কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি দেশটির ফেডারেল সংসদ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী ২৮ এপ্রিল অথবা ৫ মে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, মার্ক কার্নি রোববার সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের এই তারিখ ঘোষণা করতে পারেন।

মার্ক কার্নি বলেছেন, তিনি গভর্নর জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর বলতে পারবেন কখন নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কানাডার অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী রূপ দিতে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঠিক রাখতে এই মুহূর্তে একটি শক্তিশালী সরকার দরকার। সেই কারণেই নির্বাচনের বিকল্প নেই। কানাডার নির্বাচনের আইন অনুসারে, ফেডারেল নির্বাচনের আগে প্রচারণার জন্য কমপক্ষে ৩৬ দিন সময় দেওয়ার বিধান রয়েছে।

কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো’র সময়ে দেশটির নাগরিকদের মধ্যে যে জনমত জরিপ হয়েছিল তাতে ৬০ শতাংশ মানুষ সরকারের পরিবর্তন চেয়েছিলেন। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, ফেডারেল নির্বাচনে ৩৪৩টি আসনের মধ্যে আসনভিত্তিক যে জনমত জরিপ সেখানে লিবারেল পার্টি ১৮০ থেকে ১৯১ আসন, অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টি ১২৪ থেকে ১৪১টি আসন পেতে পারে। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠনের জন্য ১৭২টি আসনের দরকার হয়। লিবারেল পার্টির প্রতি কানাডিয়ানদের আস্থা বেড়ে গেছে। যেখানে গত দুই মাস আগেও লিবারেল পার্টি কনজারভেটিভ পার্টির তুলনায় অনেক পেছনে ছিল।

কানাডার রাজনীতিতে বা সরকার ক্ষমতায় যেই আসুক না কেন এই মুহূর্তে কানাডার প্রয়োজন অর্থনৈতিক উন্নয়ন। মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডায় বিগত কয়েক বছরে প্রচুর সংখ্যক নতুন অভিবাসী আসায় দেশটির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নড়বড় হয়ে পড়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ব্যাংক ঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, বাড়ি ভাড়াসহ জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, কানাডার সরকারের পদক্ষেপে একের পর এক ক্রমাগত নতুন অভিবাসীর আগমনের ফলে ট্রুডো সরকার ইতোমধ্যেই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে যার ফলশ্রুতি জাস্টিন ট্রুডো’র পদত্যাগ। 

কানাডার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লিবারেল পার্টির নেতা হতে হবে এমন একজনকে যাঁর অর্থনীতির উপরে দক্ষতা রয়েছে এবং সাধারণ মানুষের মনের ভাষা বোঝে। তাহলেই কানাডার অর্থনীতি আবার সচল হবে। কানাডা তার আগের অবস্থানে ফিরে আসবে এমন নেতা নির্বাচন জরুরি। কানাডার বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীল রাখা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে ট্যারিফ আরোপের কানাডা ও আমেরিকার যে বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু হয়েছে তা সমাধানে এই মুহূর্তে মার্ক কার্নি উপযুক্ত। কানাডিয়ানদের এই ধারণার কারণে দিন দিন মার্ক কার্নির দল লিবারেল পার্টি জয়ের ধারায় এগিয়ে যাচ্ছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘গাজা যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে’ 

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে ‘গাজায় নারী শিশুসহ নৃশংস হত্যাযজ্ঞ’ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এ কথা বলেন। 

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, গাজার যুদ্ধে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত হচ্ছে নারী ও শিশু। জাতিসংঘ কেন এই যুদ্ধ বন্ধ করতে সফল হচ্ছে না? জাতিসংঘে যারা অর্থ সহায়তা দেয়, তারাই যুদ্ধ বাঁধিয়ে রেখেছে। গাজার যুদ্ধ শত বছরের সমস্যা। এই সমস্যাটা টিকিয়ে রেখে সাম্রাজ্যবাদ পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে। পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধ টিকিয়ে রাখছে। যারা মানবতার পক্ষে তাদের প্রতি আহ্বান জানাব, আপনারা যুদ্ধকে না বলার জন্য শক্ত জনমত গড়ে তুলুন। 

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, অ্যাকশন এইডের মৌসুমী বিশ্বাস, অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড নেটওয়ার্কিংয়ের পরিচালক জনা গোস্বামী, গণশক্তির নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, গাজা ও রাফায় ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর সামরিক অভিযান, অবরোধ ও গণহত্যা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। শিশু, গর্ভবতী নারী, বৃদ্ধ ও সাধারণ মানুষদের নির্বিচারে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলি বাহিনী মানবতাবিরোধী অপরাধের সকল সীমা অতিক্রম করেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সকল ধরনের আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিতে হবে। বাংলাদেশি পাসপোর্টে একসেপ্ট ইসরায়েল (ইসরায়েল ব্যতীত) পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ, ওআইসি ও অন্যান্য ফোরামে সক্রিয় কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। গাজা ও রাফায় মানবিক সহায়তা পাঠানো এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক সহায়তায় অংশগ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া আরব বিশ্বের স্থায়ী শান্তি সম্ভব নয়- এই অবস্থান বাংলাদেশকে আরও জোরালোভাবে তুলে ধরতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মাধ্যমে বিশ্ব জনমত গঠনে নেতৃত্ব দেওয়ার কূটনৈতিক প্রয়াস নিতে হবে। ইসরায়েলি বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, এ মুহূর্তে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো শুধু একটি রাষ্ট্রের প্রতি সহানুভূতি নয়, বরং বৈশ্বিক মানবতা রক্ষার সংগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহণ। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘গাজা যুদ্ধ টিকিয়ে রেখে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলো সুবিধা নিচ্ছে’