‘নিরাপত্তা শঙ্কায়’ ঢাবিতে আরেফিন সিদ্দিকের দোয়া মাহফিল স্থগিত
Published: 20th, March 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল নিরাপত্তা শঙ্কায় স্থগিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এ আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল আয়োজন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন আরেফিন সিদ্দিকের শুভাকাঙ্ক্ষী শিক্ষকরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানালে স্থগিতের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ঢাবি ক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
ঢাবির বিজয় ৭১ হলের লিফটে ‘জয় বাংলা’
এ দেশের মুসলমানরা কালচারালি মাইনরিটি: আহমাদুল্লাহ
তিনি বলেন, “এ প্রোগ্রামটি আরেফিন সিদ্দিকের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা থেকেই আয়োজন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অনেকে বলছেন, এটি নীল দলের প্রোগ্রাম। কিন্তু এখানে আমরা কোনো প্লাটফর্মের ব্যানার ব্যবহার করিনি। আরেফিন সিদ্দিকের সঙ্গে যারা দীর্ঘদিন ছিলাম, তাদের আবেগ এবং শ্রদ্ধার জায়গা থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।”
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানিয়েছেন এই প্রোগ্রাম হলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এমনকি কোনো কোনো ছাত্র সংগঠন বা ছাত্ররা এতে বাঁধা দিতে পারে। পরে আমি এ বিষয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না, তাই এটি আমরা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, “বুধবার রাতে দুটি ছাত্র সংগঠন আমাকে ফোন দিয়ে এ প্রোগ্রাম নিয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানায়। শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেও এ প্রোগ্রাম নিয়ে কয়েকজন ক্ষোভ জানায়। পরে আমি এ বিষয়টি ক্লাবের সাধারণ সম্পাদককে জানালে রাত ১টার দিকে স্মরণসভা এবং দোয়া স্থগিত করার বার্তা পাই।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিককে ২০০৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষ করে আবারো গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ২০২০ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা থেকে অবসরে যান তিনি।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আর ফ ন স দ দ ক র
এছাড়াও পড়ুন:
ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’
নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।
একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’
অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।
‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।
আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।