সরকারি বরাদ্দ বাতিল বন রক্ষায় মাইলফলক
Published: 21st, March 2025 GMT
বনের জমি বরাদ্দের অর্থ এটিকে অপ্রয়োজনীয় মনে করা। তবে বর্তমান সরকার সব প্রতিরোধ উপেক্ষা করে বন উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। বিভিন্ন সংস্থাকে দেওয়া বনভূমির বরাদ্দ বাতিল করা হচ্ছে। অবৈধ দখলদার যত প্রভাবশালীই হোক, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টা, যেটুকু বনভূমি আমাদের হাতে আছে, তা যেন কোনোভাবেই না কমে। আসলে বনভূমি উন্নয়নকাজে দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। দিলে সরকারপ্রধানের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু কোনো একক ব্যক্তির অনুমতির ওপর এটি নির্ভর করলে, রাজনৈতিক প্রকল্পগুলোর ক্ষেত্রে কোথাও জমি না মিললে বনই ভরসা। ভাবখানা এমন, বনের জমি খালি খালি পড়ে আছে। কিন্তু একটি নগরী কিংবা একটা দেশে রাস্তা যেমন প্রয়োজন, নদী যেমন দরকার; বনও সমান প্রয়োজনীয়।
সরকার এখন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাহলো বড় বড় যেসব উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বনভূমি দেওয়া হয়েছে, তা ফিরিয়ে এনে পুনরায় বনায়ন করা যেখানে সম্ভব, সেখানে কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ৭০০ একর, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে দেওয়া ২০ একর বনভূমি ফেরত এনেছি। সোনাদিয়ার বেজার অনুকূলে বরাদ্দ ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমি হস্তান্তরের কাজ শুরু হয়েছে। মিরসরাই বেজাকে দেওয়া ৪ হাজার ১০০ একর জমির বরাদ্দ বাতিল প্রক্রিয়াধীন। আর কক্সবাজারে এক সচিব তাঁর ভাইয়ের স্মৃতি রক্ষার্থে কলেজ প্রতিষ্ঠার নামে ১৫৫ একর বনের জমি নিয়েছিলেন। এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা ওই জমি ফেরত নিয়েছি।
গত বছর ৫ আগস্টের পর যেসব বনভূমি দখল হয়েছে, সেখানে পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ অভিযান চলছে। কিছু দখল দীর্ঘদিনের। সেগুলো আইনি প্রক্রিয়া শেষ না করে ফেরত আনা সম্ভব নয়; সেগুলো সময়সাপেক্ষ। কাজেই সেসব বন উদ্ধারের বিষয় আমরা আমাদের কর্মতালিকায় দ্বিতীয় প্রাধিকারে রেখেছি। সরকারি সংস্থাকে দেওয়া বনভূমির বরাদ্দ বাতিল বন রক্ষায় একটি মাইলফলক।
আমরা মধুপুর শালবনকে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছি। এটিতে আদালতেরও রায় আছে। এরই অংশ হিসেবে বনভূমির সীমান্ত চিহ্নিত এবং চলতি বছরেই ১৩৫ একর বনভূমিতে আকাশিয়া গাছ কেটে শালবন করা হবে। ক্রমান্বয়ে আরও কিছু পরিমাণ এলাকায় আমরা শালবন করব। বসবাসকারীদের অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনকে বিশ্বঐতিহ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। বন দখলমুক্ত করে কিছু জায়গায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। পূর্বাচলে রাজউক যেখানে বন চিহ্নিত করেছে, সেখানে ব্যবস্থাপনা করবে বন বিভাগ।
সুন্দরবনসহ অন্যান্য সংরক্ষিত বনাঞ্চলের প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় চলতি বছর বিশেষ কর্মসূচি চালু হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, যেমন ড্রোন মনিটরিং ও স্মার্ট প্যাট্রোলিংয়ের মাধ্যমে বনভূমির অবৈধ দখল ও বৃক্ষ নিধন প্রতিরোধ জোরদার করা হবে। অবৈধ বনভূমি উদ্ধারে কাঙ্ক্ষিত সফলতা লাভ করা যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা বন ও বৃক্ষ সংরক্ষণ আইন চূড়ান্ত করেছি। নতুন আইনের অধীনে প্রাকৃতিক বন রক্ষায় বন বিভাগের দায়িত্ব নির্ধারণ করেছি। আর কিছু গাছ কাটার বিষয়ে বন বিভাগের অনুমতির বিধান রেখেছি। সামাজিক বনায়নের নামে গাছ কাটা নিষিদ্ধ এবং ইউক্যালিপটাসের মতো গাছ না লাগানোর বিধান আইনে রাখা হচ্ছে। আইন প্রণয়নে আমরা বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করেছি।
বর্তমান সরকারের মূল উদ্দেশ্য, উন্নয়নের জন্য বনকে যে ত্যাগ করা যায় না; বনেরও প্রয়োজন রয়েছে– সেটিকে মূলমন্ত্র করা। আমরা স্বেচ্ছাচারীভাবে যেসব বন দখল করা হয়েছে, সেগুলো ফেরত আনার চেষ্টা করছি। একটি প্রাকৃতিক বন পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যান্য প্রাকৃতিক বনে যেসব ধ্বংসাত্মক বা ক্ষতিকর কাজ হচ্ছে, সেগুলো কমিয়ে আনছি। বন্যপ্রাণী, প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষার কাজে যাতে বন ব্যবহৃত হয়, সেগুলো নিশ্চিতের চেষ্টা করব।
লেখক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বর দ দ ব ত ল বনভ ম র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএলে আজ অনন্য কীর্তি গড়তে পারেন কোহলি
ছক্কার রাজা ক্রিস গেইল আইপিএলেও সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন (৩৫৭টি)। সবচেয়ে বেশি চার মেরেছেন শিখর ধাওয়ান (৭৬৮)।
তবে চার-ছক্কা মিলিয়ে সবার ওপরে বিরাট কোহলি। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে সব মৌসুম খেলা ‘কিং কোহলি’ এখন পর্যন্ত বাউন্ডারি মেরেছেন ৯৯৮টি।
বুঝতেই পারছেন, আইপিএল ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০০০ বাউন্ডারি থেকে কোহলি মাত্র দুটি শট দূরে। সেই মাইলফলকে তিনি আজই পৌঁছে যেতে পারেন।
আজ রাতে নিজেদের মাঠ এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হবে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। দলটির হয়ে ওপেনিংয়ে ব্যাট করা কোহলি হাজার বাউন্ডারির মাইলফলক ছুঁতে পারেন পাওয়ারপ্লেতেই।
গত বছর আইপিএলের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক (৭৪১) কোহলি এবারও বেশ ছন্দে আছেন। বেঙ্গালুরুর হয়ে প্রথম চার ম্যাচে ৫৪.৬৬ গড়ে করেছেন ১৬৪ রান। ফিফটি আছে দুটি। ৯৭৭ বাউন্ডারি নিয়ে আইপিএলের ১৮তম আসরে খেলতে নামা কোহলি মেরেছেন আরও ১৫টি চার ও ৬টি ছক্কা।
৩৬ বছর বয়সী এই রানমেশিন এবারের আইপিএলেই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৩ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ১২৮ ছক্কা মেরে আইপিএলের এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ ছক্কায় ক্রিস গেইলের রেকর্ডও (১২৭) ভেঙেছেন। একই ভেন্যুতে আজ দুটি বাউন্ডারি মারলেই আরেকটি কীর্তি গড়ে ফেলবেন কোহলি।
আরও পড়ুনকোন ওষুধে কাজ হচ্ছে কোহলির বেঙ্গালুরুর০৮ এপ্রিল ২০২৫আইপিএলে সবচেয়ে বেশি বাউন্ডারির রেকর্ডটা অনেক আগে থেকেই কোহলির। ৯২০ বাউন্ডারি মেরে দুইয়ে থাকা শিখর ধাওয়ান গত বছর খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় বলে দিয়েছেন।
আইপিএলে চার–ছক্কায় কোহলিকে অদূর ভবিষ্যতে কেউ ছুঁতে পারবেন বলে মনে হয় না