নোবিপ্রবি ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগ
Published: 20th, March 2025 GMT
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল নেতা বিরুদ্ধে ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী শিশির পন্ডিত হরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা প্রশাসন বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। অপরদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম জাহিদ হাসান।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রাধ্যক্ষ বরাবর দেওয়া ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
নোবিপ্রবিতে ২০ মার্চ থেকে ছুটি শুরু, বন্ধ থাকবে হল
নোবিপ্রবিতে ২ ছাত্রদল নেতার জন্য মাস্টার্স চালু
অভিযোগে জানা যায়, ভুক্তভোগীর হলে থাকার বৈধ সিট থাকলেও জাহিদ হাসান নামে ওই ছাত্রদল নেতা নিজেকে ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পছন্দের লোক উঠানোর চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে অন্য ছাত্রদল নেতাকর্মীদের দিয়ে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে জেরা করেন তিনি।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, “আমি ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলে ৪২৪ নাম্বার রুমের বৈধ শিক্ষার্থী। হলের অ্যালটমেন্ট ফি সময় মতো দেওয়াসহ সবকিছু সময়মত করেছি। আমার উঠতে কিছুদিন দেরি হলে ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী আমাকে জানায়, আমার সিট নাকি বাতিল হয়ে গেছে। তাই তারা ওই রুমে নিজেদের জুনিয়রকে তুলবে। পরবর্তীতে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি হল প্রশাসন এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ওই রুমে হল প্রশাসন পাঁচজন শিক্ষার্থীকে অ্যালটমেন্ট দিলেও সেখানে ছয়টা সিট প্রবেশ করিয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি এবং আমার বন্ধু একাডেমিক কাজে কিছুদিন ঢাকা থাকায় আমাদের সিট নিয়েও ষড়যন্ত্র শুরু হয়। আমার অনুপস্থিতিতে এক জুনিয়র রুমে থাকতে গেলে তাকেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। যদিও রুমে অ্যালটমেন্ট না হওয়া অন্য দুজন শিক্ষার্থী থাকলেও তাদের বিষয়ে চেপে গিয়ে আমাদের রুমে থাকতে না দেওয়ার হুশিয়ারি দেওয়া হয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ৯ মার্চ দুপুর ১২.
নিরাপত্তাহীনতায় বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অভিযোগপত্রে হল প্রশাসনকে অনুরোধ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসান বলেন, “অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। আমার কাছে তথ্য এসেছে যে, শিশির পন্ডিত এবং তার বন্ধু চাকরিজীবী হয়েও তারা হলে সিট নিয়েছে এবং সিটে উঠেনি। হল প্রশাসন একটা নোটিশ দিয়েছে, যারা নির্দিষ্ট সময়ে হলে উঠবে না, তাদের সীট বাতিল বলে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে প্রভোস্ট মহোদয়ের মৌখিক অনুমতি নিয়ে দুইটা ছেলে ওই রুমে থাকে।”
তিনি বলেন, “শিশির পন্ডিতের পরিচয় দিয়ে তার জুনিয়র সেখানে থাকতে আসে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমি শিশির পন্ডিতকে কল দিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেছি।”
ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয়ের বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, “আমি এমন কোনো পরিচয় দেইনি। আমি শুধু বলেছি আমি নোবিপ্রবি ছাত্রদল নেতা জাহিদ হাসান।”
নোবিপ্রবি ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক নূর হোসেন বাবু বলেন, “জাহিদ হাসান নামে আমাদের কমিটিতে কোনো নেতা নেই। কেউ যদি ছাত্রদল সভাপতি পরিচয় দিয়ে কোনো অন্যায় কাজ করে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনার অনুরোধ জানাচ্ছি। পাশাপাশি হল প্রশাসনকে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
নোবিপ্রবি ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রাধ্যক্ষ বডি অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী প্রাধ্যক্ষ বলেন, “ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয়ে শিক্ষার্থীকে হয়রানির অভিযোগটি আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে আমরা হল প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ন ত ছ ত রদল র ন ব প রব হল প র আম দ র র বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে চুন-সুরকির গোয়ালবাথান মসজিদ গরমে দেয় ঠান্ডার প্রশান্তি
শ্যামল প্রকৃতির মধ্যে একটুকরা ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি মসজিদ। প্রায় সাড়ে চার শ বছরের পুরোনো মসজিদটির অবস্থান নড়াইল সদর উপজেলার গোয়ালবাথান গ্রামে। চুন–সুরকির গাঁথুনিতে তৈরি গোয়ালবাথান মসজিদটিতে মোগল স্থাপত্যশৈলীর নান্দনিক ছোঁয়া স্পষ্ট। সুনিপুণ একটি গম্বুজ, সুগঠিত ছোট চারটি মিনার আর দেয়ালের অসাধারণ কারুকাজ।
ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ আদায় করা সত্তরোর্ধ্ব মো. সুলতান কাজী বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নামাজ পড়ি। চুন-সুরকি দিয়ে বানানো হওয়ায় মসজিদের ভেতরে গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হয়। ভেতরে ঢুকলেই প্রশান্তি লাগে।’
মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট ও প্রস্থ ৩৫ ফুট। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হয়। মূল মসজিদের ভেতরে একসঙ্গে তিন কাতারে নামাজ আদায় করা সম্ভব। তবে সময়ের পরিক্রমায় মুসল্লির সংখ্যা ক্রমে বাড়তে থাকায় মসজিদের সঙ্গে নতুন করে একটি অংশ সংযোজন করা হয়েছে, যাতে আরও বেশি মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যে ইবাদত করতে পারেন। মসজিদের পাশেই আছে শানবাঁধানো পুকুরঘাট, এখানে বসেই অজু সম্পন্ন করেন মুসল্লিরা।
মোগল আমলে মুন্সী হয়বৎউল্লাহ নামের একজন মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। তাঁর বংশধরেরা এখনো মসজিদটি দেখভাল করেন।প্রতিনিয়ত দূরদূরান্ত থেকে নামাজ আদায় করতে এবং মসজিদটি একনজর দেখতে ভিড় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। তাঁদের একজন নড়াইল শহরের ভওয়াখালী এলাকার বাসিন্দা মো. তরিকুল ইসলাম। গোয়ালবাথান গ্রামে তাঁর একটি ইটভাটা আছে। মাঝেমধ্যে এখানে আসা হয় তাঁর। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, এই মসজিদের বয়স ৪৫০ বছর। এই এলাকায় এলেই আমি ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে নামাজ পড়ি। এখানে নামাজ পড়ে খুবই শান্তি লাগে।’
মোগল আমলে মুন্সী হয়বৎউল্লাহ নামের একজন মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন বলে প্রচলিত আছে। তাঁর বংশধরেরা এখনো মসজিদটি দেখভাল করেন। তাঁরা বলেন, টিভি ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মসজিদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন। দর্শনার্থীদের জন্য বসার বেঞ্চ বা বিশ্রামাগার নির্মাণ করা জরুরি। এ ছাড়া মসজিদের ইমামের থাকার জন্য একটি ঘর প্রয়োজন। মসজিদে আসার ১০০ ফুট কাঁচা রাস্তা বৃষ্টির সময় কাদা হয়ে যায় বলে পাকা করা দরকার।
আমি ছোটবেলা থেকে এই মসজিদে নামাজ পড়ি। চুন-সুরকি দিয়ে বানানো হওয়ায় মসজিদের ভেতরে গরমের সময় ঠান্ডা ও ঠান্ডার সময় গরম অনুভূত হয়। মো. সুলতান কাজী, মুসল্লিমসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম তৈয়বুর রহমান বলেন, এটি যশোর-খুলনা অঞ্চলের প্রাচীন একটি মসজিদ। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী মসজিদটি এখনো প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় আসেনি। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ তাদের আওতায় নিয়ে মসজিদটি দেখভাল করবে, এমনটাই আশা তাঁদের।