গোদাগাড়ীতে পাচারকালে ভিজিএফের বিপুল পরিমাণ চাল জব্দ
Published: 20th, March 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পাচারকালে ভিজিএফের দুই হাজার ৬৩২ কেজি চাল জব্দ করা হয়েছে। উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে এসব চাল পাচার করা হচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুঃস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত এসব চাল জব্দ করেন। চাল পাচারের অভিযোগে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার পর গোগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আসলাম আলী গা ঢাকা দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষে গরীব ও দুঃস্থদের মাঝে বিতরণের লক্ষে গোগ্রাম ইউনিয়নের জন্য ২৪ মেট্রিক টন বস্তা চাল বরাদ্দ করা হয়। এই পরিমাণ চাল দুই হাজার ৩৮০ জন দুঃস্থ ও গরিব মানুষের মাঝে বিতরণের কথা ছিল।
বুধবার একদফা কিছু চাল বিতরণ করা হয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সব চাল বিতরণ দেখানো হয়।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে ভ্যানে করে চাল পাচারের সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে (ইউএনও) ফোন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই হাজার ৬৩১ কেজি চাল জব্দ করেন।
ইউএনও’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোগ্রাম ইউনিয়নের ধাতমা গ্রামের একটি সড়ক থেকে ২৯ বস্তা, ধাতমা খাড়ি ব্রিজের কাছ থেকে ১৭ বস্তা, গোগ্রাম হাটপাড়ার মুকতাদিরের বাড়ি থেকে ৮ বস্তা ও খাদ্য অধিদপ্তরের সীলমোহরকৃত ৮৫টি খালি বস্তা জব্দ করা হয়। এসময় চাল পাচারকালে তেরোপাড়া গ্রামের আসাদুল ও উচ্ছড়াকান্দি গ্রামের মাইনুলকে আটক করা হয়।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাল আটক অভিযান চলে। এই বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের একজন কর্মচারী বাদী হয়ে থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগ দিয়েছেন। এটি মামলা হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম মমিনুল হক জানান, পাচার হওয়া চাল ক্রয়ের অভিযোগে দুই জনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
স্থানীয়রা জানান, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান কারাগারে গেলে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আসলাম আলীকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ঈদ উপলক্ষে দুঃস্থ ও গরিব মানুষদের মাঝে বরাদ্দকৃত বিশেষ ভিজিএফ চালের তালিকা প্রণয়নে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। যাদেরকে চালের কার্ড দেওয়া হয়েছে তাদের অধিকাংশই সচ্ছল ও বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মী। এই চক্রটি চাল তুলে পরিষদেই বিক্রি করে দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম আলীর মোবাইল নম্বরে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।
ঢাকা/কেয়া/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব তরণ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে রাস্তার পাশে পাওয়া গেল নবজাতক, হাসপাতালে ভর্তি
লক্ষ্মীপুরে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা নবজাতককে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকদের বিশেষ পর্যবেক্ষণে রয়েছে শিশুটি।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে জেলা শহরে মিয়া রাস্তার মাথা এলাকার লক্ষ্মীপুর-রামগতি সড়কের পাশ থেকে পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে।
এর আগে, শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। এসময় নবজাতককে দেখতে আশপাশের মানুষজন ভিড় জমায় ঘটনাস্থলে। পরে রাতেই পুলিশ শিশুটিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। খবর পেয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জামশেদ আলম রানা হাসপাতালে যান শিশুটির খোঁজ নিতে। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন- সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. শরীফ হোসেন।
আরো পড়ুন:
রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কয়েদির মৃত্যু
ছেলে সন্তানের জন্ম দিল ‘ধর্ষণের শিকার’ কিশোরী
মিয়া রাস্তা এলাকার বাসিন্দা কামাল মাঝি বলেন, “অন্ধকার থেকে হঠাৎ শিশুর কান্না ভেসে আসে। প্রথমে চমকে উঠি। পরে শিশুটিকে কোলে নেই। শিশুটিকে দেখতে মানুষজনও জড়ো হতে থাকে। পরে পুলিশের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হয়। কে বা কারা শিশুটিকে ফেলে গেছে তা কেউই দেখেননি।”
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক কমলা শীষ রায় বলেন, “শিশুটিকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসে তাকে দেখবেন। তারা শিশুটির শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আরো ভালো বলতে পারবেন।”
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ইউএনও জামসেদ আলম রানা বলেন, “শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছি। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা হয়েছে। সরকারি দায়িত্বে সে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার পরিচয় শনাক্তে চেষ্টা চলছে। পরিচয় না মিললে আমরা চট্টগ্রাম শিশু নিবাসে তাকে হস্তান্তর করব। কেউ যদি শিশুটিতে নিতে চান, তাহলে আদালতের মাধ্যমে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ