জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী বাসে নিয়মিত ইফতার বিতরণ করছেন শাখা ছাত্রদলে নেতা সাদিকুর রহমান। প্রতিদিন বিকেলে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে শিক্ষার্থীদের রোজা ভাঙার সুযোগ দিতে তিনি এ ইফতার বিতরণ করেন।

সাদিকুর রহমান শাখা ছাত্রদলের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির ছয় নম্বর সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী। 

জানা গেছে, দুই সপ্তাহ ধরে নিয়মিত প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করছেন সাদিকুর রহমান। প্রতিদিন বিকেল ৩টায় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকাগামী বাসের স্টাফদের হাতে তিনি ইফতারের প্যাকেট পৌঁছে দেন।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের টিফিনের টাকায় জাবিতে পথশিশুদের ঈদ উপহার

জুলাই অভ্যুত্থানে ‘হামলায় জড়িত’ জাবির ২৯৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী সাসপেন্ড

পরবর্তীতে ওই বাসগুলো ঢাকা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে পুনরায় ক্যাম্পাসের দিকে ফিরে আসে। আসার পথে ইফতারের সময় হলে স্টাফরা ইফতারের প্যাকেটগুলো শিক্ষার্থীদের মাঝে বণ্ঠন করে দেন।

ইফতার গ্রহণ করা এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমরা অনেকেই প্রতিদিন কেউ না কেউ এ সমস্যার মুখোমুখি হই। বাসে বসে ইফতারের সময় চলে যায়, কিন্তু খাওয়ার সুযোগ হয় না। সাদিক ভাইয়ের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”

আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, রমজান মানে সহানুভূতি ও একে অপরের পাশে দাঁড়ানো। সাদিক ভাইয়ের এ উদ্যোগ তারই প্রতিফলন। তার এই উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে সাদিকুর রহমান বলেন, “কয়েকদিন আগে বঙ্গবাজার থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার বাসে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। ফেরার পথে ইফতারের সময় হলে আমার সঙ্গে কিছু না থাকায় কিছু খেতে পারিনি। বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে যে, এভাবে অনেক শিক্ষার্থীই হয়তো প্রতিদিন ইফতার করতে পারছে না। তখনই সিদ্ধান্ত নিই, প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের জন্য বাসে ইফতার বিতরণ করব।”

তিনি বলেন, “যেহেতু অফিসিয়ালি ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, তাই আজ থেকে দুই সপ্তাহ থেকে চলমান এ ইফতার বিতরণ কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেছি। ভবিষ্যতেও এ রকম জনসেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো.

ইনশাআল্লাহ।”

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স দ ক র রহম ন ইফত র র

এছাড়াও পড়ুন:

লিবিয়ায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মাদারীপুরের এক যুবকের মৃত্যু

ইতালিতে যেতে চেয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ার বন্দিশালায় নির্যাতনের শিকার হয়ে মাদারীপুরের সজিব সরদার (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) মাদারীপুরের শিবচরে সজিব সরদারের বাড়িতে মৃত্যুর খবর পৌঁছালে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে। আগের দিন (বুধবার) রাতে পরিবারের সাথে শেষ কথা হয় তার। 

নিহত সজিব শিবচর উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের চান মিয়া সরদারের ছেলে।

পরিবার জানায়, ইতালি যাওয়ার জন্য চারমাস আগে বাড়ি ছাড়েন সজিব। স্থানীয় দালালের মাধ্যমে প্রথমে লিবিয়া পৌঁছান তিনি। লিবিয়া যাওয়ার পরই দালাল চক্রের হাত বদল হয়। বন্দী হয় মাফিয়াদের হাতে। এরপর থেকেই চলে নির্যাতন। নির্যাতনের ভিডিও বাড়িতে পাঠিয়ে আদায় করা হয় মোটা অংকের টাকা! এক পর্যায়ে সজিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লিবিয়াতে থাকা আরেক দালালের তত্ত্বাবধানে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বৃহস্পতিবার মারা যায়।

নিহতের স্বজনেরা জানান, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া এলাকার দালাল বোরহান বেপারীর মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকা চুক্তিতে ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়া নেয়। সেখান থেকে সরাসরি ইতালি নেওয়ার কথা বলে মাফিয়াদের কাছে বিক্রি করে দেয়। দুই দফা বিক্রি করে সজিবকে। মারধর করে দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা আদায় করে দালাল চক্র। বুধবার সজিবের অবস্থা খারাপ দেখে মাফিয়ারা রাস্তায় ফেলে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে লিবিয়ায় থাকা পরিচিত কয়েকজন সজিবকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসে। সেখান থেকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।

নিহত সজিবের বাবা চান মিয়া সরদার বলেন, “আমার ছেলেকে দালাল বোরহান ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়া নিয়ে যায়। সেখানে বিক্রি করে দেয়। চার মাস আটকে রেখে মারধর করে। শিকল দিয়ে বেঁধে রাখে। মারতে মারতে আমার ছেলেটা গতকাল মরে গেছে।”

নিহত সজিবের বোন শামীমা আক্তার বলেন, “দফায় দফায় ৪৬ লাখ টাকা দিয়েও ভাইকে বাঁচাতে পারলাম না। জমি-জমা বিক্রি করে দিছে ওর জন্য। সরকারের কাছে আমার ভাইয়ের লাশ যেন বাড়ি আসে এই দাবি জানাই। আর দালাল বোরহানের ফাঁসি চাই।”

শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, “বিষয়টি মর্মান্তিক। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। মরদেহ আনার বিষয়ে প্রয়োজনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/বেলাল/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ