ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা
Published: 21st, March 2025 GMT
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ব্রয়লারের দাম বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। অন্যদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে সরু চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। চড়া রয়েছে লেবু ও বেগুনের দামও।
তবে বাজারে সোনালি মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমসহ কিছু পণ্যের দাম কমেছে। আগের মতোই কম দামে স্থিতিশীল রয়েছে আলু, পেঁয়াজসহ বিভিন্ন সবজি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও টাউন হল বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গতকাল বাজারভেদে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২১০-২২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। খুচরা বিক্রেতারা জানান, দুই দিনের মধ্যে এ দাম বেড়েছে। এর আগে ১৯০-২০০ টাকা দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল।
মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের ভিআইপি ব্রয়লার হাউসের মুরগি বিক্রেতা মো.
ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কিছুটা কমেছে সোনালি মুরগির দাম। গতকাল ধরনভেদে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৬০-২৮০ টাকায়, যা এর আগের সপ্তাহে কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি ছিল। এ ছাড়া বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও কম রয়েছে। বর্তমানে ঢাকার বাজারগুলোতে এক ডজন ডিম ১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অবশ্য পাড়া-মহল্লায় এ দাম কিছুটা বেশি নেওয়া হয়। গরু ও খাসির মাংসের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা ও গরুর মাংস ৭৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এ বছর রোজার শুরুতেই লেবু, বেগুন ও শসার দাম বেড়ে যায়। পরে পণ্য তিনটির দাম কিছুটা কমলেও তা এখনো চড়া রয়েছে। রোজার শুরুর দিকে আকারভেদে এক হালি লেবু ৫০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। পরে সেই দাম কিছুটা কমে ৪০-৭০ টাকা হয়। গতকালও এ দরেই বাজারে লেবু বিক্রি হতে দেখা গেছে। বেগুন ও শসারও একই অবস্থা। বর্তমানে প্রতি কেজি বেগুন ৬০-১০০ টাকা ও হাইব্রিড শসা ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহেও একই দামে ছিল।
চালের দাম বাড়তিবাজারে সরু তথা মিনিকেট চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে রশিদ, ডায়মন্ড, সাগর, মোজাম্মেল ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল জনপ্রিয়। খুচরা দোকানে এসব ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি মিনিকেট চালের দাম ৮৫ টাকা ৮৮ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি দাম মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের। প্রতি কেজি মোজাম্মেল চাল ৯৮ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
ব্যবসায়ীরা জানান, আমন মৌসুম শেষ হওয়ায় বাজারে মিনিকেট চালের মজুতও শেষের দিকে। সরবরাহ কমায় ও ধানের দাম বাড়ায় মিনিকেট চালের দামও বেড়েছে। দাম বাড়ায় মিনিকেটের বিক্রি আগের তুলনায় কমেছে। তবে মাঝারি ও মোটা চালের দাম বাড়েনি।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতারা স্বল্প পরিসরে ঈদের পণ্য কেনাকাটা শুরু করেছেন। বিশেষ করে সেমাই, নুডলস, পোলাওয়ের চাল, বিভিন্ন ধরনের মসলা প্রভৃতি বেচাকেনা হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, পাঁচ-ছয় দিন পর থেকে পুরোদমে ঈদের বেচাকেনা শুরু হবে। বেশির ভাগ ঈদপণ্যের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। তবে দাম বেড়েছে এলাচির।
বর্তমানে বড় আকারের এক কেজি এলাচি ৫ হাজার ৪০০ টাকা ও ছোট আকারের এলাচি ৪ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত ১৫ দিনের মধ্যে এলাচির দাম কেজিতে ৪০০ টাকার মতো বেড়েছে। এদিকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। তবে চাহিদা অনুসারে পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই বলে খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম রগ র দ ম র ম রগ র গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশের একটি রেওয়াজ আছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ এলে বাজারে ইলিশের চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি বা একটু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সুইটি রানী রাইজিংবিডিকে বলেন, “পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ না খেলে নববর্ষ উদযাপন হবে কী করে? তাই স্বামীকে নিয়ে ইলিশ নিতে এসেছি। এখানে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমি এক কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়েছি। আমার কাছ থেকে চার হাজার টাকা রেখেছে। গত সপ্তাহেও এই দামে নিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা
শেষ মুহূর্তে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
সাজ্জাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্রেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের অফিসের জন্য ১৫ কেজি ইলিশ নিয়েছি। অফিসের সবাই ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করব। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম রেখেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। অন্য সময় হয়তো ১ হাজার ৫০০ তে পেতাম। তবে এখানকার মাছগুলো টাটকা।”
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে অন্য বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম দেখলাম। বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মধ্যে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তাদের পক্ষে এই দামেও ইলিশ কেনা সম্ভব না।”
কারওয়ান বাজারে সুজন মৎস্য আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী মো. সুজন সিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ থাকার কারণে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি। এখন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগে যেমন পয়লা বৈশাখে বাজারে ভিড় থাকত। এ বছর ভিড় দেখছি না, বিক্রিও কম।”
বাবুল মৎস্য আড়ৎ এর ইলিশ বিক্রেতা বাবুল মোল্লা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এর অন্যতম কারণ বড় ইলিশ মাছের সরবরাহ ঠিক আছে।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ