অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি সৌদি আরবকে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন আনু মুহাম্মদ। ফিলিস্তিন সংহতি আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজনে সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের শুরু করা গণহত্যা বন্ধে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। সেখান থেকে ২৩ মার্চ রোববার সারা দেশে বাম গণতান্ত্রিক শক্তির উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়।

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে এবং তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল, যা এখনো করছে। এ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে দেশে দেশে প্রতিরোধ হলেই তার শক্তি দুর্বল হবে। তিনি বলেন, ‘এই সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা দুর্বল না হলে, তার একটা পতন না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বের কোনো মানুষ, কোনো অঞ্চল নিরাপদ নয়, তার সম্পদ নিরাপদ নয়, তার জীবন নিরাপদ নয় এবং তারই একটা বহিঃপ্রকাশ আমরা ফিলিস্তিনে দেখতে পাচ্ছি।’

সাম্রাজ্যবাদকে কখনো বিশ্বাস করা যাবে না জানিয়ে এই অধ্যাপক বলেন, সাম্রাজ্যবাদকে কখনো ছাড় দেওয়া এবং সাম্রাজ্যবাদের ওপর কখনো ভরসা করা যাবে না। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের কারণে জমিতে, ভূমিতে, আমাদের রাজনীতিতে বিভিন্ন জটিলতায় পড়েছি। এ ছাড়া বাংলাদেশেও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের নানা আয়োজন এখন চলছে।’

এ প্রসঙ্গে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘অনেকে মনে করেন, জনগণের অধিকার হরণে যে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মুক্ত করবে। ভারতের আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্ত করার কোনো দায় যুক্তরাষ্ট্রের নেই, তার দায় ভারতের সঙ্গে সংহতি রেখে নিজের স্বার্থ এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা। যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ প্রতিষ্ঠার নেতা হিসেবে ভারতকে স্বীকার করে, তার প্রমাণ হচ্ছে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য।’

ফিলিস্তিন সংহতি আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং অধ্যাপক হারুনুর রশিদের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি শাহ আলম, বাসদের (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জুলফিকার আলী প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও। এ লড়াই পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ থামানো না গেলে এ ধরনের আগ্রাসন এবং হামলা অব্যাহত থাকবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে এ বিক্ষোভে আয়োজন করা হয়। ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের আয়োজনে সমাবেশ শেষে একটি মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা ফিলিস্তিনের পক্ষে আছি, পক্ষে থাকব। এ পক্ষে থাকার অর্থ হচ্ছে, যারা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে বা যে ব্যবস্থা এ হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের এ সংগ্রাম। আমরা এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘আগে ইসরায়েল ফিলিস্তিনে হামলা করলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রতিবাদ হতো, এখন হয় না। এর কারণ, মধ্যপ্রাচ্যও এখন পুঁজিবাদের অংশ হয়ে গেছে। কাজেই আমাদের এ লড়াই পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সমর্থন আছে, এটা স্পষ্ট। ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে আজ এই নৃশংস ঘটনা ঘটছে।’

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, আরব দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তার কারণে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতা নিয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোর সুযোগ পাচ্ছে ইসরায়েল। আজকে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের এক হাত যদি হয় ইসরায়েল, তাহলে তার আরেক হাত সৌদি আরব। জাতিসংঘ একটি অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থা কর্তৃত্ব করছিল এবং এখনো করছে।

আনু মুহাম্মদের বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের বিষয়টিও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ভারতের আধিপত্যের কারণে জমিতে, ভূমিতে, আমাদের রাজনীতিতে বিভিন্ন জটিলতায় পড়েছি। অনেকে মনে করেন, জনগণের অধিকার হরণে যে হস্তক্ষেপ করেছে ভারত, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মুক্ত করবে। ভারতের আধিপত্য থেকে আমাদের মুক্ত করার কোনো দায় যুক্তরাষ্ট্রের নেই, তার দায় ভারতের সঙ্গে সংহতি রেখে নিজের স্বার্থ এবং আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করা।’

সমাবেশে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বক্তব্য দেন। ঢাকা, ২০ মার্চ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় সিপিবির ক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ
  • আমরা গাজাবাসী নিজেদের আর কত মিথ্যা বলব
  • এই অন্তহীন রাত আগের দিনের চেয়ে অন্ধকার
  • আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবি-রাবিতে বিক্ষোভ
  • আ. লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাবিতে বিক্ষোভ
  • আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
  • শেখ হাসিনা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত: শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন
  • ফিলিস্তিনের মানুষের মুক্তির লড়াই আমাদেরও: সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী