নালিতাবাড়ীতে ধানখেতে বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে বন্য হাতির মৃত্যু
Published: 21st, March 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় ধানখেতে জেনারেটরের তারে জড়িয়ে একটি বন্য হাতির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামে গুচ্ছগ্রাম–সংলগ্ন পাহাড়ের ঢালে এ ঘটনা ঘটে।
ওই ঘটনার পর গতকাল রাতেই বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটরের তার জব্দ করেছেন। আজ শুক্রবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী।
বন বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ ধরে ১৮-২০টি বন্য হাতির পাল উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ের বিভিন্ন টিলায় ও জঙ্গলে অবস্থান করছে। দিনের বেলায় টিলা বা জঙ্গলে অবস্থান করলেও সন্ধ্যা নামার পর হাতির পাল দল বেঁধে ধানখেতে, লোকালয়ে নেমে আসে। এ জন্য কৃষকেরা ফসল রক্ষায় মশাল জ্বালিয়ে, রাত জেগে হাতির পাল প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।
পূর্ব সমশ্চুড়া গ্রামে গুচ্ছগ্রাম–সংলগ্ন এলাকায় পাহাড়ের ঢালে ৭০-৮০ একর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। বন্য হাতির কবল থেকে ফসল রক্ষায় কৃষকেরা ধানখেতে জেনারেটরের মাধ্যমে তার দিয়ে ঘিরে রাখেন। গতকাল রাতে হাতির পাল সেই ফসল খেতে হানা দেয়। এ সময় একটি হাতি তারে জড়িয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এ সময় অন্য হাতিগুলো মৃত হাতিটিকে ঘিরে রাখে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে জেনারেটরের তার জব্দ করে নিয়ে যান। এ সময় হাতির দলটি মৃত হাতির আশপাশে জঙ্গলে অবস্থান করছিল। শেষ রাতে মৃত হাতিটি রেখে অন্য হাতিগুলো জঙ্গলে ফিরে যায়।
মধুটিলা এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, খাদ্যের সন্ধানে আমন ও বোরো মৌসুমে বন্য হাতির দল লোকালয়ে নেমে আসে। গতকাল রাতে ১৮-২০টি হাতি পাহাড় থেকে গুচ্ছগ্রাম–সংলগ্ন ধানখেতে নেমে আসে। এ সময় জেনারেটরের তারে জড়িয়ে একটি হাতির মৃত্যু হয়।
মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জ কর্মকর্তা দেওয়ান আলী প্রথম আলোকে বলেন, জেনারেটরের তারে জড়িয়ে একটি মাদি হাতির মৃত্যু হয়েছে। হাতিটির বয়স পাঁচ বছর হবে। রাতেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মৃত হাতির ময়নাতদন্ত করা হবে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ এ সময় গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় জোরালোভাবে সামরিক অভিযান বাড়ানোর ঘোষণা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশির ভাগ অংশে শিগগিরই ‘জোরালোভাবে’ সামরিক অভিযান বাড়ানো হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কার্তজ।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজা উপত্যকার দক্ষিণে একটি ‘নিরাপত্তা অঞ্চলের’ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এটা রাফা ও খান ইউনিস শহরকে পৃথক করেছে।
এরই মধ্যে খান ইউনিস ও আশপাশের এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকা থেকে আকাশপথে হামলার কড়া জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যদিও হামাস কোনো হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
টানা দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে দিয়ে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় হামাসের ওপর আবারও হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এর পর থেকে তারা গাজায় আরও বড় এলাকা দখল করেছে। হাজারো গাজাবাসীকে নতুন করে বাস্তুচ্যুত করেছে।
শনিবার কার্তজ বলেন, রাফা ও খান ইউনিসের মধ্যবর্তী সাবেক ইহুদি বসতি ‘মোরাগ এক্সিস’ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্পন্ন করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এর মধ্য দিয়ে গাজার খান ইউনিস থেকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফা থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গাজা উপত্যকার প্রায় এক–পঞ্চমাংশ ভূমিজুড়ে রয়েছে রাফা।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সতর্ক করে বলেন, শিগগির গাজার আরও বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে বিস্তৃত হামলা জোরদার করবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এসব এলাকার যুদ্ধক্ষেত্রগুলো থেকে মানুষদের সরিয়ে নিতে হবে। হামাসকে নির্মূল করা, জিম্মিদের মুক্ত করে আনা এবং যুদ্ধের অবসানের এটাই শেষ মুহূর্ত।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে অতর্কিতে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। জিম্মি করে গাজায় আনা হয় ২৫১ জনকে। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য এটা।
এর জবাবে ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী, যা এখনো চলছে। নির্বিচার হামলায় উপত্যকাটিতে এ পর্যন্ত ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে গড় ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর নিহত হয়েছে ১ হাজার ৫৬৩ জন।