কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস, শব-ই-কদর, জুমাতুল বিদা ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আগামী ২৩ মার্চ থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ২১ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ঈদের ছুটিকালীন সময়ের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা প্রদান করেছে প্রক্টরিয়াল বডি। 

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মোঃ  আবদুল হাকিম স্বাক্ষরিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ছুটি চলাকালে বহিরাগত কোনো মোটরসাইকেল/গাড়ি/যানবাহন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না; বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড প্রদর্শন করতে হবে; ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ।

আরো পড়ুন:

মামলা থাকায় কুবির ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে সাময়িক বরখাস্ত

গাজায় হামলার প্রতিবাদে ইবি ও কুবিতে বিক্ষোভ

বাকি নির্দেশনাগুলো হলো- প্রশাসনিক ভবন ও একাডেমিক ভবনে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিষেধ, তবে বিশেষ প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সভাপতির অনুমতি সাপেক্ষে এন্ট্রি খাতায় স্বাক্ষর করে প্রবেশ করা যেতে পারে; ছাত্রী হলসমূহের গেট সন্ধ্যা ৭টায় বন্ধ হবে, অতি প্রয়োজনে হল প্রাধ্যক্ষের অনুমোদনক্রমে প্রবেশ ও বাহির হতে পারবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিম বলেন, “আমাদের অফিসিয়াল বন্ধ ২৬ তারিখ থেকে। এটা আমরা আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি থেকে দিয়েছি। গতকাল (বুধবার) মিটিং হয়েছে এবং তা থেকে এই নির্দেশনা দিয়েছি।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব শ

এছাড়াও পড়ুন:

সুখ কমেছে বাংলাদেশের

সুকুমার রায়ের ‘রাজার অসুখ’ গল্পে নিঃস্ব ফকিরের সুখের অন্ত ছিল না। ওদিকে ধনরত্নের ভান্ডার নিয়েও রাজামশাইয়ের অসুখ সারে না! গবেষকরা এই সুখের তত্ত্ব-তালাশ করে আসছেন বহু বছর ধরে। 

গতকালই ‘ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস ২০২৫’ প্রকাশিত হয়েছে; যেখানে ১৪৭ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৪ নম্বরে, গত বছর যা ছিল ১৪৩ দেশের ভিড়ে ১২৯তম। 

তা কীভাবে মাপা হয় এই দেশগত সুখকে? জিডিপিকে জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়, তার সঙ্গে নেওয়া হয় সামাজিক সহায়তা, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার গড়সীমা, সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা, উদারতা আর দুর্নীতির অনুপস্থিতির হিসাব-নিকাশকে। এই সবকিছু মন্থন করেই ‘সুখ’ নামক যৌগিক পদার্থটা আবিষ্কার করেছে গ্যালপ, দ্য অক্সফোর্ড ওয়েলবিইং রিসার্চ সেন্টার ও জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন)।

তা এসবের কতটা ‘ভালো থাকা’ আর কতটা যথার্থ ‘সুখ’– তা নিয়ে কথাকাটাকাটি চলতেই পারে। সুখের সঙ্গে রোজগারের লম্বা ফর্দ দিয়ে অর্থনীতিবিদরা হয়তো দড়ি টানাটানি করবেন; কিন্তু সবকিছুই তো পকেটের স্বাস্থ্যের সঙ্গে মেলানো যায় না। 

তা তাদের সেই পর্যবেক্ষণে বিশ্বকুলে সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। তার পিছে পিছে রয়েছে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইডেন, নেদারল্যান্ডস, কোস্টারিকা, নরওয়ে, ইসরায়েল, লুক্সেমবার্গ, মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, লিথুয়ানিয়া, অস্ট্রিয়ার মতো দেশ।

সবচেয়ে অসুখী দেশের তালিকায় প্রথমে আছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের চেয়ে অসুখী আছে আরও ১৩টি দেশ। যার মধ্যে সিয়েরা লিয়ন, মালাউই, জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা, কঙ্গো, ইয়েমেনের মতো দেশ। এসব দেশে গ্যালপ বিশ্ব জরিপের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। যেখানে তারা অংশগ্রহণকারী মানুষের আগের তিন বছর (২০২২ থেকে ২০২৪) পর্যন্ত তাদের জীবন কেমন কেটেছে, তা মূল্যায়ন করেছে।
দেখে নেওয়া যাক এ তালিকায় আমাদের আশপাশের মানুষেরাই বা কেমন আছেন। ভারতের অবস্থান ১১৮, পাকিস্তানের ১০৯, মিয়ানমারের ১২৬, শ্রীলঙ্কার ১৩৩। সেই হিসাবে নেপালিরা কিন্তু যথেষ্ট সুখী; তারা আছেন ৯২তম অবস্থানে।

এটা ঠিক যে, ভরা পেটে দিন শেষে ভালোবাসায় ঘেরা ঘরে কোমল শয়নেই সুখ খুঁজে পান অনেকে। আবার এটাও ঠিক যে,
ভোগবাদের চোরাস্ত্রোত্রে প্রাচুর্যের স্পর্ধাতেই সেই সুখ খুঁজে নিই কেউ কেউ। ওই যে রুনা লায়লার গাওয়া সেই গানটি– সুখ তুমি কি বড় জানতে ইচ্ছে করে...। এর উত্তর বোধ হয় আজও খুঁজে চলেছেন অনেকে। মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসার বন্ধন, পাশে থাকার সহমর্মিতা– এসব সুসম্পর্কের মধ্যেই তো লুকিয়ে থাকে সুখী জীবনের মন্ত্র। তবে সুখের সঙ্গে অর্থের গাণিতিক সম্পর্ক নিয়ে একটা সাড়াজাগানো গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল বছর পনেরো আগে। ড্যানিয়েল ক্যানেম্যান আর অ্যাঙ্গাস ডিটন আমেরিকার পরিপ্রেক্ষিতে দেখান, আয়ের সঙ্গে সুখ বাড়ে বটে; কিন্তু আয় যখন বছরে ৭৫ হাজার ডলারে পৌঁছায়, তখন আয় বাড়লেও সুখ বাড়ে না।

সুখের সংজ্ঞা অবশ্যই মানুষ তার মতো করেই ঠিক করে নেয়। চাওয়া তো খুব বেশি কিছু নয়। খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা আর নিরাপত্তা– এ মৌলিক জিনিসগুলো পেলে অনেকেই সুখী। শ্রান্ত কৃষক তাই পড়ন্ত বিকেলে গান গাইতে গাইতে তাঁর ক্ষেত থেকে বাড়িতে ফেরার মধ্যে আনন্দ খুঁজে নেন। অলস দুপুরে ফেরিওয়ালা তাঁর ডাকে হৃদয়ের সঞ্জীবনী চেয়ে নেন। মা তাঁর স্কুলফেরা সন্তানের ড্রেস খুলে দেওয়ার মধ্যে শান্তি খুঁজে নেন; এগুলো গ্যালপের ইনডেক্সে কখনোই থাকবে না। 

রবিঠাকুর যেমনটা বলেছিলেন– ‘জীবনের সব শূন্য আমি যাহা ভরিয়াছি তোমার তা কই...।’ এই বাজার অর্থনীতিতে যেখানে ভবিষ্যতের ভয় দেখানো কিছু সুখী মানুষের একধরনের বিলাস, সেখানে জোর গলায় সেই কৃষক বা রিকশাচালকের মতো বলা যায়– এ বিপুল বিশ্বভূমিতে, এ জনম-ই সই।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ