ঔপন্যাসিক ভ্লাদিমির নাবোকভের দৃষ্টিতে– সাহিত্য একটা দীর্ঘজীবী শিল্প ও ব‍্যক্তিগত প্রতিভার বিষয়। এদিকে বিশ্বের বহু মানুষ বই পড়েন এজন্য যে– সাহিত্য তাদের পরিচিত জগতের বাইরে নিয়ে গিয়ে নতুন অভিজ্ঞতায় জারিত করে, যা তাদের ব্যক্তিগত জগৎ উপলব্ধিতে সহায়ক হয়। সেদিক থেকে নাবোকভ কথিত লেখকের ‘ব্যক্তিগত প্রতিভা’ কোন নতুনের সন্ধান দেয়, সেটা বিবেচ্য। একজন লেখককে স্বাগত জানানোর মাপকাঠি হতে পারে– তিনি নতুন কী সংযোজন করলেন সাহিত্যে। ন্যূনতম অর্থে একটি শব্দের নতুন জুতসই ব‍্যবহারও বিবেচনা হতে পারে। 
শহীদুল জহিরের পাঠকমাত্রই জানে, ভাষার ব্যাপার তাঁর অভিনিবেশ কতটা গভীর। শব্দের জুতসই ব‍্যবহারেও তিনি নিজেকে অতুলনীয় করে তুলেছেন। ভাষার এই বদল নিঃসন্দেহে তাঁর ‘ব‍্যক্তিগত প্রতিভা’র বড় জায়গা জুড়ে থাকছে। আহত কথকের বিহ্বল অভিজ্ঞতার বয়ানের মতো কেবল তাঁর ভাষায় আটকে থাকার প্রবণতা আমাদের ভেতর প্রবল। সেখান থেকে বের হতে না পারলে তাঁর শক্তি ও সাধনার সন্ধান পাওয়া যাবে না।
মৃত‍্যুর দুই দশক পরে এসেও লেখক শহীদুল জহির আমাদের রীতিমতো চ‍্যালেঞ্জে ফেলে দেন– আমরা তাঁকে কীভাবে মূল্যায়ন করব। চ‍্যালেঞ্জ জানিয়েছেন আরও কয়েকটা বিষয়ে, যে কারণে ব‍্যক্তি ও কিছু ক্ষেত্রে সংগঠনের উদ‍্যোগ ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে তাঁর সাহিত‍্যের বিশ্লেষণ করা শুরু হয়নি। শহীদুল জহিরের পাঠকের কাছে এখন আর অবিদিত নেই, দেশের কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর সাহিত্য নিয়ে পিএইচডি 

থিসিসের অনুমতি চেয়েও পাওয়া যায়নি। অধ্যাপকীয় উন্নাসিকতা। একই উন্নাসিকতা লেখক মাহমুদুল হক বিষয়েও। সে আরও এক প্রসঙ্গ।
এই উপেক্ষার একটা বৈশ্বিক কারণও ছিল। একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যাবে, গত শতাব্দীর মধ‍্য আশির দশকে (১৯৮৫) প্রথম গল্পগ্রন্থ প্রকাশ থেকে শুরু করে চলতি শতকের শূন্য দশকের মাঝামাঝি (২০০৬) জীবদ্দশায় প্রকাশিত শেষ উপন্যাসের সময়টা সাহিত্যে প্রবলভাবে রাজ করছেন সাংবাদিক ও অধ‍্যাপকরা। তখন পর্যন্ত সরকারের উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা– সচিব, আমলা– থেকে একেবারে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া উজ্জ্বল লেখক ছিলেন না। গত দেড় দশকের মতো চর্চিত আমলা লেখকের প্রবল প্রতাপও ছিল না তখন। তবে জহিরের সময় সেই প্রভাব তৈরি হলেও তিনি যে তাতে লালায়িত হতেন না, তা তাঁর একান্ত নিভৃত জীবনের নানা ঘটনার ভেতর দিয়েই জানা যায়। 
পেশা জীবনে সরকারি চাকরি যে অর্থে নিশ্চয়তা বহন করে, লেখালেখি সেখানে অনিশ্চয়তারই ধারক। তার ওপর জীবনানন্দ দাশের ভাষায় ‘(আমরা বুঝেছি যারা) জীবনের এইসব নিভৃত কুহক’ খুঁজে পাওয়ার মতো শহীদুল জহির সেই নিভৃত কুহকের সন্ধান পেয়ে গিয়েছিলেন। ফলে সাহিত্যের হলাহলে তাকে দেখা যায়নি। এ কথা আজ সুবিদিত, শহীদুল হক নামে লেখা প্রথম গল্পগ্রন্থ ও মরণোত্তর উদ্ধার হওয়া অগ্রন্থিত দুটি উপন্যাসের ভাষার সঙ্গে পরের দুটি গল্পগ্রন্থ ও চারটি উপন্যাসের লেখক ‘শহীদুল জহিরের’ ভাষার পার্থক্য রীতিমতো খোলনলচে বদলে ফেলার মতো। মিলান কুন্দেরা, ভ্লাদিমির নাবোকভ, রঁনে দ‍্য বালজাক, এমনকি হালের ঝুম্পা লাহিড়ীর মতো গুটিকয়েক সাহিত্যিক একটা ভাষায় খ‍্যাতি অর্জন করার পর পুরোপুরি অন‍্যভাষায় লেখালেখি করার কথা বিশ্বে সুবিদিত। ‘ইউলিসিস’-এর লেখক জেমস জয়েস বা কমলকুমার মজুমদারের মতো দুরূহ নিজস্ব ভাষা তৈরির উদাহরণও আছে আমাদের সামনে। তবে আন্তঃভাষায় নিজের অভূতপূর্ব বদলে ফেলার উদাহরণ শহীদুল জহিরের বাইরে খুব কমই পাওয়া যাবে।
গল্পের কাহিনি বয়ানের জন্য জুতসই একটা ভাষা সব লেখকেরই কমবেশি আয়ত্তে আনতে হয়। সে ক্ষেত্রে শুধু কাহিনিকে গুরুত্ব দেওয়া গল্পের কাঁধে ভাষার জঞ্জাল বহনের মতোই অসংগত হয়ে উঠতে পারে। এ বিপরীতে ভাষাই একটা সৌন্দর্য তৈরি করতে পারে, সেটা গল্পকে রীতিমতো উদযাপনের পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারে। 
আজকের লেখক-পাঠকেরা জানেন, বহু পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে কথাসাহিত্যে আমরা এখন চিন্তার যুগে বাস করছি। আর চিন্তার সমৃদ্ধিহীন কোনো সাহিত্যই টিকে থাকে না, আলাপও তুলে না। ওপর কাঠামোয় গল্পের বিনোদনের ভেতর চিন্তার বীজ বপন করে দিতে পারাই লেখকের বড় অর্জন। সেই বিচারে বলা যেতে পারে, শহীদুল জহিরের আশ্চর্য নতুন ভাষার ভেতর দিয়ে পূর্বের বহু লেখকের বিষয়-বর্ণনার অনুমোদন না পাওয়া বিভিন্ন বিষয়-প্রসঙ্গ, উপমা-অনুষঙ্গ তিনি নিজের সাহিত্যে প্রবেশ করাতে পেরেছিলেন। এখানেই তাঁর ভাষার বিরাট গ্রহণযোগ্যতা বলতে হবে। বলব যেতে পারে, এইসব প্রসঙ্গ-অনুষঙ্গের অনুপ্রবেশের জন্যই তিনি এই ভাষা তৈরিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। যেমনটা বলেছিলেন আজকের জগৎখ্যাত জাপানি সাহিত্যিক হারুকি মুরাকামি– তিনি গল্পের ভেতর দিতে দর্শন-ইতিহাস সমীক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই অনেকটা সরল, এবং অবশ্যই, ইঙ্গিতময় ভাষারীতি বেছে নিয়েছেন।

২.


শহীদুল জহির যেমন বয়ানে ‘আমরা’ ‘আমাদের’ শব্দের ভেতর দিতে বহু মানুষের প্রায় বৈচিত্র্যহীন যৌথাবস্থা তুলে ধরেন; তারা সবাই একই বিষয়ে একসঙ্গে কৌতূহলী হচ্ছে, আলাপ করছে; একইভাবে নানা বিষয়ে, বিশেষ করে ইতিহাস (মুক্তিযুদ্ধ) বিষয়ে সিগমুন্ড ফ্রয়েড কথিত ‘যৌথ অবচেতনে’ ভুগছে। যে কারণে হঠাৎ মনে পড়ায় আশ্চর্যও হচ্ছে। এর বিপরীতভাবে ‘কিংবা’ ‘অথবা’ ‘হয়তো’ ‘বা’ শব্দের ভেতর দিয়ে যৌথতার ভেতর তুমুলভাবে বিদ‍্যমান অনিশ্চয়তা, অনির্দিষ্টতা, বিচ্ছিন্নতার দিকেই আঙুল তোলেন শহীদুল জহির। এই বৈপরীত্য তার অনেক গল্পে আপাত সম্পর্কহীন বৈসাদৃশ দুটি ঘটনা বা পরিস্থিতির মধ্যেও দেখা যাবে, তবে শেষে তা স্ববিরোধ নিয়েই সহাবস্থান ঘটে। মনে করা যেতে পারে, লেখক অরুন্ধতী রায় একবার সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই পুঁজি বিরাট-বিপুল বিস্তারের দিনে আমরা বোধহয় কমবেশি স্ববিরোধ ছাড়া কেউ বাঁচতে পারছি না। 
দার্শনিক বিচারে আমরা উত্তর-আধুনিক যুগেই বাস করছি, সেখানে কোনো কিছুই পূর্বনির্ধারিত রকমের নিশ্চিত নয়। পশ্চিমের বিকশিত পুঁজির দুনিয়ায় একটা কেজো পোক্ত ব‍্যবস্থা গড়ে উঠেছে, সেখানে একটা বাসও দু-দশ মিনিট দেরিতে স্ট‍্যান্ডে পৌঁছলে যাত্রীরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। নিরাপত্তা-নিশ্চয়তা এতই প্রার্থিত যে, এর নাম করে দুনিয়ায় যুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ার অজুহাত পর্যন্ত পেয়ে যায় রাষ্ট্র। এর বিপরীতে তথাকথিত ‘তৃতীয় বিশ্বের’ দেশগুলোতে রাষ্ট্র শাসন থেকে নাগরিক জীবন ঘটনাবহুল রকমের অস্থির, এতটাই অনিশ্চিত যে সব সময় এক সংবেদন নিয়েই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। এই অনিশ্চয়তা শহীদুল জহিরের গল্পে বিরাট সৌন্দর্য হিসেবে হাজির হয়েছে। বিরতিহীন (দাড়ি চিহ্নহীন) ছোট ছোট বাক্য দীর্ঘ অনুচ্ছেদ তারই প্রকাশ ঘটেছে। যেমনটা দেখা গেছে কমলকুমার মজুমদারের ‘সুহাসিনীর পমেটম’ উপন্যাসে। 
এক সাক্ষাৎকারে শহীদুল জহির জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের কুটির শিল্পের ইতিহাস’ গল্পের শেষ করতে চেয়েছিলেন যতিচিহ্ন কমা দিয়ে। কিন্তু বারবার সংশোধনের পরও প্রকাশনীর প্রুফ সেকশন থেকে কমা কেটে দাড়ি বসিয়ে বই প্রকাশ করায়, তিনি পরের বইয়ে গল্পটা পুনর্মুদ্রণ করে কমা নিশ্চিত করেছিলেন। সাহিত্যের আলোচকদের বিচারের, কমা দিয়ে গল্প বা লেখা শেষ করার মানে দাঁড়ায়, অশেষ কথকতা। সেই ভাবনা থেকেই শহীদুল জহির গল্পটি কমা দিয়ে শেষ করেছিলাম। যতিচিহ্ন নিয়ে তেমন এক ভাবনা থেকে নোবেল জয়ী পর্তুগিজ লেখক হোসে সারামাগো তাঁর বিখ্যাত ‘অন্ধত্ব’ (ইংরেজি: দ‍্য ব্লাইন্ডনেস) উপন্যাসে মাত্র কিছু কমা আর দাড়ি (ফুল স্টপ) ব‍্যবহার করেছিলেন। তাঁর ভাবনায়, আমরা কথা বলার সময় সাধারণত বিরতি মানি না, তাই লেখায় যতিচিহ্ন ব‍্যবহার ভাষাকে কণ্টকিত করে। 
আমাদের স্বীকার করতেই হয়, ঢাকার সাহিত্যে পূর্বনির্ধারণযোগ্যতা- রোগে বহু গল্পের অপমৃত্যু হয়। গল্পের সূচনা পড়েই গল্পের শেষ ভেবে ফেলে কঠিন হয় না। ফলে তা পাঠের যোগ্যতাও হারায়। শহীদুল জহিরের গল্পগুলো এই রোগ থেকে অনেকটা মুক্ত থেকেছে। উপরন্তু, ‘এবং’ ‘অথবা’ ‘কিংবা’ অব‍্যয়ের ব‍্যবহার রীতিমতো গোলকধাঁধা তৈরি করে, অনেক সময় যে বিভ্রমের জন্ম দেয় তা একই ঘটনার বহুগামিতার সম্ভাবনা তৈরি করে; ফলে গল্পজুড়ে বহু সমাপ্তিরও ইশারা বহন করে। কার্যকারণ বিচারে, যদি একটা ঘটনা এমন হতো, তাহলে গল্পের পরিণতি অন‍্যরকম হতে পারত। ‘মহল্লায় বান্দর, আব্দুল হালিমের মা এবং আমরা’ গল্পে তিনি লেখেন– ‘আহারে আব্দুল হালিম, আহারে আমার পোলা, বলে তার মা হয়তো কাঁদে, নীরবে বিলাপ করে, মহল্লার লোকেরা হয়তো এই কান্নার শব্দ শুনতে পায়, অথবা পায় না, অথবা তার মা হয়তো আর কাঁদে না, হয়তো এতদিন পর ভূতের গলির লোকরাও আব্দুল হালিমের কথা ভুলে যায়, অথবা হয়তো একেবারে ভুলেও যায় না।’
কাহিনি বয়ানের মতো শহীদুল জহিরের ভাষায় পাঠোত্তর একটা ঘোর লাগার ব‍্যাপার আছে। যাকে বলে ‘স্ট্রিম অব কনশাসনেস’। সবচেয়ে বেশি প্রভাব দেখা গেছে সারামাগোর ‘অন্ধত্ব’ উপন্যাসে, সেখানে এক দম্পতি হঠাৎ জ্বলে ওঠা পথবাতি (স্ট্রিট লাইট) থেকে সবকিছু সাদা দেখতে শুরু করে। উপন‍্যাটি পড়তে পড়তে পাঠকেরও একসময় মনে হয়– আমিও বইয়ের পাতায় সব সাদা দেখছি না তো! জহিরের গল্প পড়তে পড়তে পাঠ অবচেতনে সেই ঘোর দ্বারা আক্রান্ত হয়। যেখানে লেখক তাঁর অব‍্যয়বহুল (‘কিংবা’ ‘অথবা’ ‘হয়তো’) বাক্য ব্যবহার করছেন না, তখনও পাঠক চোখের বিভ্রমে ওই ধরনের বাক‍্যে গল্প পড়ে যান। যেমনটা ঘটে জীবনানন্দ দাশের কবিতা পড়ার সময়।
যে কারণে উত্তর প্রজন্মের কাছে তাঁদের প্রভাব বেশি, প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে গেছে। যেমন হয়েছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। 
ইলিয়াস, জহির এই সাহিত‍্য উপত্যকার চারপাশের উঁচু পাহাড়ের মতো। এই পাহাড়গুলো বহু ঝড়ঝঞ্ঝা থেকে বাংলা সাহিত্যের উপত্যকাকে সুরক্ষা দিচ্ছে, যেটা জরুরিও ছিল। এর ভেতর সাহিত‍্য ভালোও থাকে। তবে এতে আবদ্ধ হলেই বিপদ। এইসব পাহাড়ের ওপরে উঠতে না পারলে পাশের আরও বর্ণিল-উপত‍্যকার দেখা পাওয়া যাবে না, পেরিয়ে না গেলে সম্পর্কও স্থাপন হবে না, বহু উপত‍্যকার ওপর দিয়ে নগর জনপদের নাগাল পাওয়া যাবে না। সেটা তাগিদ বুঝতে পারলে, পেরিয়ে যেতে পারলেই বিকশিত হয় সাহিত্য। যেমনটা করেছিলেন শহীদুল জহির নিজেই।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপন য স শ ষ কর কর ছ ল আম দ র অন শ চ ব পর ত র ত মত য মনট যবহ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

মুরগির সঙ্গে বেড়েছে চালের দাম

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে চাল ও ব্রয়লার মুরগির দাম। গত সপ্তাহে মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০-২০০ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২১০-২২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও মানভেদে গড়ে চালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম ও চাহিদা বেশি থাকায় দাম ঊর্ধ্বমুখী। এছাড়া ঈদকে কেন্দ্র করে দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন বাজারে মোটা চাল (বিআর ২৮) বিক্রি ৫৮ থেকে ৬২ টাকা, মানভেদে মিনিকেট ৮৫ থেকে ৮৮ টাকা, নাজিরশাইল ৬৮ থেকে ৮০ টাকা, মাঝারি চালের দাম ৭০ থেকে ৭৬ টাকা, চিনি গুঁড়া পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়।

এদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও কমেছে সোনালি মুরগির দাম। গত সপ্তাহের যে সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় তা এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায়। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়।

গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও সবজির দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এখন বাজারে বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৫০, বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ থেকে টাকা কেজি, চিচিঙ্গা ৫০, দেশি শশা ৪০, বরবটি ৯০, ঢেঁড়স ৭০, জালি কুমড়া ৫০ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া পিস ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০, রসুন ২৩০ ও দেশি আদা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় দাম স্বাভাবিক রয়েছে। এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকায়। চাষের পাঙাশ কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০, কৈ ২২০, শিং ৫০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ থেকে ২৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী নাজমুল হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘আমরা মাংস বলতে ব্রয়লার মুরগি বুঝি, ঈদ ছাড়া গরুর মাংস কেনা হয় না। সপ্তাহে একদিন মুরগির কিনি কিন্তু এখন আবারো দাম বাড়লো। কিছু করার নেই কম নিতে হবে। সরকার চেষ্টা করে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্য পারছে না।’’

রাজধানীর নিউমার্কেটর সাওন মিনিট হাউজের স্বত্বাধিকারী সাওন মিয়া রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, ‘‘গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মুরগির দাম একটু বেশি। কারণ চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ কম। তবে সরবরাহ ঠিক হলে দাম স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা আছে।’’

ঢাকা/রায়হান/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ