অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন আয়োজন করবে এবং কোনো দাবির কারণে ভোট বিলম্বিত হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা জানান। প্রতিনিধিদলটির নেতৃত্ব দেন ড. কমফোর্ট ইরো।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সরকার দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং এই তারিখগুলো পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। তিনি ব্যাখ্যা করেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি সীমিত সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন ডিসেম্বরেই অনুষ্ঠিত হবে। তবে বড় পরিসরে সংস্কার চাইলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনের মধ্যে আয়োজন করা হবে। 

আরো পড়ুন:

‘বিয়ের প্রলোভনে’ ধর্ষণের সাজা সর্বোচ্চ ৭ বছর

দেশের ১১৬তম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘গ্রামীণ ইউনিভার্সিটি’

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলটিকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। তবে দলের যেসব নেতা হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত, তাদের বাংলাদেশের আদালতে বিচার করা হবে।

এ ছাড়া জাতিসংঘের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে গত জুলাই মাসের আন্দোলনের সময় সম্ভাব্য অপরাধের কথা উল্লেখ করার পর আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো হতে পারে বলেও জানান ইউনূস। তিনি বলেন, এটি একেবারে আলোচনার মধ্যে রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা আরো জানান, ঐকমত্য কমিশন বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। সরকারের নীতিমালা নির্ধারণে গৃহীত জুলাই চার্টার চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের কর্মকর্তারা এই সপ্তাহে রোহিঙ্গা বিদ্রোহী নেতা আতাউল্লাহর গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানান এবং এটিকে শরণার্থী শিবিরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অঙ্গীকারের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

তারা রাখাইন রাজ্যের বড় অংশের নিয়ন্ত্রণে থাকা আরাকান আর্মির সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ বাড়ানোরও আহ্বান জানান। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ঢাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা করছে এবং আসন্ন বিশেষ জাতিসংঘ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি বৈশ্বিক মনোযোগ আকর্ষণের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

ড.

কমফোর্ট ইরো বাংলাদেশ ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মোকাবিলায় তার সংস্থার সমর্থনের কথা জানান।

অধ্যাপক ইউনূস আলোচনা শেষে বলেন, বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়, তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন যে, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার মূলত ভারতীয় গণমাধ্যম থেকেই আসছে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র অপর ধ ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে পুলিশ পাহাড়ায় যুবলীগ নেতার অনুমোদন বিহীন হাসপাতাল উদ্বোধন 

নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে  বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর প্রকাশ্যে  গুলিবর্ষণকারি বন্দরে  যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের মালিকানাধীন নবনির্মিত বহুতল ভবনে অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি অবশেষে পুলিশ পাহাড়ায় উদ্বোধন করা হয়েছে।  

সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ)র একাধিক  নেতৃবৃন্দ পরিচালনায় মদনপুর  স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে এ  হাসপাতালটি শুভ উদ্বোধন করা হয়।  

বন্দর উত্তরাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী যুবলীগ নেতা অহিদের অবৈধ অর্থে গড়ে তোলা এ বহুতল ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিতি বিষয়ে তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে  বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায়  শীর্ষ নেতারা এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে  উপস্থিত হননি।  

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন অঙ্গ সংগঠন স্বাচিপ নেতৃবৃন্দের পরিচালিত অনুমোদন বিহীন হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন, ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মফিজুর রহমান।  পুলিশ পাহাড়ায়  যুবলীগ নেতার ভবন উদ্বোধনী এ অনুষ্ঠান ঘিরে স্থানীয় লোকজন ও  তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের  মধ্যে বইছে সমালোচনার ঝড়। 


জানাগেছে,  নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের সহচর  ও ছাত্র-জনতা  হত্যা সহ  একাধিক মামলার আসামি  অহিদুজ্জামান অহিদের অবৈধ অর্থে নবনির্মিত মদনপুর স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক  মো. আজমল খাঁনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে  অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম আহম্মেদের সহধর্মিণী জোসনা বেগম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা , শিশু কিশোর ও নবজাতক রোগ বিশেষজ্ঞ সহকারী অধ্যাপক (শিশু বিভাগ) ডাঃ এম. করিম,  মেডিসিন, ডায়াবেটিস, লিভার এবং পরিপাকতন্ত্র রোগ বিশেষজ্ঞ স্বাচিপ নেতা  ডাঃ রাজ দত্ত, গাইনী বিশেষজ্ঞ ও সার্জন বন্ধ্যাত্ব, গাইনী ক্যান্সার রোগে বিশেষ অভিজ্ঞ,  স্বাচিপ নেতা  ডাঃ তাহমিনা খাঁন ও সমাজ সেবক বারেক মেম্বার  প্রমুখ।


স্থানীয় ও বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী  জানান, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় ক্ষমতাবলে  অহিদুজ্জামান অহিদ  মদনপুর এলাকায় গড়ে তোলে এক অস্ত্রধারি সন্ত্রাসী বাহিনী। অহিদের নেতৃত্বে  এ বাহিনীর  নিয়ন্ত্রণে  মদনপুর এলাকা সহ উত্তরাঞ্চলের  মদক, চাঁদাবাজি,  দখল, ছিনতাই সহ নানা অপকর্ম।

৫ আগস্টের পর বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণের সেল্টারে  যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ পুণবহালে। ইয়াবা দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানো পূর্বের ঘটনা পূনরায় ঘটনার আশঙ্কায়  আতঙ্কিত স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উপর হামলা ও ছাত্র হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদ অদৃশ্য ইশারায় বহাল তবিয়তে।  এ অদৃশ্য শক্তিতে পূর্বের ন্যায় ধামগড় পুলিশ ফাঁড়ি তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ন্ত্রিত বলে অভিযোগ উঠেছে।

বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতির হিরণ বলেন,  বিএনপি শীর্ষ নেতাদের নাম পদবি লিখে অহিদ নিজেই  দাওয়াত কার্ড ছাপিয়ে  ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।  তারপর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের  মধ্যে ক্ষোভ  তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।  এ  অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত  অতিথি বিষয়ে বিএনপির নেতারা কেউ অবগত ছিলেন না বলে তিনি জানিয়েছেন।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মাহাবুব জানান, মদনপুর স্পেশালাইজড হসপিটাল নামে হাসপাতালটির অনুমোদনের জন্য অনলাইনে আবেদন করা হয়েছে। পর্যায়ে ক্রমে অনুমোদনের আশাবাদী।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর ওসি তরিকুল ইসলাম বলেন, উদ্বোধন অনুষ্ঠানকে ঘিরে হাসপাতাল ভাংচুর হামলা হতে পারে এমন একটি তথ্যের ভিত্তিতে আপত্তিকর ঘটনা এড়াতে পাহাড়ায় ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন, ডাঃ এ এফ এম মশিউর রহমান বলেন, বন্দরের মদনপুর এলাকায় স্পেশালাইজ্ হসপিটাল লিমিটেড হাসপাতালের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তবে অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে কি না খোঁজ নিয়ে বলা যাবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ