জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সরকারি একটি বিলে মাছ ধরা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় সরকারি একটি বিলের মাছ ধরা নিয়ে জেলা বিএনপির জলবায়ুবিষয়ক সম্পাদক ও মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল এবং মহাদান ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেনের (লিটন) মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আউয়ালের লোকজন ওই বিলে মাছ ধরতে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিল দেশী অস্ত্র। এ সময় ইসমাইলের লোকজন দেশী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেন। এর পর থেকে থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে মহড়া চলছে। এর মধ্যে সাবেক ইউপি সদস্য মো.

ওয়াদুদের বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশের সদস্য ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ব্যাপারে কথা বলতে আবদুল আউয়াল ও ইসমাইল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. চাঁন মিয়া মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, বিলের মাছ ধরা এবং আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আউয়াল ও ইসমাইলের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তিনি আশা করছেন, কোনো সংঘাত হবে না।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র আউয় ল

এছাড়াও পড়ুন:

১৯ দিনে প্রবাসী আয় দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে

ঈদের আগে বৈধ পথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় পাঠাতে শুরু করেছেন প্রবাসীরা। ফলে চলতি রমজান মাসে প্রবাসী আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ মাসের প্রথম ১৯ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেল তথা বৈধ পথে দেশে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। এর মধ্যে ১৯ মার্চ এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে প্রবাসী আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন। প্রবাসী আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে। ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটিও কমে এসেছে। ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া সর্বোচ্চ ১২৩ টাকার মধ্যেই প্রবাসী আয় কিনছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহের চেয়ে দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবাসী আয় বেশি এসেছে। যেমন ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথম সপ্তাহে ৮১ কোটি এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে ৮৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছে। প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসী আয় আসে ১৬৬ কোটি ডলার। পরের চার দিনে এসেছে ৫৯ কোটি ডলার।

২০২৪ সালের জুলাই থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ৭৪ কোটি ডলার, যা এর আগের ২০২৩–২৪ অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি।

সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাসী আয় বছরের অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি আসে। গত বছর পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পাঁচ দিনে ৪৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় এসেছিল। তার মানে দিনে গড়ে ৯ কোটি ডলার এসেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে ১১ কোটি এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ে ১২ কোটি ডলার করে এসেছে। আর পরের চার দিনে গড়ে প্রায় ১৫ কোটি ডলার করে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

দেশে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। এ বছরের জানুয়ারিতে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রবাসী আয় ৩ শতাংশ বেশি আসে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে প্রবাসীরা দেশে ১ হাজার ৮৪৯ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৪ শতাংশ বেশি। আগের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার।

প্রবাসী আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ, এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাসী আয় বাড়লে দেশে ডলারের মজুত দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ