পুঁজিবাজার উন্নয়নে গঠিত কমিটির প্রথম সভা
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) অধিকতর শক্তিশালীকরণ এবং পুঁজিবাজার উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির পরিচিতিমূলক এবং টোর অনুযায়ী পদ্ধতি প্রণয়ন সংক্রান্ত প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কমিটির সভাপতি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার পরিকল্পনা কমিশনে এই সভা হয়।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিএসইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী মুখপাত্র মো.
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজার উন্নয়নে সবাইকে কাজ করতে হবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
কারণ ছাড়াই বাড়ছে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারদর
সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকুল ইসলাম, কমিটির সদস্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিমা ও পুঁজিবাজার অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব ও কমিটির সদস্য সচিব বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ।
এছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নাজমা মোবারেক, বিএসইসির কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী এবং মো. আলী আকবর।
সভায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) শক্তিশালীকরণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ও দিক নিয়ে আলোচনা হয়। কার্যপরিধি অনুযায়ী কমিটির কাজের পদ্ধতি প্রণয়ন এবং পরবর্তী করণীয় সংক্রান্ত বিষয়ে পুঁজিবাজার উন্নয়নে গঠিত সভায় আলোচনা হয়।
গত ১৭ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এক সার্কুলারের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীকে সভাপতি করে ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করে। দেশের পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে অধিকতর শক্তিশালী করতে এবং সর্বোপরি দেশের পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য এই কমিটি কাজ করছে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসইস র কম ট র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটে ব্রোকারেজ হাউসের উৎসে কর কমানোর দাবি ডিবিএর
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর উৎসে করহার কমানোর দাবি জানিয়েছে ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সাথে সামঞ্জস্য রেখে এ উৎসে কর কর্তনের হার বিদ্যমান ০.০৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.০২০ শতাংশ করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে ডিবিএর পক্ষ থেকে এই সুপারিশ তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমরা উৎসে করকে আরো সহজীকরণ করার জন্য বলছি। আমরা উৎসে করের পরিবর্তন চাচ্ছি। করের হার আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যহারে বেশি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যেমন, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুর, হংকং-এর তুলনায় আমাদের দেশে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর উৎসে করের হার অনেক বেশি। বর্তমানে বাজারে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ায় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর আয়ও আশংকাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে এবং আয় না হলেও আয়কর দিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় এই কর হার কমানো সুপারিশ করছি আমরা।
তিনি আরো বলেন, ১ লাখ টাকায় আমাদের উৎসে কর দিতে হয় ৫০ টাকা। যেখানে ভারতে প্রতি এক লাখে উৎসে কর দিতে হয় ১০ রুপি। এ ছাড়া পাকিস্তানে ০.৬৫ রুপি, সিঙ্গাপুরে ০.৭৫ ডলার এবং হংক এ ৫.৬৫ ডলার দিচ্ছে।
ডিবিএ সভাপতি বলেন, সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর কমিশন ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান আয়ের উৎস। অত্যাধিক হারে কর আরোপ করার ফলে ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পক্ষে টিকে থাকা এবং পুঁজিবাজারে অবদান রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। কাজেই ব্রোকারেজ হাউজের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এবং পুঁজিবাজারকে সক্রিয় করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সিকিউরিটিজ লেনদেনের উপর বিদ্যমান কর হার যৌক্তিক কারণে হ্রাস করা একান্ত প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী করদাতাদের মূলধনী ক্ষতির সমন্বয় বা জের পরবর্তী বছরগুলোতে টানার অনুমতি নেই। লোকসানের সমন্বয় ও জের টানার অনুমতি না থাকার ফলে উভয় শ্রেণির বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়ে এবং বিনিয়োগে নিরুৎসায়ী হয়ে বাজার ত্যাগ করে। গত কয়েকবছর ধরে বাজারে মন্দা বিরাজ করায় অধিকাংশ বিনিয়োগকারী লোকসানের কবলে পড়ে চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে রয়েছে। এরূপ পরিস্থিতিতে লোকসানে থাকা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ধরে রাখতে এবং বাজারের স্থিতিশীলতা ও ধারাবাহিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান আয়কর আইন ২০২৩ এর নবম অধ্যায়, ধারা ৭০ এর (৩) এর সাথে বর্ধিত বিধান সংযোজনের সুপারিশ করছি।
সাইফুল ইসলাম বলেন, কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত, হ্রাসকৃত করহার বা ন্যূনতম কর প্রযোজ্য হয় এইরূপ কোন উৎসের বা খাতের ক্ষতির সমন্বয় বা জের টানা যাবে না। তবে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোন সিকিউরিটিজ অথবা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত মিউচুয়াল ফান্ড বা তহবিলের ইউনিট লেনদেনের মাধ্যমে মূলধনী ক্ষতির সমন্বয় বা জের টানা যাইবে।
তিনি বলেন, আমরা আশা করছি, সরকার আমাদের সুপারিশ সুবিবেচনায় নিয়ে আসন্ন বাজেটে এর বাস্তবায়ন করে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথ সুগম করবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জরিমানা ছাড়া আর কোন উন্নতি নাই। সত্যিকার অর্থে বিএসইসিতে কোন কাজ হচ্ছে না। বাজারে বিনিযোগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে। বড় পুঁজির বিনিয়োগ না হলে কখনই পুঁজিবাজার রান করবে না। বিএসইসিতে গত ৮ মাসে কোনো আইপিও পেন্ডিং নাই। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা নাই। এই বাজারে পণ্য সরবরাহ খুবই বাজে।
বিএসইসির টাস্কফোর্স নিয়ে ডিবিএ নেতারা বলেন, যাদের নিয়ে এই টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে, তারা বাস্তবে প্রকৃত অর্থে অভিজ্ঞতাহীন। এরা আবার করেছে ফোকাস গ্রুপ। যারা ব্রোকার কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই মতামত দিয়েছে। অথচ তাদের যোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
তারা বলেন, সমন্বয়হীন আয়কর দুনিয়ার কোথাও নাই। মুনাফা করলে সরকার আয়কর পাওয়ার অধিকারী। আবার লোকসান করলে আয়কর না দেওয়া ব্যবসায়ীর অধিকার। কিন্তু ১৫ বছর ধরে লোকসান করেও আয়কর দিয়ে আসছে ব্রোকাররা। এটা এক প্রকার জুলুম।
বক্তারা আরো বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেট দৈন্যদশা চলছে। ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারী থেকে ১২ লাখে নেমেছে। সক্রিয় বিও অ্যাকাউন্ট ৫ লাখও নেই। অনেকে বলেন, বাজারে ভলিউম বাড়ে না, ভালো কোম্পানি না থাকলে ভলিউম বাড়বে না। গত ১০ বছরে গ্রোথ কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসে নাই। যে আইপিওগুলো এসেছে সবই দুর্বল কোম্পানির। আজ বাজারে টার্নওভার নাই, ভলিউম নাই, সব জায়গায় রিফর্ম দরকার আছে। তবে সবার আগে বাজারে টার্নওভার লাগবে, ৪০০-৫০০ কোটি টাকা টার্নওভারে বাজার ঘুরপাক খাচ্ছে এটা দিয়ে বাজার চলবে না।
ঢাকা/এনটি/এনএইচ