ধর্ষণের ঘটনা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে: নাহিদ
Published: 20th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “পটুয়াখালীর দুমকিতে নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনায় দুইজন আসামির নাম শোনা গেছে। এক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দাবি জানাচ্ছি যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপর আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু এই ঘটনা নয়, এ ধরনের ঘটনা রোধ করার জন্য কঠোরতম শাস্তি ব্যবস্থা করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সরকার যে আইন পরিবর্তনের চিন্তা-ভাবনা করছে বা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা চাই যে সেটা যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়।”
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হল রুমে সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
এর আগে তিনি পটুয়াখালীর দুমকিতে ধর্ষণের শিকার হওয়া জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদের কন্যাকে হাসপাতালে দেখতে যান।
সংবাদ সম্মেলনে ডা.
ভুক্তভোগীর বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, “ভূক্তভোগী বলেছেন-‘আমি মেয়ে হিসেবে বিচার চাই না। আমি চাই বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ হিসেবে যেন আমার জন্য ন্যায় বিচার হয়।’ আমাদের মনে রাখতে হবে যদি ন্যায় বিচারে দেরি হয়, সেটা এক ধরনের অন্যায়ের পক্ষ নেওয়া। ন্যায় বিচার প্রত্যেকের মৌলিক অধিকার।”
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, “আইনগতভাবে এনসিপির পক্ষ থেকে যতটুকু সহযোগিতা দেওয়া প্রয়োজন বা দেওয়া দরকার আমাদের দলের পক্ষ থেকে দিব। যেন এই মামলার সুষ্ঠু বিচার হয়। যারা আসামি তারা যেন ন্যায় বিচার পায় অর্থাৎ তারা যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, সেটাও ন্যায় বিচারের মাধ্যমে হবে। সুতরাং এখানে আসামিপক্ষ ও বাদীপক্ষ সকলেই যেন ন্যায় বিচার পায়।”
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের আলগি গ্রামের জলিল মুন্সীর বাড়ির নির্জন বাগানে জুলাই ’২৪ আন্দোলনে ঢাকায় নিহত পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের শহীদ জসীম হাওলাদারের মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে সাকিব মুন্সী (১৯), সিফাত মুন্সী (২০) ও ইমরান মুন্সী (১৯)।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই পরের দিন বুধবার থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দেন। পুলিশ বিকাল ৩টায় তার মামলা গ্রহণ করে। গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত সাকিব মুন্সিকে।
পুলিশ জানায় অপর অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী ডাক্তারি পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঢাকা/ইমরান/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
১৯ দিনে প্রবাসী আয় দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
ঈদের আগে বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাতে শুরু করেছেন প্রবাসীরা। ফলে চলতি রমজান মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ মাসের প্রথম ১৯ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেল তথা বৈধ পথে দেশে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে ১৯ মার্চ এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে প্রবাসী আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন। প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে। ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটিও কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের চেয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। যেমন ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথম সপ্তাহে ৮১ কোটি এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ৮৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী আয় আসে ১৬৬ কোটি ডলার। পরের চার দিনে এসেছে ৫৯ কোটি ডলার।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৭৪ কোটি ডলার, যা এর আগের ২০২৩–২৪ অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।
সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় বছরের অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি আসে। গত বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পাঁচ দিনে ৪৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। তার মানে দিনে গড়ে ৯ কোটি ডলার এসেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে ১১ কোটি এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ে ১২ কোটি ডলার করে এসেছে। আর পরের চার দিনে গড়ে প্রায় ১৫ কোটি ডলার করে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
দেশে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ বছরের জানুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।
সব মিলিয়ে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার।
প্রবাসী আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশে ডলারের মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।