বাজেট হবে ব্যবসা বান্ধব: অর্থ উপদেষ্টা
Published: 20th, March 2025 GMT
ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশে এখনও ডলার সংকট রয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেশি। খেলাপি ঋণও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা নানা দিক থেকে চাপের মধ্যে রয়েছেন। আর্থিক খাতের সংকট তো রয়েছেই। নতুন কোনো বিনিয়োগ করা যাচ্ছে না। এরই মধ্যে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। অথচ আমাদের সামগ্রিক প্রস্তুতি দুর্বল।
এমন পরিস্থিতি নতুন অর্থ বছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড.
রীতি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাজেট পূর্ব এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন অর্থ উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটা ব্যবসা-বাণিজ্য বান্ধব বাজেট দেওয়ার চেষ্ট করছি। যেন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ে আমরা সে রকম উদ্যোগ নেব। কিছু কিছু জায়গায় অনলাইন প্রক্রিয়ার ঘাটতি আছে। আমরা সেসব জায়গাতেও এড্রেস করার চেষ্টা করছি। সামগ্রিকভাবে বাজেটটাকে আমরা ব্যবসা বান্ধব করার কথাই ভাবছি।
আগামী অর্থবছরের বাজেট হবে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বান্ধব। যাতে দেশের জিডিপি ও কর্মসংস্থান বাড়ানো যায় এমনটা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেছি। আমরা চাই ব্যবসা বান্ধব বাজেট। ব্যবসা উপযোগী কর নীতি। যাতে সব ধরনের বিনিয়োগ বাড়ানো যায়। জিডিপি ও কর্মসংস্থান যাতে বাড়ে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের মাধ্যমে সুপারিশ দিয়েছে। করের ব্যাপারে মতামত তুলে ধরেছে। কিছু কিছু খাতে সুবিধা কম আছে। সর্বশেষ যে বিষয়ে ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়েছে তা হলো কর কাঠামোর প্রক্রিয়া যেন অনলাইনে করা হয়। এছাড়া পেমেন্ট নিয়ে যে জটিলতা তা সমাধান চেয়েছে।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্টাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আজ যে আলোচনা তা হলো প্রাক-বাজেট। কিন্তু যা দেখলাম তা হলো আয়কর বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্পর্কিত ইস্যুর উপর শুনতে চেয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। অন্য ইস্যুগুলো তিনি শুনতে চাচ্ছিলেন না। ব্যাংকিংসহ অন্য খাতের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে উপদেষ্টার কার্যক্রম খুবই ইতিবাচক মনে হয়েছে। তিনি চান দেশটা এগিয়ে যাক। কিছু কিছু জায়গায় কর যাতে আহরণ করতে পারে এনবিআর। এনবিআরের কর আদায় যাতে বাড়ে তার জন্য কঠিন ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের জন্য যেটা চিন্তার বিষয় শিল্পে কিভাবে সক্ষমতা বাড়ানো যায়। এ বিষয় নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের কথা বলা হয়নি। তিনি এসব জায়গায় আলোচনা করতে চাচ্ছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংক সংক্রান্ত বিষয় ও আর্থিক সহায়তার বিষয়গুলো লিখিত আকারে চেয়েছেন উপদেষ্টা।
বিসিআই সভাপতি বলেন, এনবিআর গ্রোস মুনাফার ভিত্তিতে কিভাবে কর অ্যাসেসমেন্ট করে। এই কর ও শুল্ক কাঠামোতে আমাদের আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করা উচিত। সেটা কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে এনবিআর। বাংলাদেশের কর হিসাব যেভাবে করা হয় তা প্রক্রিয়া সঠিক নয়। দেশের পোশাক খাত ১ শতাংশ দিচ্ছে। যদিও এটা চূড়ান্ত হিসাব নিষ্পত্তি নয়। লোকসান হলেও ওই ১ শতাংশ দিচ্ছেন। দ্বৈতকরের কিছু বিষয় রয়ে গেছে। সে জায়গাগুলো এনবিআর সেটেল্ট করবে।
তিনি আরও বলেন, ক্ষুদ্র শিল্পকে আরও প্রতিযোগী করার জন্য এসএমই খাতের ভ্যাট আরও কমানো উচিত। ক্ষুদ্র শিল্পকে আটবছর মেয়াদী কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার উচিত আমরা মনে করি। এসব প্রস্তাব আমরা করেছি।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদা হাতেম বলেন, কর পদ্ধতি নিয়ে অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। এটার এবার একটা পরিবর্তন হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যান এমন আশ্বাস দিয়েছেন। এই পরিবর্তন হচ্ছে-যেমন এখন ১ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) নিচ্ছে। এটা চূড়ান্ত হিসাব নয়। আবার এই অর্থ পুরোপুরি সমন্বয় হচ্ছে না বা ফেরত দিচ্ছে না। এক কোটি টাকা এআইটি নিলেও ওই ব্যবসায়ী যখন ২০ লাখ টাকা করের রিটার্ন দাখিল করছে। তখন অগ্রিম আয়কর কেটে রাখলেও তা ফেরত দিচ্ছে না। এতে করের হার কত দাঁড়াচ্ছে তা সুনির্দিষ্ট নয়। এটা পরিবর্তন প্রয়োজন। যে আইন দ্বারা এটা করা হয়েছে ওই আইনটি সঠিক নয়।
তিনি বলেন, আয় করব কর দেব। কিন্তু এখন যা হচ্ছে মোট বিক্রির উপর কর নেওয়া হচ্ছে। বাস্তবে এটা যৌক্তিক নয়। কর এর বোঝা আর না বাড়িয়ে করজাল সম্প্রসারণ করতে হবে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, আসছে বাজেটে কর ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। কর্পোরেট কর অনলাইন করতে হবে। ইউনিফায়েড সিঙ্গেল ডিজিট ভ্যাট করতে হবে। গত ৩ বছর ধরে অর্থনীতি চাপের মধ্যে থাকায় ভালো ব্যবসায়ীরা ডিফল্ট হয়ে যাচ্ছে! এর থেকে পরিত্রাণ এর জন্য ন্যূনতম ৬ মাস এর মোরাটোরিয়াম পিরিয়ড দিতে হবে ও সহজ শর্তে ঋণ রেস্ট্রাক্টারিং করার নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিতে হবে।
এতে অন্যান্য চেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারাও বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসনাত/এনএইচ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস য় র র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্রসবার কাঁপিয়েও গোল পেলেন না মেসি, জিতল না মায়ামি
মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র করল ইন্টার মায়ামি। এবার শিকাগোর বিপক্ষে তাদের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছেন লিওনেল মেসিরা। ম্যাচে অবশ্য একাধিকবার গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মেসি।
ফ্রি–কিক থেকে দুবার মেসির শট কাঁপিয়ে দিয়েছিল ক্রসবারও। কিন্তু মেসির ভাগ্যে এদিন কোনো গোলই যে লেখা ছিল না। ফলে নিজেকে উজাড় করেও শেষ পর্যন্ত খালি হাতে ফিরতে হয়েছে আর্জেন্টিনার অধিনায়ককে, যা হতাশার কারণ হয়েছে মায়ামিরও।
শিকাগোর মাঠে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই গোল পেতে পারতেন মেসি। কিন্তু বক্সের বাইরে থেকে মেসির শট কোনোভাবে আঙুল লাগিয়ে ঠেকান শিকাগো গোলরক্ষক ক্রিস ব্রাডি।
আরও পড়ুনবিশ্রামের ফাঁকে ফাঁকে খেলাটাই এখন মেসির নিয়তি০৯ অক্টোবর ২০২৪কিন্তু কে জানত, মেসির হতাশা মোড়ানোর ম্যাচের সেটা ছিল শুরু। এরপর মেসি ও মায়ামির একের পর এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। একাধিকবার কাছাকাছি গিয়ে গোলবঞ্চিত থেকেছে স্বাগতিক শিকাগোও।
বল দখলের লড়াইয়ে মেসি