চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সাবেক এমপি আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে কারাগারে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুদক। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনফারেন্স রুমে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম। প্রায় ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদ কার্যক্রম চলে। 

দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, আইআইইউসি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান নদভীর নেতৃত্বে তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরীসহ অন্যরা সম্মানির নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। এ ঘটনায় নদভীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অনুসন্ধান কার্যক্রম শেষে সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড চেয়ারম্যান নদভী ও অন্যদের বিরুদ্ধে সম্মানীর নামে ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা নিয়ে সমকাল একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তারপর দুদক এ অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২০২১ সালে বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান হয়েই নদভী একটি বলয় তৈরি করেন। আইআইইউসি টাওয়ার থেকে সম্মানীর নামে নেজামউদ্দিন নদভী বিধিবহির্ভূতভাবে একাই প্রতি মাসে ১০ লাখ ৯ হাজার টাকা সম্মানি নিতেন। এভাবে তার স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা চৌধুরী ৩ লাখ ৩৭ হাজার, প্রফেসর ড.

কাজী দ্বীন মুহাম্মদ ৬ লাখ ৩০ হাজার, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ৪৫ হাজার, এসিএফডি পরিচালক আফজাল আহমদ ৪৫ হাজার, ড. মুহাম্মদ মাহী উদ্দীন ৪৫ হাজারসহ অন্যরা প্রতি মাসে সম্মানির নামে মোটা অংকের অর্থ পকেটে পুড়েছেন। সম্মানীর নামে আইআইইউসি টাওয়ার ব্যবস্থাপনা কমিটির ১৬ জন সদস্য তিন বছরে ১০ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। দুদক এ ঘটনার অনুসন্ধান করছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ ১০ ক ট ন নদভ

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদ দেওয়ায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা, দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে

কুমিল্লার চান্দিনায় চুরির অপবাদ দেওয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার এক চালক শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরের সরকারি হাসপাতালসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মো. সবুজ নামের ওই চালককে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, আগুনে সুবজের শরীরের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সবুজ চান্দিনা উপজেলার বাড়েরা ইউনিয়নের গড়ামারা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে চান্দিনা উপজেলা সদরের বেলাশহর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চান্দিনা সদরের হাসপাতাল সড়কের ইউনুছ মিয়ার অটোরিকশা গ্যারেজ ভাড়া নিয়ে সবুজসহ তিনজন ওই গ্যারেজে তাঁদের অটোরিকশা রাখেন। পালাক্রমে তাঁরা তিনজন পাহারাও দেন। প্রায় চার মাস আগে এক রাতে পাহারার দায়িত্ব ছিলেন সবুজ। ওই দিন রাত আনুমানিক দুইটার দিকে গ্যারেজে তালা দিয়ে সবুজ প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যান। ওই সময় চোরচক্র দুটি অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ওই ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মানিক নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। সেদিন রাতেই পুলিশ মানিককে ছেড়ে দেয়। পরে স্থানীয় কয়েকজন মাতবর সবুজকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। কিন্তু সবুজ জানান, তিনি ওই রায় মানেন না এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর নেই।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজন মাতবরের প্ররোচনায় সালাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবুজকে আটক করে তাঁর অটোরিকশা নিয়ে যান। এ সময় তাঁকে চোর আখ্যা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে চাপ দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সে প্রকাশ্যে শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

সুবজের স্ত্রী খুশি আক্তার বলেন, ‘মাতবররা চোর ধরে ছেড়ে দিছে আর আমার স্বামীরে চুরির অপবাদ দিয়ে জরিমানা করেছে। আমার স্বামী চোর আখ্যা দেওয়ার এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। গরিবের জন্য আইন নাই, বিচার নাই। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গতকাল রাতে চান্দিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাবেদ উল ইসলাম বলেন, ‘অটোরিকশা চুরির ঘটনায় সময় মানিক, সাইফুল ও নাজমুল নামের তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা হয়। ওই চুরির ঘটনায় সবুজকে দায়ী করে চাপ সৃষ্টি করলে সে অপমান সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে পেট্রল ঢেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জেনেছি। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ