সিলেটে এক ঠিকাদারকে জিম্মি করে ৮৭ কোটি টাকার কাজ কবজায় নিতে চেষ্টার অভিযোগে আওয়ামী লীগের এক নেতাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে নগরের সুবিদবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি করেন। তিনি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রথম শ্রেণির একজন ঠিকাদার।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ হোসেনকে। এ ছাড়া তাহিরপুরের আনোয়ারপুর গ্রামের জেনসন দাস (২৬), সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকার ক্রিসটাল রোজ হোটেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিশু দাস (৫০), সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ (৫৫) ও সিলেট নগরের মুন্সিপাড়া এলাকার জয়দেব পার্থকে (৫৫) আসামি করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও তিন থেকে চারজনকে আসামি করা হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে বলা হয়, শফিকুল বিভিন্ন সময় সিলেট ও সুনামগঞ্জে সড়কে কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারের কাজ করে আসছেন। গত বছরের ৩০ এপ্রিল সিলেট সড়ক জোনের প্রকাশ্যে দরপত্রে অংশ নিয়ে তিনি সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে একটি কাজ পান। এ সময় আজাদ হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক ওই কাজের অংশীদার হিসেবে রাখতে তাঁকে চাপ দেন। অন্যথায় বড় ধরনের ক্ষতি করবেন বলেও হুমকি দেন। পরে আজাদসহ বিবাদীরা শফিকুলকে সিলেট সদর আদালতে আসার জন্য বলেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, শফিকুল সরল বিশ্বাসে আদালতপাড়ায় এলে জোরপূর্বক তাঁর কাছ থেকে বিবাদীরা ভয়ভীতি দেখিয়ে পাঁচটি নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে ব্যবসায়িক অংশীদার চুক্তিনামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর শফিকুল চূড়ান্ত কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারির কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে বিবাদীরা শফিকুলের কাজের অংশের টাকা তাঁদের দিতে চাপ দেন।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আজাদ তাঁর মুঠোফোনে শফিকুলকে কল করে সিলেট নগরের আম্বরখানা ইলেকট্রিক সাপ্লাই এলাকার ক্রিস্টাল রোজ হোটেলে আসতে বলেন। শফিকুল দুপুর ১২টার দিকে সেই হোটেলে গেলে বিবাদীরা তিনটি নন–জুডিশিয়াল চুক্তিনামায় তাঁকে স্বাক্ষর করার জন্য বলেন। তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে তাঁকে মারধরের পাশাপাশি অপহরণের চেষ্টা চালায়। এ সময় শফিকুলের চিৎকারে আশপাশের মানুষ ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করেন বলে এজাহারে দাবি করা হয়। ওই সময় বিবাদীরা শফিকুলকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় বলে উল্লেখ করা হয় এজাহারে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আজাদ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়। বাদী শফিকুল ইসলাম জানান, সুনামগঞ্জ থেকে বিশ্বম্ভরপুর সড়কের রাস্তা, ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণে প্রায় ৮৭ কোটি টাকার একটি কাজ তিনি পেয়েছেন। ওই কাজের অংশীদার হওয়ার জন্যই আজাদ এমনটি করেছেন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

জিয়াউল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ এল ক র নগর র

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রয়লার মুরগির কেজি ২০০ টাকা ছাড়াল

সবজির বাজারে ক্রেতার স্বস্তি থাকলেও, দুঃসংবাদ রয়েছে মুরগির বাজারে। গত এক সপ্তাহে কেজিতে সর্বোচ্চ ২০ টাকা দর বেড়েছে মুরগির। ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদা বাড়ার কারণে দর বাড়ছে। একই সঙ্গে আগের মতোই চড়া দর দেখা গেছে চালের বাজারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার কারওয়ান বাজার, কলমিলতা বাজার ও তেজকুনিপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। আর সোনালি জাতের মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা দরে। সপ্তাহ খানেক ব্রয়লারের কেজি ছিল ১৯০ টাকার মতো। সে হিসেবে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে কেজিতে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে সোনালি জাতের মুরগি কেনা গেছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। 

দর বাড়ার কারণ হিসেবে কারওয়ান বাজারের নুরজাহান চিকেন ব্রয়লার হাউসের বিক্রয়কর্মী মো. নবী বলেন, প্রতি বছর রোজার শেষদিকে মুরগির দর বেড়ে যায়। তাছাড়া এখন চাহিদা বেড়েছে। এ জন্য দাম বাড়তি। তিনি বলেন, প্রতিদিনই একটু একটু করে দর বাড়ছে মুরগির। এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাবে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকায়। তবে ডিমের দাম কমতির দিকে। প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। মাসখানেক ধরেই এ দরের আশপাশে রয়েছে ডিম।

সবজির বাজারে এখনও স্বস্তি পাচ্ছেন ক্রেতা। উচ্ছে এবং ঢ্যাঁড়শের মতো দু-তিনটি ছাড়া বেশির ভাগ সবজির দর কম। মোটামুটি ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে বেশির ভাগ সবজি। ঢ্যাঁড়শ ও উচ্ছের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর দর এখন তলানিতে। প্রতি কেজি আলু কেনা যাচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকার মধ্যে। 

পেঁয়াজের দরও কমছে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। রসুনের দরে পরিবর্তন নেই। আগের মতোই আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০ থেকে ২১০ এবং দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অস্বাভাবিক দর দেখা গেছে এলাচের। খুচরা ব্যবসায়ীরা মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি করছেন ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা দরে। 

এদিকে চালের বাজারে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। গত সপ্তাহের মতোই সরু চাল ৭২ থেকে ৮৫, মাঝারি চাল ৫৮ থেকে ৬৫ এবং মোটা চাল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ভোজ্যতেলের বাজারে বোতলের আকাল এখনও আছে। খোলা সয়াবিন ও পামওয়েলের সরবরাহে ঘাটতি দেখা যায়নি। পাঁচ লিটারের বোতলের সরবরাহ কিছুটা কম রয়েছে। দু্ই-তিন মাস ধরে বোতলজাত তেলের সরবরাহ ঘাটতি নিয়েই চলছে বাজার। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ