডেলিভারি দিয়েছেন, যার প্রায় সবক’টিই ত্রুটিমুক্ত। এ পরীক্ষার উদ্দেশ্যে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্যে যান সাকিব। সারের সঙ্গে প্রায় দুই সপ্তাহ অনুশীলন করেন তিনি। এই সারের হয়ে খেলতে গিয়েই বোলিং নিষেধাজ্ঞায় পড়েছিলেন সাকিব। নিজেদের মাঠ কিয়া ওভালে বিশেষজ্ঞ কোচ, জিমনেশিয়াম সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সাকিবকে দিয়েছে তারা। প্রতিদিন প্রায় চার ঘণ্টা করে অনুশীলন করেন তিনি। প্রায় দুই সপ্তাহ অনুশীলনের পর তৃতীয় বার পরীক্ষা দিয়ে অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের দায় থেকে মুক্তি পান তিনি। সাকিবের বৈধতা ফিরে পাওয়ার বিষয়টি বিসিবি থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে, ‘গত ৯ মার্চ ইংল্যান্ডের লাফবোরো বিশ্ববিদ্যালয়ে বোলিং অ্যাকশন পরীক্ষা দেন সাকিব। 

সর্বশেষ মূল্যায়নের ফল অনুসারে, সাকিব তাঁর বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করেছেন। এর ফলে ইসিবি তাদের প্রতিযোগিতামূলক সব কাউন্টি ক্রিকেট ও দ্য হান্ড্রেড থেকে সাকিবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে।’ ইসিবি শিগগির মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে বিষয়টি বিস্তারিত আকারে তুলে ধরবে বলেও জানান বিসিবি। অবৈধ বোলিং অ্যাকশন থেকে মুক্তি পেলেও রাজনৈতিক কারণে দেশে আসতে না পারায় জাতীয় দলের হয়ে তাঁর মাঠে নামা অনিশ্চিত। তবে দেশের বাইরে বিভিন্ন লিগে তাঁর সুযোগ বেড়ে যাবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন অ য কশন পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

জীবনধারণের ভরসা পাহাড়ি ছড়া ও পুকুরের পানি

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তঘেঁষা দুটি ইউনিয়নে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এখানকার মানুষের জীবনধারণের ভরসা পাহাড়ি ছড়া ও পুকুরের পানি।
গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের গিলাগড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ি ছড়ায় বালু সরিয়ে গর্ত করে পানি সংগ্রহ করছেন আমেনা খাতুন ও জোসনা বেগম। এ সময় জিজ্ঞাসা করতেই আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার কোমর লইয়া খারাইবার পারি না। কষ্ট কইরা এই ঝর্ণার পানি লইয়া খাইয়া বাঁচুন লাগে। সরকার যদি আমাগো একটা ব্যবস্থা করতো, তাইলে বিরাট উপকার অইতো।’
এমন আক্ষেপ শুধু আমেনা বেগমের নয়, ধোবাউড়া এলাকার দক্ষিণ মাইজপাড়া ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের অন্তত ১২টি গ্রামের মানুষের এমন আক্ষেপ দীর্ঘদিনের। সুপেয় পানির জন্য তাদের সংগ্রাম যেন শেষ হবার নয়। মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ছড়ার ময়লা পানি ও পুকুরের ঘোলা পানি দিয়ে গৃহস্থালির কাজ সারতে হয় তাদের। খেতেও হচ্ছে সেই পানি। এতে দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি।
সরেজমিন দেখা গেছে, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের গিলগড়া, কাশিপুর, বাকপাড়া, শানখলা, পঞ্চনন্দপুর গ্রাম ও ঘোষগাঁও ইউনিয়নের গোলইভাংগা, চন্দকোনা এলাকা পাহাড়ি অঞ্চল। এসব এলাকায় নলকূপ বসানো যায় না। এসব এলাকায় বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি আর শুকনো মৌসুমে পুকুর ও পাহাড়ি ছড়ার পানি পান করতে হয়। এতে পেটের পীড়া, চর্মসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তারা। এসব গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি থাকায় তাদের পক্ষে গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব নয়। গ্রামে দু-একজন অধিক অর্থ ব্যয় করে সাবমারসিবল পাম্প বসালেও বেশির ভাগ মানুষের ভাগ্যে জুটছে না বিশুদ্ধ পানি।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ের তথ্যমতে, দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন হচ্ছে ধোবাউড়া উপজেলার মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা। এই এলাকা আদিবাসী অধ্যুষিত। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় নলকূপের পাইপ মাটির গভীরে পানির স্তর পর্যন্ত নেওয়া সম্ভব হয় না। ৫০-৬০ মিটার গভীরে গেলেই পাইপ আটকে যায় পাথরে। তাই গভীর নলকূপ বসানো কষ্টসাধ্য। যারা নিজ উদ্যোগে অগভীর নলকূপ বসিয়েছেন, তাদের নলকূপেও শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না।
আদিবাসী নারী ইতি চিসিম ছড়ার পানি সংগ্রহ করতে এসে জানান, তাঁর বাড়িতে নলকূপ না থাকায় পানির জন্য সারা বছরই কষ্ট করতে হয়। তিনি বলেন, ‘আমরার কল (টিউবওয়েল) নাই। আমরা অনেক আগে থাইকা পাহাড়ের ছড়ার পানি খাই। রান্নাবান্নাসহ সব কাজ করি। খালি আমি না, সবারই এই অবস্থা।’
পানির কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আক্ষেপ করেন ঘোষগাঁও ইউনিয়নের গোলইভাঙ্গা সীমান্ত এলাকার আমির উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বাবারে, আমরা শুষ্ক মৌসুমে হিসাব করে পানি পান করি। টিউবওয়েলে পানি উঠে না। পুকুর আর ছড়াই আমাদের ভরসা।’
দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির জানান, তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিন বছরে সীমান্ত এলাকায় ১০টি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করেছেন। ওই এলাকার কেউ আবেদন করেননি। আবেদন করলে বিকল্প পদ্ধতিতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হবে।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলী শফিউল আজমের দাবি, সীমান্ত এলাকায় দুটি নলকূপ দেওয়া হয়েছে। কিছু এলাকায় নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। এবার নতুন প্রকল্প সব প্রতিষ্ঠানভিত্তিক।
ধোবাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত শারমিনের ভাষ্য, পাহাড়ি এলাকায় পাথরের কারণে গভীর নলকূপ বসানো সম্ভব হয় না। পাহাড়ি এলাকায় পানি সংকট নিরসনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ করতে চাইছেন তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ওই গ্রামগুলোতে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ