ছত্তিশগড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের সংঘর্ষ, নিহত ২২
Published: 20th, March 2025 GMT
ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের বস্তার অঞ্চলে পৃথক দুটি অভিযানে অন্তত ২২ জন মাওবাদী ও একজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দক্ষিণ বস্তারের বিজাপুর-দান্তেওয়াড়া সীমান্তে প্রথমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ছত্তিশগড় পুলিশ সূত্র জানায়, বিজাপুর সংঘর্ষস্থল থেকে ১৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং কাঁকের এলাকায় পৃথক একটি সংঘর্ষে আরো ৪টি লাশ পাওয়া গেছে। দুই অভিযানে নিরাপত্তা বাহিনীর এক সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন। নিহত ওই জওয়ান ছত্তিশগড় ‘জেলা রিজার্ভ গার্ড’ (ডিআরজি)-এর সদস্য ছিলেন।
বৃহস্পতিবার ছত্তিশগড় রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানানো হয়, মাওবাদীদের উপস্থিতি নিশ্চিত হলে বিজাপুর ও কাঁকের জেলায় দুটি অভিযান চালানো হয়। ডিআরজি, স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) এবং সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের (সিআরপিএফ) সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ দল ওই নকশালবিরোধী ওই অভিযানটি পরিচালনা করে।
প্রথম এবং সবচেয়ে বড় সংঘর্ষটি হয় গঙ্গালুরের বিজাপুর-দান্তেওয়াড়া সীমান্তের ঘন জঙ্গলে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১৮ জন মাওবাদী এবং ‘জেলা রিজার্ভ গার্ড’-এর ১ সদস্য নিহত হন। সকাল ৭টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয় এবং বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সেই সংঘর্ষ চলে।
বিজাপুর পুলিশ নিশ্চিত করেছে যে, সংঘর্ষস্থল থেকে এখনো পর্যন্ত ১৮ জন মাওবাদীর লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরকও জব্দ করা হয়েছে।
অন্যদিকে, কাঁকের জেলায় ছোটেবেঠিয়ার কোরোস্কোডো গ্রামের কাছে একটি পৃথক অভিযানে দুই পক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়ে ৪ মাওবাদী নিহত হয়েছে। মাওবাদীদের উপস্থিতির বিষয়টি টের পেয়ে নিরাপত্তা বাহিনী সেখানে অভিযান চালানোর সময় মাওবাদীরা তাদের ওপর আক্রমণ করলে পাল্টা প্রতিশোধ নেয় যৌথ বাহিনী।
ঘটনাস্থলে আর কোন মাওবাদী আত্মগোপন করে রয়েছে কি না, তার সন্ধানে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা এখনো অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
এই অভিযানের পরই ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, ‘‘নকশালমুক্ত ভারত অভিযানের অংশ হিসেবে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা আরেকটি বড় সফলতা পেয়েছে। ছত্তিশগড়ের বিজাপুর এবং কাঁকের এলাকায় দুটি পৃথক অভিযানে ২২ জন নকশাল নিহত হয়েছে।’’ এর আগে চলতি বছরের মধ্যেই ভারতবর্ষ মাওবাদী মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
ঢাকা/সুচরিতা/এনএইচ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজা-পশ্চিম তীরে কেমন ছিলেন, জানালেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ২ ফিলিস্তিনি তরুণ
অর্ধশতাব্দীর বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনে দখলদারি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের অর্ধেকের বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে তারা। বিভিন্ন যুদ্ধে ফিলিস্তিনি নারী, পুরুষ, শিশুদের হত্যা করা হয়েছে। এসব যুদ্ধের সাক্ষী পুরো বিশ্ব। কোনো কোনো দেশ নীরব থেকেছে, কেউ আবার সরব হয়েছে, যেমন বাংলাদেশ।
কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশে পড়ুয়া ফিলিস্তিনি দুই তরুণ ইব্রাহিম কিসকো (২৩) ও আইজ্যাক এন নমুরা (২৩)। আজ রোববার বিকেলে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ আয়োজিত ‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তাঁরা। আইজ্যাকের বাড়ি দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরনে। আর ইব্রাহিমের বাড়ি গাজায়।
ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা—দুজনই বাংলাদেশে চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করছেন। আইজ্যাক পড়ছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে আর ইব্রাহিম ঢাকা মেডিকেল কলেজে। তাঁরা দুজনেই চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী। ২০২১ সালে বৃত্তি পেয়ে তাঁরা বাংলাদেশে পড়তে আসেন। বাংলাদেশে এসে একে অপরকে চিনেছেন।
আলোচনা সভায় আইজ্যাক বলেন, ‘২০২১ সালে আমি যখন বাংলাদেশে আসি, তখন পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রায় ১০০ তল্লাশিচৌকি ছিল। সেখান থেকে শিশু, নারী, পুরুষদের হেনস্তা করত এবং তাঁদের ওপর নির্যাতন চালাত ইসরায়েলি বাহিনী। তাদের ইচ্ছেমতো আমাদের ধরে কারাবন্দী করে রাখা হতো।’
ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনের অসংখ্য শিশু, নারী, পুরুষকে কারাগারে বন্দী করে রেখেছে—অভিযোগ এনে আইজ্যাক বলেন, ‘কারাগারে আমার ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা সেখানে অনাহারে দিন পার করছে। প্রতিনিয়ত নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব থেকে মুক্তি চাই। ইনশা আল্লাহ, একদিন মুক্ত হব।’
আলোচনা সভার আগে আইজ্যাক এন নমুরার সঙ্গে কথা হয় প্রথম আলোর। তিনি জানান, ছেলেবেলায় মহাকাশচারী হতে চেয়েছিলেন। তাঁর পরিবারে ছয় ভাই ও পাঁচ বোন রয়েছে। তিনিই একমাত্র ফিলিস্তিন থেকে দূরে। তাঁর প্রিয় খাবার ‘মাকলুবা’ (বিরিয়ানির মতো একধরনের খাবার)। বাংলাদেশের তেহারি খেতে খুবই পছন্দ করেন। মিষ্টান্নের মধ্যে প্রিয় রসমালাই। পুরান ঢাকা ঘুরতে এবং পুরান ঢাকার খাবার খেতে ভালো লাগে তাঁর।
‘বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিতে ফিলিস্তিনের সংগ্রাম অনুধাবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কথা বলেন ফিলিস্তিনি তরুণ ইব্রাহিম কিসকো ও আইজ্যাক এন নমুরা