আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবি-রাবিতে বিক্ষোভ
Published: 21st, March 2025 GMT
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ করেছেন একদল শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাবিতে এবং রাত আড়াইটার দিকে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী সমাবেশ হয়।
আন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার অবস্থান ব্যক্ত করার পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ঢাবি ও রাবিতে মধ্যরাতে বিক্ষোভ হয়। এই কর্মসূচিতে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে তাদের সঙ্গে বৈঠকে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
অবশ্য প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “যারা হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত, দেশের আদালতে তাদের বিচার করা হবে।”
‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো, করতে হবে’
ঢাবির হল পাড়া থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর থেকে রাজু ভাস্কর্যে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ধরি ধরি ধরি না, ধরলে কিন্তু ছাড়ি না’, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করো, করতে হবে’, সারা বাংলায় খবর দে, আওয়ামী লীগের কবর দে’, ‘আওয়ামী লীগের চামড়া, তুলে নেব আমরা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, জুলাইয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যারা গণহত্যার করেছিল এবং মদদ দিয়েছিল, সেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে দেখিনি। এটা লজ্জাজনক।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো ভাবনা নেই বলে প্রধান উপদেষ্টার করা মন্তব্যের কড়া প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে ঢাবি শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, “যে বাংলায় আবু সাঈদ প্রাণ দিয়েছেন, ওয়াসিম প্রাণ দিয়েছেন, সে বাঙলায় আওয়ামী লীগ থাকতে পারবে না। আন্দোলনে ২ হাজারের অধিক প্রাণ দিয়েছেন, হাজার হাজার আহতের অনেকে এখনো হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।”
“তাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে যদি এই সরকার বলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে পারবে না, এর চেয়ে বড় লজ্জা হতে পারে না। যে বাংলায় আওয়ামী লীগ গণহত্যা করেছে, সেখানে তারা থাকতে পারবে না। আমরা তা মেনে নেব না,” বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জুবায়ের বলেন, “শহীদের রক্তের সঙ্গে কোনো চক্রান্ত মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায়ে নিষিদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করে জনমত নিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।”
ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, “এখন ক্ষমতা লোভী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা আওয়ামী লীগকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জনগণ দিয়ে দিয়েছে।”
“এ দেশে আওয়ামী লীগ থাকবে না-হলে ছাত্রসমাজ থাকবে। শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত এ দেশে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে,” বলেন তিনি।
মোসাদ্দেক আলী বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করার সিদ্ধান্তকে আমরা ধিক্কার জানাই। আপনারা শহীদদের এবং আহত ভাইদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। প্রধান উপদেষ্টা যদি তার বক্তব্য প্রত্যাহার না করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আমাদের বলিষ্ঠ অবস্থান থাকবে।”
সমাবেশ থেকে শুক্রবার বেলা ৩টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন বিক্ষোভকারীরা।
‘বিচার বিচার বিচার চাই, আওয়ামী লীগের বিচার চাই’
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান।
তারা ‘শেইম শেইম, ক্যান্টনমেন্ট’, ‘বিচার নিয়ে টালবাহানা, চলবে না চলবে না’, ‘বিচার বিচার বিচার চাই, আওয়ামী লীগের বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, করতে হবে’, স্লোগান দেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে রাবি শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি। অথচ ফ্যাসিস্টদের ফেরানোর ষড়যন্ত্র চলছে। ছাত্র-জনতার শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে ফ্যাসিস্টদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলবে। যারা এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবে, তাদেরও পরিণতি ফ্যাসিস্টদের মতো করা হবে।
বিক্ষোভে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “গণভবন যেভাবে দখল হয়েছিল, ঠিক সেভাবে ক্যান্টনমেন্টও দখল করা হবে। আওয়ামী লীগের মতো খুনি ফ্যাসিস্ট বাহিনীগুলোর উদ্দেশে বলছি, আপনারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবেন না।”
রাবির জোহা চত্বরে বিক্ষোভ দেখান শিক্ষার্থীরা।
“ঠিক যেভাবে হাসিনাকে সরান হয়েছিল, বাংলার জনগণও আপনাদের সরিয়ে দিতে এক মুহূর্তও ভাববে না,’ বলে ফাহিম রেজা।
সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, “৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগের কবর রচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ যদি ফিরে আসে, তাহলে তা আমাদের জীবন ও মৃত্যুর বিনিময়ে হবে।”
তিনি বলেন, “কোনোভাবেই ক্যান্টনমেন্ট থেকে বাংলাদেশ পরিচালিত হতে পারে না। যদি ক্যান্টনমেন্ট থেকে বাংলাদেশ পরিচালনার ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়, তাহলে গণভবনের মতো ক্যান্টনমেন্টও দখল করতে বাধ্য হব।”
ঢাকা/সৌরভ/ফাহিম/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক য ন টনম ন ট ন ষ দ ধ কর র ন ষ দ ধ করত সরক র র গণহত য আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা গাজাবাসী নিজেদের আর কত মিথ্যা বলব
আমরা গাজার মানুষ বারবার হুমকির মুখে পড়েছি। আমরা আমাদের ‘সাফ’ করে দেওয়ার হুমকি শুনেছি; গণহত্যার হুমকি শুনেছি। আমাদের ওপর ‘জাহান্নাম’ নামিয়ে আনার হুমকি শুনেছি। আসলে আমরা তো ইতিমধ্যেই জাহান্নাম পার করেছি। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে ১৯ মার্চ ২০২৫—গণহত্যার এই দহনকালে গাজার ২০ লাখ ফিলিস্তিনির মতো আমিও বেঁচে আছি।
সত্যি বলতে, আমি বেঁচে আছি জীবনকে আঁকড়ে ধরে নয়, বরং ‘লাইফ’ (জীবন) শব্দ থেকে ‘এফ’ ফেলে দিয়ে ‘লাই’ (মিথ্যা) ধরে রেখে বেঁচে আছি। যত বেশি নিজেকে মিথ্যা বলেছি, ততই আমার নাজুক অস্তিত্ব টিকেছে। প্রথম মিথ্যাটার কথা এখনো মনে পড়ে। সেটা গণহত্যারও অনেক আগের কথা।
২০০৮-০৯ সালে ইসরায়েলের গাজা আক্রমণের পর নিজেকে বলেছিলাম, ‘আর কখনো এমন যুদ্ধ দেখব না।’ সেটি একেবারেই শিশুসুলভ মিথ্যা ছিল। এরপর ২০১২ সালেও যুদ্ধ দেখলাম। ২০১৪ সালে দেখলাম। ২০২১ সালে দেখলাম। এমনকি ২০২৩ সালের মে মাসেও।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় যখন ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো গাজার ওপর নির্বিচার বোমাবর্ষণ শুরু করল; তখন আমার মা ভয়ে কাঁপতে লাগলেন। ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন। আমি মাকে জড়িয়ে ধরলাম। সেই মুহূর্তে সত্য বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেদিন মাকে আর নিজেকে বললাম, ‘এটাই আমাদের করুণ জীবনের শেষ অধ্যায়।’ মনে হচ্ছিল, সামনে যা আসছে, তাতে কোনো না কোনোভাবে মরবই। বাঁচার কোনো পথ নেই। মা-ও তা–ই ভেবেছিলেন; তাই কাঁদছিলেন।
কিন্তু নিশ্চিত মৃত্যুকে পুরোপুরি মেনে নিয়ে কীভাবে বাঁচা সম্ভব? মানুষ স্বভাবতই বাঁচতে চায়। তাই আবার নিজেকে মিথ্যা বলা শুরু করলাম...
আমি যুদ্ধের মধ্যে বড় হয়েছি এবং ১৫ মাসের গণহত্যার মধ্যেও বেঁচে থেকেছি। তবু আমি আশ্চর্য হচ্ছি, এত বড় যন্ত্রণার পরও আমি ভয় থেকে বাঁচার কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি। আমি এখনো সামনের দিন নিয়ে ভয় পাচ্ছি।শিগগিরই যখন ১৭ অক্টোবর ইসরায়েল ব্যাপ্টিস্ট হাসপাতালে হামলা করে শত শত মানুষকে হত্যা করে, তখন আমি নিজেকে মিথ্যা বলেছিলাম। আমি
নিজেকে বলেছিলাম, গাজার জন্য পৃথিবী উঠে দাঁড়াবে এবং আর কখনো ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজাকে বোমা মারবে না। এটা ছিল একটি স্বল্পস্থায়ী মিথ্যা। এরপর ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ তীব্রতর হয়ে উঠেছিল এবং গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছিল।
যখন ইসরায়েল আমাকে ওই বছর ডিসেম্বর মাসে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করেছিল, আমি নিজেকে বলেছিলাম, কয়েক দিনের মধ্যে আমি ফিরে আসব। ২০২৪ সালের মে মাসে ফিরে আসার পর, আমি নিজেকে বলেছিলাম, এবার আর আমাকে বাস্তুচ্যুত করা হবে না।
যখন ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমার সপ্তম বাস্তুচ্যুতি থেকে ফিরে এলাম, তখন ইসরায়েল গাজায় ত্রাণপ্রবাহ কঠোরভাবে সীমিত করে দিয়েছিল। তখন আমি নিজেকে বলেছিলাম, পৃথিবী আমাদের ক্ষুধার্ত হতে দেবে না। কিন্তু তা-ই হলো। কয়েক সপ্তাহ, আমি এবং আমার পরিবার প্রায় না খেয়ে বেঁচে ছিলাম। আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় কিছু রুটি, জাআতার এবং টুনা মাছের কিছু ক্যান সঞ্চয় করেছিলাম, তা একটু একটু করে খেয়ে কোনোমতে বেঁচে ছিলাম।
আরও পড়ুনইসরায়েলের নৃশংসতা নিয়ে যদি সবাই মুখ খুলত১৮ ঘণ্টা আগেকিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্রবিরতির প্রথম পর্ব কার্যকর হওয়ার পর আমি নিজেকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা বলেছিলাম। বলেছিলাম, ‘এটাই শেষ, যুদ্ধের গণহত্যার অংশ শেষ হয়েছে। কারণ, ইসরায়েল আর কী করতে পারে, যা তারা আগে করেনি? আমরা তো সব ধরনের যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছি!’ কিন্তু ভেতরে-ভেতরে জানতাম, আমি নিজের কাছে মিথ্যা বলছিলাম।
আমি জানতাম, গাজার অনেক মানুষের মতো, এটা শুধু সময় এবং উপায়ের ব্যাপার ছিল যে ইসরায়েল আবার কখন ও কীভাবে গণহত্যা শুরু করবে।
এতটুকু সময়ের মধ্যে একটি সংকেত মিলেছিল যে আবার হামলা আসছে। পবিত্র রমজানের শুরু হওয়ার পরপরই ইসরায়েল সব সাহায্যপ্রবাহ বন্ধ করে দেয়। এটি আরেকটি খাদ্যসংকট সৃষ্টি করে। দুই সপ্তাহ পর, সাহ্রির ডাকের বদলে আমরা প্রচণ্ড বোমাবর্ষণের শব্দে জেগে উঠলাম। ওই বোমায় ৪০০ জনের বেশি মানুষ মরেছে। এর মধ্যে অন্তত ১০০টি শিশু ছিল।
ইসরায়েল তাদের ‘সম্পূর্ণ’ বিজয় অর্জন করতে আর কত শিশুকে হত্যা করবে? এ দফায় তাদের ‘কাজ শেষ করতে’ কত সময় লাগবে? আমাদের আর কতটা ভীতি ও দুর্দশা সহ্য করতে হবে? আর এবার এই হামলা কীভাবে শেষ হবে?
ইসরায়েলের গণহত্যামূলক যুদ্ধের ১৫ মাস পার হওয়ার পরও আমি এ প্রশ্নগুলোর কোনো উত্তর জানি না। কারণ, একের পর এক তাদের পাশবিকতা দিয়ে ইসরায়েল আমাকে চমকে দিতে থাকে।
এখনো আমি বলে যাচ্ছি, এগুলো কী? এটি কি গণহত্যার চূড়ান্ত পর্যায়? আক্রমণ চালিয়ে যাওয়া, সব সাহায্য বন্ধ করে দেওয়া এবং পানি ও বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়া কি চলতেই থাকবে? আমার ভয়, ইসরায়েল নৃশংসতার পথে আরও বহুদূর যাবে।
ইসরায়েলি সরকার বলছে, যতক্ষণ না তারা তাদের বন্দীদের ফিরে পায়, ততক্ষণ এই আক্রমণগুলো চলবে। যদি এটা সত্যি হয়, তবে যুদ্ধবিরতির কী দরকার ছিল? এটা কি হত্যাকারীদের কিছু সময়ের ‘বিশ্রাম’ ছিল?
এদিকে পৃথিবী আবারও শুধু নিন্দা জানাচ্ছে, কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটি আমাদের বহুবার ব্যর্থ করেছে। আমরা এতবার ব্যর্থ হয়েছি যে আমি গণনা করা ছেড়ে দিয়েছি।
আমি যুদ্ধের মধ্যে বড় হয়েছি এবং ১৫ মাসের গণহত্যার মধ্যেও বেঁচে থেকেছি। তবু আমি আশ্চর্য হচ্ছি, এত বড় যন্ত্রণার পরও আমি ভয় থেকে বাঁচার কোনো প্রতিরোধব্যবস্থা তৈরি করতে পারিনি। আমি এখনো সামনের দিন নিয়ে ভয় পাচ্ছি।
আমি আবার মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি। কিন্তু এবার আমি নিজেকে সত্য বলতে চাই। আমি বলতে চাই, ইসরায়েল আমার ওপর যে জীবন চাপিয়ে দিয়েছে, আমি তার চেয়ে ভালো জীবন পাওয়ার যোগ্য। আমি আর নিজেকে মিথ্যা বলতে চাই না, আমি বাঁচতে চাই।
কাসেম ওয়ালিদ গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি পদার্থবিদ ও লেখক
আল–জাজিরা থেকে নেওয়া, অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ