যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎ ডিমের দাম অনেকটা বেড়ে যাওয়া নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে হইচই চলেছে। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতেও ডিমের দাম বেড়ে গেছে। তাই বলে একটি ডিমের দাম ৪২০ পাউন্ড বা ৫৫০ মার্কিন ডলারের বেশি!

এই ডিম মোটেও সাধারণ কোনো ডিম নয়, একেবারে গোলাকৃতির ডিম। গোলাকৃতির ডিম খুবই বিরল, প্রতি ১০০ কোটিতে একটি ডিম এমন হতে পারে।

গত মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে এমন একটি ডিম নিলামে ৪২০ পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার দাম ৬৬ হাজার টাকার বেশি।

ফেনটন ফার্মে গত জানুয়ারিতে ওই ডিম খুঁজে পাওয়া যায়। পরে ডিমটি নিলামে তোলা হয়। নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ দাতব্যকাজে ব্যয় হবে।

ফেনটন ফার্মের ডিম নিয়ে কাজ করেন অ্যালিসন গ্রিন। তিন বছরের পেশাজীবনে তিনি সপ্তাহে গড়ে ৩০ হাজার ডিম বাছাই করেন। কিন্তু এই জানুয়ারির আগে তিনি কখনো সম্পূর্ণ গোলাকৃতির কোনো ডিম দেখেননি।

ফেনটন ফার্মে পাওয়া ডিমটি যেন নষ্ট হয়ে না যায়, তাই নিলামের আগপর্যন্ত সেটিকে লবণের ভেতর সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছিল। নিলামে

ডিমটি যে দামে বিক্রি হয়েছে, তাতে বেশ অবাক হয়েছেন গ্রিন।

গ্রিন আশা করেছিলেন, ডিমটি হয়তো ১০ পাউন্ডের বেশি দামে বিক্রি হবে। যদি নিলামে ডিমটির দাম এর চেয়ে কম ওঠে, তবে তিনি নিজেই এটি কিনে নেওয়ার কথাও ভেবে রেখেছিলেন। কিন্তু নিলামে তাঁর সব প্রত্যাশা এবং শঙ্কা একই সঙ্গে ভেসে যায়। গ্রিনকে অবাক করে দিয়ে ডিমটি ৪২০ পাউন্ডে বিক্রি হয়।

নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ ডেভন রেপ ক্রাইসিস অর্গানাইজেশনে দান করা হবে। সংগঠনটি যৌন নিপীড়ন এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের সহায়তায় কাজ করে থাকে।

কয়েক বছরে আরও কয়েকটি গোলাকৃতির ডিম পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২০২৩ সালে অস্ট্রেলিয়ার এক নারী দোকান থেকে কিনে আনা ডিমের ভেতর একটি পুরোপুরি গোলাকৃতির ডিম খুঁজে পান।

এর আগের বছর ২০২২ সালে ইংল্যান্ডে একটি পরিবারের পালা মুরগি একটি গোল ডিম পাড়ে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টানা তিন জয়ে বিশ্বকাপের আরও কাছে বাংলাদেশ

১০১, ৫১ রানের পর অপরাজিত ৮৩। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা অধিনায়ক নিগার সুলতানা ব্যাটিং–ঝলক দেখিয়েই চলেছেন। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ নিগারের আগে ফিফটি করেছিলেন ফারজানা হক ও শারমিন আক্তার। তাতে বাংলাদেশ নারী দল ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২৭৬ রান, যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ

বাংলাদেশের বোলিং শক্তিমত্তা বিবেচনায় এই রান তাড়া করে জিততে হলে স্কটল্যান্ড নারী দলকে অভাবনীয় কিছু করতে হতো। কিন্তু বল হাতে নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান, জান্নাতুল ফেরদৌসরা নিজেদের কাজ ঠিকঠাকভাবে করায় লক্ষ্যের ধারেকাছেও যেতে পারল না স্কটিশ মেয়েরা; ৯ উইকেট হারিয়ে থামতে হলো ২৪২ রানে। ৩৪ রানের অনায়াস জয়ে বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার আরও কাছে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ দল।

মেয়েদের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এটি বাংলাদেশের টানা তৃতীয় জয়। গত বৃহস্পতিবার প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডকে ১৭৮ রানে হারিয়েছে নিগারের দল, যা নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে রানের হিসেবে সবচেয়ে বড় জয়। নিগারের সেঞ্চুরিতে সেই ম্যাচেই নিজেদের দলীয় সর্বোচ্চ ২৭১ রান করেছিল বাংলাদেশ।

পাঁচদিনের ব্যবধানে সেটিকে ছাড়িয়ে আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে লাল–সবুজের প্রতিনিধিরা করল ২৭৬ রান। মাঝে গত রোববার রিতু মনির ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ড মেয়েদের বিপক্ষে ২ উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয় পায় বাংলাদেশ।  

টানা তিন জয়ে বাছাইয়ের স্বাগতিক পাকিস্তানকে টপকে পয়েন্ট তালিকার চূড়ায় উঠল বাংলাদেশ। পাকিস্তানি মেয়েরাও এখন পর্যন্ত নিজেদের তিন ম্যাচেই জিতেছে। এই মুহূর্তে দুই দলের পয়েন্ট সমান ৬ করে হলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকায় বাংলাদেশ শীর্ষে ও পাকিস্তান দুইয়ে।

বৃহস্পতিবার নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচ জিতলেই মিলবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মেয়েদের বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের টিকিট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাতে না পারলেও অবশ্য ক্ষতি নেই। শনিবার নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতলেও বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেবে বাংলাদেশ। এমনকি শেষ দুই ম্যাচে হারলেও নেট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যেতে পারে নিগারের দল।

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আজ টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল মন্থর। ১৪ রান করা ওপেনার ইশমা তানজিম ৮.৩ ওভারে যখন আউট হন, বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৩৫।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ইনিংসের ভিত গড়েন শারমিন ও ফারজানা। ১২৭ বলে ১০৩ রানের জুটি গড়েন দুজন, যেখানে ফারজানার অবদান ৪৮ বলে ৪০ ও শারমিনের ৭৯ বলে ৫৭। এটি তাঁদের চতুর্থ শতরানের জুটি।

৩০তম ওভারে শারমিন আউট হওয়ার পর আট ওভারের মধ্যে ফারজানা ও সোবহানা মোস্তারিকেও (৯) ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয়। ৩৭.৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ১৭৬।

এখান থেকে পঞ্চম উইকেটে রিতু মনির সঙ্গে ৩৭ এবং ষষ্ঠ উইকেটে ফাহিমার সঙ্গে ৪৪ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন নিগার। ২২ বলে ২৬ রান করেন ফাহিমা। ৫৩ রানে ২ উইকেট নিয়ে স্কটল্যান্ডের সেরা বোলার অধিনায়ক ক্যাথরিন ব্রাইস।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে নাহিদা আক্তার ও মারুফা আক্তারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে প্রথম পাওয়ারপ্লেতেই ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে পড়ে স্কটল্যান্ড। চতুর্থ উইকেটে আলিসা লিস্টারের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটি গড়ে বিপর্যয় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ব্রাইস। কিন্তু দলীয় ৭৮ রানে মারুফা লিস্টারকে রানআউট করলে ভাঙে এই জুটি।

এরপর লেগ স্পিনার রাবেয়া খান ও অফ স্পিনার জান্নাতুল ফেরদৌস মিলে আরও ৩ উইকেট নেন। ১১০ রানে ৭ উইকেট হারানো স্কটল্যান্ডকে দেখে তখন মনে হচ্ছিল বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যাপার মাত্র।

কিন্তু প্রিয়ানাজ চ্যাটার্জী ও র‍্যাচেল স্ল্যাটার যেন আজ ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন। দুজনে মিলে যোগ করেন ১১৫ রান, যা স্কটিশ মেয়েদের ওয়ানডে ইতিহাসে যেকোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। প্রিয়ানাজ ও র‍্যাচেল দুজনই করেন সমান ৬১ রান।

তাতেও বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হয়নি। স্কটল্যান্ড শুধু হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে আর বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা একটু বেড়েছে। এই আরকি!

সম্পর্কিত নিবন্ধ