বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে নাসিক প্রশাসক বরাবর নগর ভাবনা’র স্মারকলিপি
Published: 20th, March 2025 GMT
নগরে নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও বাসযোগ্য নগরী গড়ে তোলার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বরাবর ১৮দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন নগর ভাবনা’র আহ্বায়ক সাবেক কাউন্সিলর অসিত বরণ বিশ^াস, এড. মাজেদুল হক রাজন, ওমর ফারুক, রাইসুল রুশদী, আবু কালাম, লিলু মিয়া, নিগার সুলতানা পলি, মাহবুব আলম জয়, মুন্নি সরদার, গোপাল ঘোষ, রফিকুল ইসলাম, জনি সাহা। স্মারক লিপি গ্রহন করেন নাসিক প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান।
স্মারকলিপিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনকে একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। বাণিজ্যিক নগরী হওয়ায় প্রতিদিন নগরীর কেন্দ্রস্থলে স্থায়ী জনসংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি লোকসমাগম ঘটে। আমাদের মূল শহর একটিমাত্র সড়কের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় যানজট এখন নিত্যসঙ্গী।
সুস্থ্য, সৌহার্দপূর্ণ, নাগরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য খেলার মাঠ গণপরিসর ও জলাশয়ের রয়েছে ব্যাপক ঘাটতি। ড্যাপের হিসাব অনুযায়ী পুরো নগরীতে খেলার মাঠ দরকার ১২০.
এই রকম একটি পরিবেশে নগরীকে বাসযোগ্য ও নাগরিকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিম্নোক্ত দাবিসহ ১৮দফা দাবিনামা পেশ করা হয়।
১। নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে চাষাড়া রেলস্টেশন পর্যন্ত উড়াল/পাতাল পথে যাতায়াত করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
২। যানজট নিরসনে ২নং রেল গেইট থেকে চাষাড়া পর্যন্ত রেললাইনের পাশ দিয়ে বিকল্প সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ।
৩। শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীর ঘেঁষে বিকল্প সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহন।
৪। নাগরিক চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার জন্য বিভিন্ন ওয়ার্ডে দ্রুত এলইডি লাইট স্থাপন।
৫। নগরীতে নারী বান্ধব টয়লেট স্থাপন।
৬। অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়া (ধূলাবালি নিয়ন্ত্রন, দ্রুত বর্জ্য অপসারণ) অনুসরনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭। মাসদাইর মহাশ্মশানের পাশ^বর্তী জায়গা (ধর্মীয় প্রয়োজনে) অধিগ্রহণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ।
৮। সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনায় (গোরস্থান, শ্মশান, লেক, পার্ক ইত্যাদি) সি.সি. ক্যামেরা স্থাপন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।
৯। চাষাড়া থেকে নিতাইগঞ্জ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়কের উভয় পাশে নির্মাণাধীন ফুটপাতে বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে বৃক্ষরোপনের উদ্যোগ গ্রহণ।
১০। শীতলক্ষ্যা নদী দূষণরোধে কার্য্যকর উদ্যোগ গ্রহণ।
১১। নগরীতে অপ্রতুল খেলার মাঠ ও গণপরিসরের অভাব পূরণে সরকারি পরিত্যক্ত জায়গা ব্যবহার ও অধিগ্রহনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ স ম রকল প ব যবস থ র জন য গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
আরসাপ্রধান আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের স্বস্তি-উল্লাস
রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (এআরএসএ বা আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ ওরফে আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করার খবরে কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ওই খবর শোনার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁরা উল্লাস প্রকাশ করেন। তারাবিহর নামাজ শেষে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন মসজিদে রোহিঙ্গারা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করতে গোপন বৈঠকের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহে পৃথক অভিযান চালিয়ে আরসার ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁদের মধ্যে ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পৃথক দুই মামলায় ৫ দিন করে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন নারায়ণগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
রোহিঙ্গারা নেতারা জানান, গ্রেপ্তার আতাউল্লাহকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আশ্রয়শিবিরে মজুত রাখা বিপুল ভারী অস্ত্র ও গোলাবারুদের সন্ধান মিলবে। শনাক্ত হবে অস্ত্র ও অর্থের জোগানদাতা। আতাউল্লাহকে গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে লুকিয়ে থাকা আরসার কয়েক শ সদস্য আত্মগোপনে চলে গেছেন। আরসাকে ঠেকাতে এত দিন মিয়ানমারের আরেক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারেটি অর্গানাইজেশনসহ (আরআরএসও) ১০টির বেশি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী একাট্টা ছিল। এখন তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে। আশ্রয়শিবিরে খুনখারাবি বেড়ে যেতে পারে। আশ্রয়শিবির থেকে সন্ত্রাসীরা যেন পালাতে না পারেন, সে জন্য তল্লাশিচৌকিতে তৎপরতা বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, দুই বছর আগেও আরসাপ্রধান আতাউল্লাহর অবস্থান ছিল পার্বত্য বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায়। সেখান থেকে মাঝেমধ্যে উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে খুনখারাবিতে লিপ্ত থাকতেন। এক বছর আগে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সংঘাত-লড়াই শুরু হলে তিনি দলবল নিয়ে রাখাইন রাজ্যে গিয়ে আস্তানা গাড়েন। সরকারি বাহিনীর সঙ্গে জোট বেঁধে আরসার সদস্যরা আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়তে থাকেন। দীর্ঘ ১১ মাসের লড়াই সংঘাতের পর ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপসহ ৮০ শতাংশ এলাকা (২৭০ কিলোমিটার) দখলে নেয় আরাকান আর্মি। কিন্তু আরসার সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই বন্ধ হয়নি। মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি। গত বছরের নভেম্বর থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইনের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে আরাকান আর্মি।
আরও পড়ুনরোহিঙ্গাদের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার প্রধানসহ ১০ জন নারায়ণগঞ্জ ও ময়মনসিংহ থেকে গ্রেপ্তার১৪ ঘণ্টা আগেরোহিঙ্গা নেতারা জানান, ২০১৮ সালের দিকে পুরো আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ছিল আরসার হাতে। সাধারণ রোহিঙ্গারাও আরসাকে নানাভাবে সহযোগিতা দিত। কিন্তু রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে বিপাকে পড়ে আরসা। এর ফলে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সমর্থন হারাতে থাকে তারা। এখন আরসা আশ্রয়শিবিরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছিল। আতাউল্লাহসহ আরসার কয়েকজন শীর্ষনেতা গ্রেপ্তারের খবরে আশ্রয়শিবিরে থাকা আরসা সন্ত্রাসীদের মনোবল ভেঙে পড়েছে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে আরএসওসহ অন্যান্য সন্ত্রাসীরা আরসার সন্ত্রাসীদের পালানো ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। তাতে আশ্রয়শিবিরে নতুন করে সংঘাত-হানাহানি দেখা দিতে পারে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আতাউল্লাহসহ আরসার ছয়জনকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে কক্সবাজারে করা মামলায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন মহলে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনআরসার প্রধান কমান্ডারসহ ৪৯ জনের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা০৫ ডিসেম্বর ২০২৩কক্সবাজারের টেকনাফের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আগুনের কুন্ডলী। গতকাল মঙ্গলবার রাতে