পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখার পাশাপাশি মুসল্লিরা নিয়মিত মসজিদে তারাবিহর নামাজ আদায় করে থাকেন। যাঁরা হাঁটু বা কোমর ব্যথায় আক্রান্ত, তাঁরা এ ক্ষেত্রে বেশ সমস্যায় পড়েন। অনেকে বসে নামাজ পড়তে অস্বস্তি বোধ করেন, জোর করেই দাঁড়িয়ে পড়তে চান। এ কারণে অনেকেরই রমজানে ব্যথাবেদনা বেড়ে যেতে পারে।
এ সময় হাঁটুর ব্যথার রোগীরা নিয়মিত ফিজিওথেরাপি শুরু করতে পারেন। এতে রোজার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অনেকটা সুস্থ থাকতে পারেন। রমজানজুড়ে কিছু হালকা ব্যায়ামও করতে পারেন। তাতে কর্মক্ষম থাকবেন, স্বাভাবিক কাজে বেশি ব্যাঘাত ঘটবে না।
দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অস্থিসন্ধি হচ্ছে হাঁটু। এটি শুধু শরীরের ওজন বহন করে না, স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে, সোজা হয়ে দাঁড়াতে, দৌড়াতে, এমনকি আমাদের বসতেও সাহায্য করে। রমজানে বয়স্ক মানুষ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ও নামাজে বারবার হাঁটু ভাঁজ করে বসার কারণে হাঁটুব্যথা বাড়তে পারে।
হাঁটুব্যথার অনেক কারণ রয়েছে। আঘাত, লিগামেন্ট ইনজুরি, হাঁটুর ক্ষয় বা কোনো জীবাণু সংক্রমণের কারণে হাঁটুর ব্যথা হতে পারে। এ ছাড়া কোমরের সমস্যাজনিত ব্যথা হাঁটুতে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সঠিক দেহভঙ্গির অভাবে হাঁটুর ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। হাঁটুর ব্যথার সঙ্গে ফুলে গেলে বুঝতে হবে প্রদাহ হয়েছে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় না, বসা থেকে দাঁড়ালে বা দাঁড়ানো থেকে বসলে কষ্ট হয়, হাঁটু পুরোপুরি সোজা করতে অথবা ভাঁজ করতে সমস্যা হয়।
এমন অবস্থা হলে সমাধান কী? চিকিৎসকের পরামর্শ মতো কিছু ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি বেশ কার্যকর। কখনো অর্থোপেডিক কিছু ডিভাইস ও নির্দিষ্ট কিছু এক্সারসাইজ করলে হাঁটুর ব্যথা আংশিক কমে যায়।
চলাফেরার সময় যথাসম্ভব সমান্তরাল রাস্তা ব্যবহার করুন। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। দীর্ঘক্ষণ কাজ করতে হলে যেমন দীর্ঘ নামাজের সময় প্রয়োজনে একটি টুল ব্যবহার করুন। একটু পরপর একটু বিশ্রাম নিন। মাঝেমধ্যে হাঁটাচলা করুন। ভবনের ওপরে–নিচে ওঠানামার সময় লিফট ব্যবহার করুন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামার সময় অন্য পা আগে ব্যবহার করুন।
নারীদের ক্ষেত্রে উঁচু হিলের জুতা পরিহারের চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে ওয়ার্কিং এইড ব্যবহার করুন। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য সূর্যের আলোতে থাকুন। চিকিৎসকের পরামর্শে কিছু ওষুধ সেবন করতে পারেন। একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। এতে অনেকাংশে হাঁটুর ব্যথা কমবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ন রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের ছেত্রি চ্যালেঞ্জ
২০২৪ সালের ৬ জুন যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কুয়েতের বিপক্ষে ম্যাচই ছিল ভারতের জার্সিতে সুনীল ছেত্রির শেষ ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ফুটবলকে সুনীলের বিদায় বলার পর ভারতও যেন জিততে ভুলে গিয়েছিল। ১৬ মাসে ১২ ম্যাচ খেলা দলটি পারেনি কোনো ম্যাচ জিততে। কোচ মানোলো মার্কুয়েজের ওপর বাড়তে থাকে চাপ। বরখাস্ত হওয়ার শঙ্কায় থাকা মানোলো ডাক দিলেন ছেত্রিকে।
২৫ মার্চ শিলংয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে কোচের ডাকে সাড়া দিয়ে ৪০ বছর বয়সী ভারতীয় ফুটবলের এ তারকা ফিরলেন অবসর ভেঙে। ভারতও ফিরল জয়ে। বুধবার শিলংয়ে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারত জিতেছে ৩-০ গোলে। এই জয়ে ছেত্রি করেছেন এক গোল। গোলের পর উদযাপন প্রকাশ করতে গিয়ে তাঁর চোখের কোণে জল এসেছিল। ভারতের জার্সিতে তাঁর গোলসংখ্যা হলো ৯৫। গোল করে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সেরা এ তারকা জানিয়ে দিলেন তিনি এখনও ফুরিয়ে যাননি। বয়স তাঁর কাছে স্রেফ সংখ্যা। বলা যায়, এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ এখন সুনীল ছেত্রি।
ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই বাংলাদেশের আতঙ্ক ছেত্রি। এক-দু’বার নয়, বহুবার বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়েছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর মালেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে গোল করেছিলেন তিনি। তাই তো শিলংয়ে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের দুর্ভাবনার নাম বেঙ্গালুরুর এ ফরোয়ার্ড। অনেকের ধারণা, বাংলাদেশে যখন ইংল্যান্ড প্রবাসী হামজা এসেছেন, তাঁকে টেক্কা দেওয়ার জন্যই ভারত ফিরিয়ে এনেছে ছেত্রিকে।
শেফিল্ড ইউনাইটেডে হামজা ডিফেন্সে খেলেন আর ছেত্রি হলেন ফরোয়ার্ড। তাই ভারতের আক্রমণ আর বাংলাদেশের রক্ষণভাগের লড়াইয়ের ভেতরে মূল লড়াই হবে মূলত হামজা ও ছেত্রির মধ্যে। যে লড়াইয়ে হামজাকে এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। বুধবার সংবাদ সম্মেলনে জামাল দুই তারকার কে সেরা বলতে গিয়ে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের অন্যতম তারকা ছেত্রি। তবে হামজা কিন্তু প্রিমিয়ার লিগে খেলা ফুটবলার।’