ফতুল্লার দাপায় ৫ বছরের শিশুকে ধর্ষণের চেস্টার অভিযোগে আমানউল্লাহ (৫২) কে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয় জনতা। আটককৃত আমানউল্লাহ বাক প্রতিবন্ধী ও ফতুল্লা ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড বিএনপির দপ্তর সম্পাদক  হোসেনের শ্বশুড় বলে জানা যায়। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দিবাগত রাত ১১ দিকে ফতুল্লা মডেল থানার দাপা ইদ্রাকপুরস্থ খেজপাড়া এলাকায়।

জানা যায়, বুধবার রাত ১১ টার দিকে গ্রেফতারকৃত আমানউল্লাহ একই বাড়ীর ভাড়াটিয়ার ৫ বছরের শিশু কন্যা কে কৌশলে নিজ ঘরে ডেকে নিয়ে স্পর্শকাতর স্থানে হাত বুলায় এক পর্যায়ে মুখ চেপে ধর্ষণের চেস্টা করে। শিশুটি ডাক চিৎকার করলে পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়া পুরুষ-মহিলারা এগিয়ে এসে বিষয়টি দেখতে পেয়ে আমানউল্লাহ কে আটক করে গণপিটুনী দেয়।

ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমান উল্লার মেয়ের জামাই বিএনপি হোসেন ও অপর এক থানা  বিএনপি নেতা স্থানীয় ভাবে মিমাংসার চেস্টা করেন। কিন্ত এরই মধ্যে ঘটনার সংবাদ পৌছে যায় ফতুল্লা থানা পুলিশের নিকট। রাত একটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মধ্যস্থকারীরা সটকে পরেন। পুলিশ আমান উল্লাহ কে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার পরিদর্শক(তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান,  বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

নাগপুর দাঙ্গা নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন মমতা

নীরবতা ভেঙে অবশেষে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাগপুরে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিলেন তিনি। সোজা সাপটা ভাষায় জানিয়ে দিলেন, কোনো সহিংসতাকে তিনি সমর্থন করেন না; কখনো করেননি। সে হোক বাবরি মসজিদ ইস্যু অথবা আওরঙ্গজেবের সমাধির বিষয়।

ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাগপুরে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি সরানো নিয়ে হিন্দুত্বাবাদীদের বিক্ষোভের মধ্যে মুসলিমদের সঙ্গে দাঙ্গা বেঁধে যায়। ভারতের মুসলিমরা হিন্দুত্ববাদীদের টার্গেটে থাকলেও সাম্প্রতিক ভারতে এই ধরনের দাঙ্গার নজির নেই বললেই চলে। তবে এবার তা দেখা গেল নাগপুরে। আওরঙ্গজেবের কর্মকাণ্ড নিয়ে ঐতিহাসিক বিতর্ক রয়েছে।

নাগপুরের দাঙ্গার বিষয়ে সংবাদিকরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তার অবস্থান জানতে চান। তিনি ইংরেজিতে উত্তর দেন। প্রথমেই বলেন, এই প্রশ্ন আমাকে করবেন না। তবে মমতা সংক্ষেপে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “কোন সহিংসতাকেই সমর্থন করি না।” 

আরো পড়ুন:

বিজেপির আয়ু আর ২-৩ বছর: মমতা

অভিযোগ মমতার 
বাংলাদেশে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে

২০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সাংবাদিকের প্রশ্নের  জবাবে কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, “আমি কোন সহিংসতাকেই সমর্থন করি না। এমনকি আমরা যখন রাজ্যে বিরোধী চেয়ারে ছিলাম, তখনো কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাকে কখনোই সমর্থন করিনি।” 

এরপর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সেই সময়ে তার ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মমতা বলেন, “আমার মনে পড়ে যখন ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল, একটা বড় ধরনের দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। আমি নিজে তখন রাইটার্স বিল্ডিংয়ে (পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তৎকালীন সচিবালয়) যাই। তখন রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল। আমি তাদের প্রতি আবেদন জানাই, আপনারা যদি কোনো পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন, সেটা আমাকে জানান, সেক্ষেত্রে আমিও আপনাদের সাহায্য করতে পারি।” 

নাগপুরের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করায় মমতা পাল্টা জানতে চান, কেন তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “মহারাষ্ট্রে যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, তখন সেখানকার উদ্ধব ঠাকরে (শিবসেনা), শরদ পাওয়ারের (এনসিপি) মতো বিরোধী দলের নেতাদের এই প্রশ্ন করা উচিত। তারাই উত্তর দেবেন। কিন্তু আমি একটা কথাই বলতে চাই, সেটা হচ্ছে আমরা সবসময় একতার পক্ষে। কারণ ভারত এমন একটা দেশ যেখানে বৈচিত্রের মধ্যেই ঐক্য রয়েছে।”

মমতার অভিমত, “সংকটকালে ঝগড়া করা উচিত নয়। যখন কোনো সংকট তৈরি হয়, তখন সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হয়।”

মহারাষ্ট্রের ছত্রপতি সম্ভাজি নগর (সাবেক আওরঙ্গবাদ) থেকে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বজরং দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠন। এর মধ্যেই নাগপুরে গত ১৭ মার্চ সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। 

নাগপুরের মহাল, কোতোয়ালি, চিতনিস পার্ক, গণেশপেঠ ও শুক্রওয়ারি তালাওসহ বেশ কিছু এলাকায় সংঘর্ষর জেরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে এবং লাঠিপেটা করে। পাল্টা তাদের ওপর পাথর ছোড়া হয় এবং বেশ কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

ওই সহিংসতার ঘটনায় ১৫ জন পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ২০ জন আহত হন। আটক করা হয় প্রায় অর্ধশতাধিক দাঙ্গাকারীকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জারি করা হয় কারফিউ। সহিংসতায় মদদ দেওয়ার অভিযোগে ঘটনার পরদিন মঙ্গলবারই মূল অভিযুক্ত 'মাইনোরিটিস ডেমোক্রেটিক পার্টি'র (এমডিপি) ফাইম খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

নাগপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) লোহিত মাদানী বলেন, “আওরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভিডিও সম্পাদনা করে প্রচার করেছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি (ফাহিম খান)। শুধু তাই নয়, হিংসাত্মক ভিডিওগুলোকেও অতিরঞ্জিত করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যাতে দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে চারটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।” 

ঢাকা/সুচরিতা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ