এবার লোডশেডিং নেই সেলাই কারিগররা খুশি
Published: 20th, March 2025 GMT
ঈদুল ফিতর সামনে রেখে কিশোরগঞ্জের সেলাই কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছেন, গতবার ঘন ঘন লোডশেডিং হতো। বিদ্যুৎ চালিত সেলাই মেশিন বন্ধ করে বসে থাকতে হতো। কিন্তু এবার লোডশেডিং নেই বলে নির্ধারিত তারিখেই গ্রাহকদের পোশাক সরবরাহ করা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার শহরের পোশাক বিপণি এলাকা ঈশা খাঁ রোডে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। ঢাকা টেইলার্সের কারখানায় গিয়ে দেখা গেছে, কারিগর হযরত আলী, জসিম উদ্দিন, রোমান মিয়া, নিটোলসহ সবাই কাজে ব্যস্ত। কেউ কাপড় সেলাই করছেন, কেউ-বা ইস্ত্রি। এবার তাদের আয় গতবারের তুলনায় বেশি হবে বলে জানালেন কারিগররা। রোমান ও নিটোল গত রমজানে আয় করেছিলেন ১৮ হাজার টাকা করে। এবার ২৫ হাজার টাকা আয় হতে পারে বলে ধারণা করছেন। হযরত আলী ও জসিম গত রমজানে আয় করেছিলেন ১৫ হাজার টাকা করে। এবার ১৮ হাজার টাকা আয় হতে পারে বলে ধারণা করছেন। তবে প্রতিষ্ঠানের মালিক আব্দুল আউয়াল জানিয়েছেন, ১৫ রমজান পর্যন্ত লোকসমাগম তুলনামূলক অনেক কম ছিল। এখন বেড়েছে। তাঁর প্রতিষ্ঠানে গতবার কারিগর ছিলেন ১৪ জন। এবার কমে হয়েছে ৯ জন। এ কারণেও প্রত্যেক কারিগরের ভাগে কাজ বেশি পড়েছে বলে আয় গতবারের তুলনায় কিছুটা বেশি হবে। লোডশেডিং বিষয়ে তিনিও স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, গত বছর লোডশেডিংয়ের কারণে কাজের প্রচণ্ড ব্যাঘাত ঘটত। এতে হাতের কাজ জমে থেকে চাপ বেড়ে যেত। সময়মতো পোশাক সরবরাহ করা যেত না। এবার তেমনটা হচ্ছে না।
ঈশা খাঁ রোডের বরকতী ফেব্রিকসের মালিক সিরাজুল হক জানিয়েছেন, তাঁর দোকানে এখন বেচাকেনা বেশ ভালো। ঈদ আসতে আসতে ক্রেতার সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে ধারণা করছেন।
জেলা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মুজিবুর রহমান বেলাল বলেন, এবার লোডশেডিং নেই।
আগামী রোববার থেকে ফুটপাতসহ সব মার্কেটেই বিক্রি অনেক বেড়ে যাবে। শপিংমলের চেয়ে ফুটপাতে ক্রেতার ভিড় কম নয়। ঈদ সামনে রেখে যেন এই স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীদের কোনো রকম হয়রানি না করা হয়, এমনটাই তাঁর প্রত্যাশা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইলিশ: দাম স্বাভাবিক, ক্রেতা কম
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে পান্তা ইলিশের একটি রেওয়াজ আছে। প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ এলে বাজারে ইলিশের চাহিদা ও দাম বেড়ে যায়। কিন্তু এবার বাজারে বড় সাইজের ইলিশের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক থাকলেও ক্রেতা কম বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি বা একটু বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা, ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রামের ইলিশ ১ হাজার ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৩০০ টাকায়।
কারওয়ান বাজারে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী সুইটি রানী রাইজিংবিডিকে বলেন, “পয়লা বৈশাখে পান্তা ইলিশ না খেলে নববর্ষ উদযাপন হবে কী করে? তাই স্বামীকে নিয়ে ইলিশ নিতে এসেছি। এখানে ভালো মানের ইলিশ পাওয়া যায়। আমি এক কেজি ওজনের দুটি ইলিশ নিয়েছি। আমার কাছ থেকে চার হাজার টাকা রেখেছে। গত সপ্তাহেও এই দামে নিয়েছি।”
আরো পড়ুন:
কড়া নাড়ছে ঈদ, চলছে শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা
শেষ মুহূর্তে জমজমাট ঈদের কেনাকাটা
সাজ্জাদুল ইসলাম নামের আরেকজন ক্রেতা রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমাদের অফিসের জন্য ১৫ কেজি ইলিশ নিয়েছি। অফিসের সবাই ইলিশ দিয়ে নববর্ষ উদযাপন করব। ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম রেখেছে ১ হাজার ৬০০ টাকা করে। অন্য সময় হয়তো ১ হাজার ৫০০ তে পেতাম। তবে এখানকার মাছগুলো টাটকা।”
পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ মাছ কিনতে আসা কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে অন্য বছরের তুলনায় ইলিশের দাম কম দেখলাম। বড় ইলিশ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মধ্যে। কিন্তু যারা মধ্যবিত্ত রয়েছে তাদের পক্ষে এই দামেও ইলিশ কেনা সম্ভব না।”
কারওয়ান বাজারে সুজন মৎস্য আড়ৎ এর স্বত্বাধিকারী মো. সুজন সিকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাজারে এখন পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ থাকার কারণে পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের দাম বাড়েনি। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি। এখন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। তবে আগে যেমন পয়লা বৈশাখে বাজারে ভিড় থাকত। এ বছর ভিড় দেখছি না, বিক্রিও কম।”
বাবুল মৎস্য আড়ৎ এর ইলিশ বিক্রেতা বাবুল মোল্লা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এবার বাজারে ইলিশের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এর অন্যতম কারণ বড় ইলিশ মাছের সরবরাহ ঠিক আছে।”
ঢাকা/রায়হান/সাইফ