জাবির বাসে ছাত্রদল নেতা ইফতার বিতরণ
Published: 20th, March 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী বাসে নিয়মিত ইফতার বিতরণ করছেন শাখা ছাত্রদলে নেতা সাদিকুর রহমান। প্রতিদিন বিকেলে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের রোজা ভাঙার সুযোগ দিতে তিনি এ ইফতার বিতরণ করেন।
সাদিকুর রহমান শাখা ছাত্রদলের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ছয় নম্বর সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে নিয়মিত প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করছেন সাদিকুর রহমান। প্রতিদিন বিকেল ৩টায় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকাগামী বাসের স্টাফদের হাতে তিনি ইফতারের প্যাকেট পৌঁছে দেন।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় জাবিতে পথশিশুদের ঈদ উপহার
জুলাই অভ্যুত্থানে ‘হামলায় জড়িত’ জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাসপেন্ড
পরবর্তীতে ওই বাসগুলো ঢাকা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসের দিকে ফিরে আসে। আসার পথে ইফতারের সময় হলে স্টাফরা ইফতারের প্যাকেটগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে বণ্ঠন করে দেন।
ইফতার গ্রহণ করা এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা অনেকেই প্রতিদিন কেউ না কেউ এ সমস্যার মুখোমুখি হই। বাসে বসে ইফতারের সময় চলে যায়, কিন্তু খাওয়ার সুযোগ হয় না। সাদিক ভাইয়ের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”
আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, রমজান মানে সহানুভূতি ও একে অপরের পাশে দাঁড়ানো। সাদিক ভাইয়ের এ উদ্যোগ তারই প্রতিফলন। তার এই উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাদিকুর রহমান বলেন, “কয়েকদিন আগে বঙ্গবাজার থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। ফেরার পথে ইফতারের সময় হলে আমার সঙ্গে কিছু না থাকায় কিছু খেতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে যে, এভাবে অনেক শিক্ষার্থীই হয়তো প্রতিদিন ইফতার করতে পারছে না। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে ইফতার বিতরণ করব।”
তিনি বলেন, “যেহেতু অফিসিয়ালি ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাই আজ থেকে দুই সপ্তাহ থেকে চলমান এ ইফতার বিতরণ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেছি। ভবিষ্যতেও এ রকম জনসেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো.
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ ক র রহম ন ইফত র র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিমা মাত্র
বাবেলের অধিবাসীরা যখন হজরত ইবরাহিমের (আ.) কথা কর্ণপাত করল না, শক্ত যুক্তিও মেনে নিতে রাজি হলো না, তখন তিনি দাওয়াত দেওয়ার ভিন্ন একটি কৌশল অবলম্বন করলেন। তাদের মন্দিরে অনেকগুলো কাঠের দেবদেবী ছিল, এর মধ্যে একটি ছিল প্রধান দেবতা। তিনি পরিকল্পনা করলেন তার জাতিকে দেখাবেন এই প্রতিমাগুলো কত দুর্বল—নিজের শরীর থেকে একটি মাছি তাড়াবারও শক্তি এদের নেই।
একদিন বাবেলে ধর্মীয় মেলা হবে, লোকজন ইবরাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল। ইবরাহিম (আ.) আকাশের তারকার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আমি অসুস্থ।’ তিনি ঠিক মিথ্যা বলেননি, তার জাতির কুফরি কাজকর্মে তিনি আত্মিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারা তার কথা বিশ্বাস করে। (সুরা সফফাত, আয়াত: ৮৮-৯০) ইবরাহিম (আ.) আস্তে আস্তে বললেন, ‘আল্লাহর কসম, তোমরা চলে যাওয়ার পর আমি অবশ্যই তোমাদের প্রতিমাগুলোর কায়দা করব।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৫৭)
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব০৪ মার্চ ২০২৫এরপর তারা যখন চলে যায়, তিনি চুপি চুপি প্রতিমাগুলোর কাছে গেলেন। যাদের সামনে ছিল থরেথরে সাজানো ফলমূল আর সুস্বাদু খাবার। তিনি বললেন, ‘তোমরা কি খাবে না? তোমাদের কী হয়েছে, কথা বলছো না কেন?’ (সুরা সফফাত, আয়াত: ৯১-৯৩) তিনি সজোরে মূর্তিগুলোর ওপর আঘাত হানলেন। কিন্তু বড় মূর্তিটাকে কিছু করলেন না, যেন ওটার ওপর সব দোষ চাপানো যায়।
লোকজন ধর্মমেলা থেকে ফিরে যখন মন্দিরের এই হাল দেখল, রেগেমেগে একদম বেহাল হয়ে হয়ে গেল। তারা বলল, ‘কে আমাদের দেবদেবীর এই অবস্থা করল? সে নিশ্চয় সীমালংঘনকারী। কেউ কেউ বলল, এক যুবককে দেখেছি এদের সমালোচনা করতে, তার নাম ইবরাহিম। তারা বলল, তাকে জনতার সামনে উপস্থিত করো, যেন তারা তাকে দেখতে পারে।’
ইবরাহিমকে (আ.) উপস্থিত করার পর তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, ‘তুমিই কি আমাদের দেবদেবীদের এই হাল করেছ? ইবরাহিম (আ.) বললেন, ওই বড় দেবতাটাই এসব করেছে, ওটাকে জিজ্ঞেস করো, যদি কথা বলতে পারে!’
এ কথা শুনে তারা চিন্তায় পড়ে গেল। তারা একে অপরকে বলল, তোমরা দেবদেবীদের অরক্ষিত রেখে গেছ, তোমরাই বরং সীমালঙ্ঘনকারী। তারপর লজ্জায় তাদের মাথানত হয়ে গেল। তারা ইবরাহিমকে (আ.) বলল, ‘তুমি তো ভালো করেই জানো এরা কথা বলতে পারে না।’
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইবরাহিম (আ.) এই মন্তব্য শোনারই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি বললেন, ‘তবে কি তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করো, যা তোমাদের কোনো উপকার করতে পারে না এবং কোনো ক্ষতিও করতে পারে না? ধিক তোমাদের এবং আল্লাহর পরিবর্তে তোমরা যাদের ইবাদত কর তাদের। এরপরও কি তোমরা বুঝবে না?’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত ৫৯-৬৭)
মূর্তিপূজার অসারতার এমন স্পষ্ট প্রমাণের পর বাবেলের অধিবাসীদের উচিত ছিল এক আল্লাহয় বিশ্বাস করা, হজরত ইবরাহিমকে (আ.) নবী বলে মেনে নেওয়া। কিন্তু তারা তা না করে ফন্দি আঁটতে থাকে কীভাবে মূর্তি ভাঙার প্রতিশোধ নেওয়া যায়, কীভাবে তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া যায়।
আল্লাহর শরিয়ত কোনো প্রাণীকেই জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার অনুমতি দেয় না, আর মানুষ তো সবচেয়ে সম্মানিত প্রাণী, তার বেলায় তো আরও আগে না। (মিশকাতুল মাসাবিহ, হাদিস: ৩,৫৪২) কিন্তু কাফেরদের নীতিতে ইনসাফ নাই, মানবতা নাই, আছে কেবল পাশবিকতার জয়গান। আর তাই বাবেলের মূর্তিপূজারীরা সিদ্ধান্ত নেয়—এই যুবককে নিরস্ত করার একটাই উপায় আছে, আর তা হলো জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা।
আরও পড়ুনআল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন নবী সোলায়মান (আ.) ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫