ভারতের কোচের সমীহ পেলেন হামজা ও বাংলাদেশ
Published: 20th, March 2025 GMT
‘এএফসি এশিয়ান কাপ-২০২৭’ এর বাছাইপর্বের ম্যাচে মঙ্গলবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে ভারত। তার আগে গতকাল বুধবার তারা মালদ্বীপের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে। সেখানে ৩-০ ব্যবধানে জয় পেয়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেয় বাংলাদেশের ম্যাচের আগে।
অবশ্য ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ নিয়ে অবধারিতভাবে প্রশ্ন আসে। আর সেই প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের তারকা খেলোয়াড় হামজা ও বাংলাদেশ দলকে সমীহ দেখান ভারতের স্প্যানিশ কোচ মনলো মারকুয়েজ।
‘‘হামজা বড় মাপের একজন খেলোয়াড়। এখন অবশ্য সে প্রিমিয়ার লিগে খেলে না। তবে চ্যাম্পিয়নশিপে নিয়মিত খেলছে। বাংলাদেশও সম্প্রতি ভালো খেলছে। কারণ, তারা গেল চার বছর ধরে একই কোচের তত্ত্বাবধানে আছে।’’
আরো পড়ুন:
সবার আগে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলো জাপান
বড় স্বপ্ন, হামজা জয়গানে বাংলাদেশের শিলং যাত্রা
বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচটি কঠিন হতে যাচ্ছে ভারতের জন্য। কোচ নিজেও সেটি অকপটে স্বীকার করেছেন, ‘‘আসলে আমার জন্য কোনো সহজ ম্যাচ নেই। হয়তো স্কোর বড় হবে। আমার মনে হচ্ছে ম্যাচটি উভয় দলের জন্যই কঠিন হবে।’’
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীপুরে ২৫ শিক্ষক আসামি, নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন
গণঅভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের শ্রীপুরে ২৫ শিক্ষকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। এসব মামলাকে মিথ্যা দাবি করে সেগুলো থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় মানববন্ধন করেছেন শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির নেতারা।
জানা যায়, কোনো কোনো শিক্ষক রয়েছেন আত্মগোপনে, কেউ আবার বাড়ি ছেড়ে যাপন করছেন ফেরারি জীবন। হত্যা মামলায় আসামি হয়েও এদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়েই শ্রেণিকক্ষে পাঠ দান করে চলছেন। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় ১০টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৯ জনের পরিবার ৯টি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয়েছে কমপক্ষে ২ হাজার মানুষকে। অন্যদিকে ওই ঘটনায় আব্দুল আলীম শেখ নামে বিজিবি’র এক সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৯ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ সেক্টর সদর দপ্তরের জেসিও নায়েব সুবেদার সোহেল রানা একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি করা হয় অজ্ঞাত হাজার হাজার মানুষকে।
শ্রীপুর উপজেলা শিক্ষক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল অভিযোগ করে বলেন, ওই দিন পল্লী বিদ্যুৎ মোড় এলাকায় সংঘর্ষে নিহত পরিবারগুলোর দায়ের করা পৃথক ৪টি মামলায় আসামি করা হয়েছে উপজেলার ১৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ শিক্ষক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। মামলায় আসামি করা শিক্ষকরা ওই ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। মামলাগুলোর বাদীরাও চিনেন না তাদেরকে। নামও জানেন না। তবুও ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে একটি কুচক্রী মহল তাদেরকে মামলায় জড়িয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে মানুষ গড়ার এ সব কারিগরদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে ব্যাহত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। অভ্যুত্থানে এক ছাত্র নিহত হওয়ার ঘটনায় আসামি করা হয়েছে মাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সিরাজকে। তিনি বলেন, অসুস্থ হয়ে আমি প্রায় ৬ মাস শয্যাশায়ী ছিলাম। অভ্যুত্থানের সময় আমি একা চলতেই পারিনি। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে তবুও স্কুলে গিয়ে দাপ্তরিক কাজ অব্যাহত রাখি। ৫ আগস্ট আমার কয়েকজন সহকর্মী আমাকে জোর করে নিয়ে যায় আমার এক ছাত্রীর বাড়িতে। সেখানে সকল শিক্ষকের নিমন্ত্রণ ছিল। ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। অথচ শত্রুতা বশত আমার নামও হত্যা মামলায় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার আতঙ্ক নিয়ে আমি এখনও স্কুলে যাই।
রাজেন্দ্রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী আসকর মাস্টারকেও আসামি করা হয়েছে অন্য একটি হত্যা মামলায়। সমকালকে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমার বাড়ি প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। ৫ আগস্ট আমি সারা দিনই বাড়িতে ছিলাম। ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানি না। অথচ আমাকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। কেউ না কেউ ষড়যন্ত্র করে আমাকে আসামির তালিকায় দিয়েছেন। বাদী আমাকে চিনেন না। নামও জানেন না।
অন্য একটি মামলার আসামি করা হয়েছে স্যরস এডুকেশন সেন্টারের প্রধান শিক্ষক জহিরুল ইসলামকে। তিনি বলেন, ‘পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ের ঘটনার সময় আমি এলাকাতেই ছিলাম না। অথচ আমার নাম আসামির তালিকায়। মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে এখন আমি ঘর ছাড়া।
মানববন্ধন শেষে বক্তারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। মিথ্যা মামলায় আসামি করে ২৫ জন শিক্ষকের সম্মানহানী করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলাগুলো থেকে শিক্ষকদের নাম প্রত্যাহারের দাবি তুলেন শিক্ষক নেতারা।
সংগঠনের সভাপতি আবদুল হান্নান স্বজলের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান নাজমুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকবৃন্দ।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, মামলাগুলো তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে সম্পৃক্ততা না পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া মামলার বাদী যাদেরকে আসামি করে এজাহার জমা দিয়েছেন তারাই আসামি হিসেবে রয়েছেন। এখানে পুলিশের কিছু করার ছিল না।