গণঅভ্যুত্থানে নিহতের মেয়েকে ধর্ষণ, ভুক্তভোগীর মা-এর সঙ্গে তারেক রহমানের ফোনালাপ
Published: 21st, March 2025 GMT
‘যারা এ জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে এবং অন্যায় করেছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে লড়বো। আপনাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির সব নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমাদের চিকিৎসকরা ও আইনজীবীরাও আপনাদের পাশে থাকবে। তাদেরকেও সেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আপনার মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছে তার বিচার আপনি পাবেনই।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পটুয়াখালীর এক শহীদের ভুক্তভোগী মেয়ের মা’র সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ কথা বলেন। এই শহীদ পরিবারটির পাশে থাকারও অঙ্গীকার করেন তিনি।
এ সময় ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা তারেক রহমানকে বলেন, ‘দেশের মানুষের জন্য যে মানুষটি প্রাণ দিল তার মাত্র ৮ মাসের মাথায় সেই দেশের মানুষরা যদি এই প্রতিদান দেয় তাহলে আমি কি নিয়ে বাঁচবো। আমি আমার মেয়ের নিরাপত্তা চাই, আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই এবং যারা আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই। সুষ্ঠু বিচার না পেলে আমি তিন সন্তান নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবো’।
এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হাসান মামুন, বিএনপি নেতা মোশতাক আহমেদ পিনু, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মো.
এর আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হাসান মামুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান এবং ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন। পরে তিনি মেডিকেল হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে প্রেস ব্রিফিং করেন।
বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, ‘ধর্ষণের মতো একটি জঘন্য ঘটনাকে রাজনৈতিক ট্যাগ লাগিয়ে পরোক্তভাবে ধর্ষকদের বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য এক ধরণের কৌশল অবলম্বন করা হয়। সকল অপরাধীকে আমরা অপরাধী হিসেবে দেখি এবং অপরাধীর শাস্তির জন্য আমরা সর্বস্ব ত্যাগ শিকার করতে প্রস্তুত আছি’।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা ধামাচাপ দেওয়া বা ধর্ষকদের পক্ষাবলম্বন করার ক্ষেত্রে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে সেটা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে এবং প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বিকেলে দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি এলাকায় জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পিতার কবর জিয়ারত করে নানা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী। পথিমধ্যে সন্ধ্যাও হয়ে যায়। এ সময় একই এলাকার মুন্সী বাড়ীর কাছে পৌঁছালে স্থানীয় মৃত মামুন মুন্সীর ছেলে সাকিব মুন্সী (১৯) ও সোহাগ মুন্সীর ছেলে সিফাত মুন্সী (২০) ওই শিক্ষার্থীকে জোরপূর্বক একটি নির্জন বাগানে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। এ সময় ওই দুই যুবক ধর্ষণের ভিডিও তাদের মোবাইলে ধারণ করে মুখ বন্ধ রাখতে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। থানায় অভিযোগ দেওয়ার পর ধর্ষক সাকিব মুন্সীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু সিফাত মুন্সীকে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন ব এনপ র র জন য এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
সুরে-গানে-তালে বৈশাখকে বরণ করল রাবি
বাংলা বছরের প্রথম দিনকে স্বাগত জানাতে বাঙালি মেতে উঠেছে নানা আয়োজনে। বাঙালি জাতিসত্তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার অন্যতম দিনটিকে কেন্দ্র করে সর্বত্রই বইছে উৎসবের আমেজ। জাতি-গোত্র-বর্ণ সব ভেদাভেদ ভুলে সকলে একযোগে দিনটি উদযাপন করেছে।
বৈশাখের আগমনকে নতুন সুরে, গানে, তালে বরণ করে নিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা চত্বরে মুক্তমঞ্চে বর্ষবরণের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব। পরে বেলা ১০টায় চারুকলা চত্বর থেকে শুরু হওয়া বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
আরো পড়ুন:
নববর্ষে থাকবে রাবি অধ্যাপকের ৩০০ ফুটের স্ক্রলচিত্র প্রদর্শনী
রাবি শিক্ষার্থীদের বিজু উৎসব উদযাপন
শোভাযাত্রায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনও নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে বর্ষবরণ উদযাপন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, লোক প্রশাসন বিভাগ, ফলিত গণিত বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগসহ একাধিক বিভাগ নতুন বছরকে বরণ করে নিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
এবারের আয়োজনে ছিলো নানা ধরনের ব্যানার আর ফেস্টুন। শোভাযাত্রায় ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান, বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরতে তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন মোটিফ। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার আয়োজনের ব্যাপ্তি কিছুটা কমেছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা কেউ শখের হাড়ির ভাস্কর্য, আবার কেউ বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে রঙ তুলিতে ফুটিয়ে তুলেছেন। কেউ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে এঁকেছেন নানা চিত্র। মাঠজুড়ে বিরাজ করছে বাঁশের ফালি দিয়ে শখের হাঁড়ি ও পালকি। আবার কেউ কেউ মধ্যপ্রাচ্যের মানবতার বিপর্যয়কে প্রতীকী করে শলাকা দিয়ে মিসাইল বোমা ও ড্রোন বানিয়েছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিহা সাঈদ নিশা বলেন, “এটা আমার জীবনের প্রথম বৈশাখ পালন। আগে কখনো এত বড় করে পালন করা হয়নি। সবার সঙ্গে অনেক আনন্দ করলাম, অনেক ভালো লাগলো। বৈশাখের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, এই কামনা করছি।”
রাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন বকুল বলেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বর্ষকে আমরা বরণ করে নিলাম। আমার শিক্ষার্থীরা গত এক সপ্তাহ ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ব্যানার ফেস্টুন তৈরি করেছে। সেসব নিয়ে সবাই উল্লাসে মেতেছে আজ। নববর্ষে এমন আয়োজন করতে সত্যি খুশি লাগছে। এর জন্য আমার শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। তারা অনেক পরিশ্রম করেছে।”
বর্ষবরণের কর্মসূচিতে ক্যাম্পাস জুড়ে বিভিন্ন বিভাগ ও সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী