কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নির্মাণাধীন সাততলা ভবন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার রাত ১টার দিকে শহরের রাণীবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

মারা যাওয়া যুবক মেহেদী হাসান (৩০) কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার আমলাবাড়ি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। মেহেদী দীর্ঘ তিন বছর ধরে ওই ভবনে ইলেকট্রিশিয়ান ও ফোরম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন ভৈরব শহর ফাঁড়ি পুলিশের উপপরিদর্শক এসআই নরুল হুদা।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শহরের ব্যবসায়ী দুলাল চন্দ্র সাহার সাততলা ভবনে তিন বছর ধরে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করছেন মেহেদী। তাঁর সঙ্গে আরও চারজন ইলেকট্রিশিয়ান আছেন। সবাই একসঙ্গে ওই ভবনের সপ্তম তলায় থাকেন। বুধবার সারাদিন কাজ শেষ করে সবাই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত ১টায় হঠাৎ ভবনের ছাদ থেকে নিচে পড়ে যান মেহেদী। পরে বিকট শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন এসে মেহেদীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ভৈরব বাজার কমিউনিটি পুলিশ সদস্য সাদ্দাম মিয়া বলেন, রাত ১টার দিকে আমি ভবনের পাশে দায়িত্ব পালন করছিলাম। হঠাৎ একটি বিকট আওয়াজ পেয়ে দৌড়ে এসে দেখি এক যুবক রক্তাক্ত অবস্থায় ভবনের নিচে পড়ে আছেন। এ সময় তাঁর সহকর্মীরা নিচে নেমে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানান।

মেহেদীর সহকর্মী ইমন মিয়ার ভাষ্য, তিন বছর ধরে ব্যবসায়ী দুলালের ভবনে মেহেদী কাজ করছেন। তারা তিন বছরে কয়েক দফায় এই ভবনে কাজ করতে আসেন। দুই দিন আগে তারা আবারও কাজের জন্য এসেছেন। রাতে কী কারণে মেহেদী ভবনের ছাদ থেকে পড়ে মারা গেলেন, তা তারা কেউ জানেন না। 

ভবনের ইলেকট্রিশিয়ানের ঠিকাদার ইউনুস মিয়া বলেন, নিহত মেহেদী সাত বছর ধরে তাঁর বিভিন্ন সাইটে কাজ করছেন। তিনি ভালো মানুষ, কোনো ঝামেলায় জড়াতেন না। কেন ও কীভাবে তিনি মারা গেলেন, তা তিনি বুঝতে পারছেন না। 

এ বিষয়ে ভৈরব শহর ফাঁড়ির এসআই নরুল হুদা জানান, মেহেদীর লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ত ন বছর ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এসআই প্রত্যাহার

মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করতে কয়েক দফায় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এসআই মো. আলীম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে বিশ্বনাথ থানা থেকে সিলেট পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।

জানা গেছে, অভিযুক্ত এসআই আলীম উদ্দিন ঘুষ নিয়েও কথামতো কাজ করেননি। যে কারণে ঘুষের টাকা ফেরত চান ভুক্তভোগী। কিন্তু বিষয়টি বারবার অস্বীকার করেন এসআই আলীম। এর আগে, ঘুষ লেনদেনের পরপর দুই দফার ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখেন ফয়সল নামের ওই ভুক্তভোগী। সেই ভিডিওটি মঙ্গলবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, থানার বৈঠকখানায় বসে গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসিমুখে পকেটে রাখছেন এসআই আলীম। ভিডিওতে তিনি বলছেন, চার্জ শিটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই। অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবারও করছেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের মকবুল আলী ও তার প্রতিপক্ষ জুনেদ হোসেন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ২০ আগস্ট মকবুল আলী মামলা করেন। আর ওই মামলার তদন্তভার পান এসআই আলীম। এরপর আসামি জুনেদ মামলার বিষয়টি দেখভালের জন্য দাউদপুর গ্রামের ফয়সল আহমদকে দায়িত্ব দেন। এর সুবাধে তিনি মামলার বিষয়ে এসআই আলীমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেন এসআই আলীম। পরবর্তীতে একাধিক সময়ে ২০ হাজার করে ৪ দফা ও ১০ হাজার করে ২ দফা মোট এক লাখ টাকা কৌশলে আদায় করেন তিনি। কিন্তু টাকা নিয়ে কথা মতো কাজ না করে উল্টো ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকেও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন এসআই আলীম। এরপর ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদ ঘুষের ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেন এবং সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদের অভিযোগ, সরলতার সুযোগ নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক পেতে দারোগা আলীম তাকে বোকা বানিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার তিনি সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এসআই আলীম উদ্দিন। তবে, বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা এবং ভিডিও ভাইরালের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসআই আলীম উদ্দিনকে ক্লোজড করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছেলেকে আটক করতে না পেরে বাবাকে আটক করল পুলিশ
  • ধর্ষণের শিকার হয়েছেন উল্লেখ করে ৩ ঘণ্টায় ঢাকা মেডিকেলে ৪ শিশু-কিশোরীসহ পাঁচজন ভর্তি
  • সাভারে ভুয়া সন্দেহে এসআই অবরুদ্ধ, মোটরসাইকেল ভাঙচুর
  • হবিগঞ্জে উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
  • কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এসআই প্রত্যাহার
  • সিলেটে পুলিশ কর্মকর্তার ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ফেসবুকে, থানা থেকে প্রত্যাহার
  • অলিগলিতে বাড়ছে পুলিশের মোটরসাইকেল টহল
  • সিদ্ধিরগঞ্জে থানায় অভিযোগের জেরে পুলিশের উপস্থিতিতে হামলা, নারীসহ আহত ৫
  • বগুড়ায় বাদীর টাকা কেড়ে নেওয়া সেই এসআই প্রত্যাহার