বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানি করবে চীন। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন সম্প্রতি ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক বৈঠকে এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ থেকে আম, কাঁঠাল ও পেয়ারা আমদানি করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আগেই চীন সরকারকে অনুরোধ করেছিলেন। এখন চীন সরকার এই তিন ধরনের ফল আমদানি করতে খুবই আগ্রহী। এর মধ্য দিয়ে চীনে রপ্তানির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা দেশটিতে কাঁঠাল বৃহৎ পরিসরে রপ্তানি করতে পারব। আর চীনারা বাংলাদেশের আম পছন্দ করছেন। এর ফলে দেশটিতে বৃহৎ আকারে আম রপ্তানিরও সুযোগ তৈরি হয়েছে। আম রপ্তানির ক্ষেত্রে কিছু স্ট্যান্ডার্ড (মান) পরিপালন করতে হয়, সে ক্ষেত্রে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফও) আমাদের চার মিলিয়ন মার্কিন ডলারের কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।’

শফিকুল আলম বলেন, আশা করছি প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অনেক গভীর হবে।

উল্লেখ্য, প্রধান উপদেষ্টা ২৬ মার্চ চার দিনের জন্য চীন সফরে যাচ্ছেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রেস সচিব বলেন, ‘কুনমিংয়ের চারটি হাসপাতাল বাংলাদেশের জন্য ডেডিকেটেড করা হয়েছে এবং সেখানে বাংলাদেশের রোগীরা চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন, এটি ভালো খবর। তবে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা চাচ্ছেন চীনের হাসপাতাল চেইন বাংলাদেশে আসুক। সেটি হলে আমরা চীনের উন্নত মানের চিকিৎসা আমাদের দোর গোড়ায় পাব।’

শফিকুল আলম জানান, অধ্যাপক ইউনূস চীনের বড় বড় হেলথকেয়ার কোম্পানিকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন এবং তাঁর এবারের সফরে প্রধান ফোকাস (লক্ষ্য) থাকবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে যেন চীনা বিনিয়োগ আনা যায়।

ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনচীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায় সরকার: প্রেস সচিব১৬ মার্চ ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘তিনি আন্তর্জাতিক মানের আম্পায়ার হলে, আমিও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়’

‘অধিনায়ক, সতীর্থ, প্রতিপক্ষ এবং আম্পায়ারদের কর্তৃত্বকে সম্মান কর। স্বচ্ছতার সঙ্গে খেল। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে নাও।’ –ক্রিকেটারদের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের কোড অব কন্ডাক্টের অন্যতম অংশ এগুলো। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এ নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান। সাকিব আল হাসানের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারও বিশ্ব নিন্দনীয় কাজ করতে পেরেছিলেন আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে। ২০২১ সালে লাথি মেরে ভেঙে ছিলেন স্টাম্প। বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠার পরও মাত্র চার ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল মোহামেডানের সাবেক অধিনায়ককে। 

ক্রিকেট মাঠের অগ্রজ নেতিবাচক যে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন, অনুজরা তাই অনুসরণ করছেন। আম্পায়ারদের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এবারও আলোচনায় মোহামেডানের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। আন্তর্জাতিক এ ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে আইসিসির এলিট আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদি হয়েছেন। বিশ্বের কাছে নন্দিত এ আম্পায়ারকে নীতিজ্ঞান দিতেও ছাড়েননি। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হচ্ছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও মোহামেডানের অধিনায়ক হৃদয়। গতকাল শুনানি শেষে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা সুপারিশ করেন ম্যাচ রেফারি নিয়ামুর রশীদ রাহুল। 

শাস্তির শুনানিতে গিয়েও হৃদয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ রেফারির রাহুলের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগ। শাস্তির ধারা দেওয়া হলে রাহুলকে পড়ে শোনাতে বলেন তিনি। ম্যাচ রেফারি আপত্তি জানালে, মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন শিপন পড়ে শোনান। আংশিক চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে শাস্তি মেনে নেন হৃদয়। যদিও মোহামেডান চেষ্টা করছে এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করার। বিসিবি আম্পায়ার্স বিভাগকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে মোহামেডানের ম্যানেজার সাজ্জাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তাতে মোহামেডান অধিনায়ককে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ করা যায় না। অধিনায়ক নিয়মের ভেতরে থেকে প্রতিবাদ করতে পারেন।’ 

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচে আম্পায়াররা এমন কী করেছিলেন যে ক্রিকেটারদের বিতণ্ডায় জড়াতে হলো। আবাহনীর ব্যাটার মোহাম্মদ মিঠুনের এলবিডব্লিউ চাওয়া হলে প্রত্যাখ্যান করেন আন্তর্জাতিক আম্পায়ার তানভির আহমেদ। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত মেনে না নিয়ে বিতণ্ডায় জড়ান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। আম্পায়ার সৈকত প্রতিবাদ জানালে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ান অধিনায়ক হৃদয়। আবাহনীর আরেক ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমনকে এলবিডব্লিউ না দেওয়ায় দ্বিতীয়বার প্রতিবাদী হয় মোহামেডান। 

এই দুই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ফিল্ড আম্পায়াররা রিপোর্ট ফাইল করেন। ম্যাচ রেফারি রাহুল এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞা ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার সুপারিশ করেছিলেন। মোহামেডান ম্যানেজার সাজ্জাদের অনুরোধে জরিমানা বাদ দেওয়া হলেও এক ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ বহাল রয়েছে। 

মোহামেডান অধিনায়ক হৃদয় যে আম্পায়ার সৈকতের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন তা প্রকাশ পেল ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে, ‘আমি যদি ভুল করি স্বীকার করব। ভুলটা স্বীকার না করে আপনি যদি মনে করেন এটা ভুল না, তাহলে হয় না। আমরা তাঁকে সম্মান করি, তিনি আন্তর্জাতিক আম্পায়ার, আমরাও আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। আজকে যারা খেলেছে অধিকাংশ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়। এরকম বড় ম্যাচে একটা দুইটা ভুল সিদ্ধান্ত অনেক কিছু বড় একটা ব্যবধান তৈরি করে দিতে পারে। এটা যদি অন্যদিকে যায় তাহলে অবশ্যই আমি মুখ খুলব।’ 

আন্তর্জাতিক ম্যাচেও আম্পায়ারদের সঙ্গে অনুরূপ আচরণ করেন কিনা জানতে চাওয়া হলে হৃদয় বলেন, ‘শুধু খেলোয়াড়ের ওপর দোষ দিলে হবে না। আপনারা দেখেন আমাদের আম্পায়ারিং বিভাগের এক-দুইজন ছাড়া যে খুব ভালো করে এ রকম না। যখন জাস্টিফাই করবেন তখন আমার মনে হয় দুই দিক থেকে জাস্টিফাই করা উচিত।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ