ড. ইউনূস দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনীতির নতুন প্রফেসর
Published: 20th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিশেষ সাক্ষাৎ হওয়ার কথা ছিল সেপ্টেম্বর, ২০২৪ জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের যে কোনো সময়। কিন্তু দিল্লির রাজনৈতিক মহলের টালবাহানায় সেটি হয়নি। তবে বিশ্বরাজনীতিতে অভিজ্ঞরা সে সময় আশঙ্কা করেছিলেন এ ঘটনা আগামী দিনগুলোতে ভারতের জন্য অশনি সংকেত ডেকে আনবে। কারণ ড.
মূল আলোচনায় আসি, ড. ইউনূস একমাত্র বৈশ্বিক ব্যক্তি যার সঙ্গ পেতে তামাম দুনিয়ার বুদ্ধিভিত্তিক মানুষেরা উন্মুখ হয়ে থাকেন। সেখানে তাকে উপেক্ষা করাটা অনেকের মতো ভালোভাবে নেয়নি মার্কিন ধনকুবের সম্রাট ইলন মাস্ক। এর কয়েকদিন পর মাস্কের সঙ্গে বৈঠক ছিল মোদির। অথচ বৈঠকের ঠিক এক ঘণ্টা আগেই তিনি প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে তার আগ্রহের কথা জানান। সুযোগ পেলে ব্যবসায় বিনিয়োগের কথাও বলেন। এরপরই ইলন মাস্ক এক্সে প্রফেসর ইউনূসকে ফলো করে রাখেন।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠলে তিনি পদত্যাগ করেন। এই ঘটনাটিও ইলন মাস্ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সেখানে লিখেছেন, ‘লেবার সরকারের শিশুকল্যাণমন্ত্রী নিপীড়নকারীদের সুরক্ষা দেন এবং তাদের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত।’
অথচ টিউলিপের খালার পক্ষ নিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ নামক দেশটির বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নিয়েছেন। অর্থাৎ দেশের চেয়ে একজন ব্যক্তিকে তিনি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী সরকারের সম্পর্ক থাকবে সরকারের সঙ্গে। সেই নিয়মের ব্যতিক্রম আমরা দেখলাম এবং অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, দিল্লির সুরে ভারতের মিডিয়াও প্রফেসর ইউনূসকে ‘জঙ্গি সর্দার’ বানানোর অপসাংবাদিকতা করছে।
ইলন মাস্কের খেলা শেষ হয়েও হচ্ছিল না। প্রফেসর ইউনূসের আহ্বানে এবার তিনি স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক আগামী ৯০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশে নিয়ে আসার কথা বলেছেন। এ জন্য প্রতিনিধি দলও বাংলাদেশে এসেছে। শোনা যাচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্য ব্যবসায়ীরাও ইউনূসের দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। মনে রাখা প্রয়োজন, এই ইলন মাস্ক এখন শুধু একজন ব্যবসায়ী নন, তিনি আমেরিকার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরামর্শক, এবং আমেরিকার নীতি নির্ধারণীদের অন্যতম। আর তিনি চাচ্ছেন প্রফেসর ড. ইউনূসের থ্রি জিরো দুনিয়ার সকলের কাছে পৌঁছে দিতে। ইউনূস শুধু যে সমস্যার সমাধান দিচ্ছেন তা নয়, অন্যের জন্য কিছু কৃত্রিম সংকটও সামনে তৈরি করছেন। এটাই বৈশ্বিক ক্রিটিক নেতার চরিত্র।
২.
মার্চের শুরুতে চোখ বড়ো করার মতো খবর আসে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দরবার থেকে। কী সেই খবর? আসলে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে বাংলাদেশের ভূমিকা তেমন চোখে পড়ে না। পড়ার কথাও না। কারণ, আন্তঃকলহ সমাধানে যেখানে ত্রাহি অবস্থা, সেখানে রাজনৈতিক মঞ্চে নিজেকে হাজির করবে কীভাবে? এবার বাংলাদেশ নিজেকে হাজির করতে না চাইলেও বিশ্বমঞ্চই লাল কার্পেট বিছিয়ে দিয়েছে। শি জিনপিং ড. ইউনূসকে চারদিনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। ইউনূস আলোকিত করবেন বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়ার (বিএফএ) সম্মেলন। তার জন্য বেইজিং পাঠাবে বিশেষ এক বিমান। বলাবাহুল্য চীনারা এই বিমান সবার জন্য সবসময় পাঠায় না, কেবল মাত্র কৌশলগত কারণেই পাঠায়। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই প্রথম এবং একমাত্র ঘটনা।
শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের বিশেষ দিন বরাদ্দ করা হয়েছে ২৮ মার্চ। অর্থাৎ উপদেষ্টার পৌঁছানোর দুদিন পর। এই সফর চীনের অর্থায়নে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। সফরটি কৌশলগত কারণেও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। চীন ভারত প্রধানের জন্য কখনই বিশেষ বিমান পাঠানোর অফার করেনি। বিশ্লেষকরা শি জিনপিংয়ের মগজ ধরতে চুলচেড়া বিশ্লেষণ শুরু করেছেন।
ড. ইউনূস এখানেই থামছেন না, মে মাসে তিনি যাবেন জাপান। দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষীক বৈঠক করার পাশাপাশি বাংলাদেশের উন্নতি, বিনিয়োগ ও জাইকা প্রসঙ্গে হতে পারে দীর্ঘ আলাপ। জুন মাসে যাবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজারের দেশ সৌদি আরবে। মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজারে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর নাম ভারত। শ্রম বাজারে বিনিয়োগ, আর্থিক সহায়তাসহ নানান বিষয়ে বৈঠক করবেন দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আল সৌদের সঙ্গে। ফলে সবদিক দিয়ে নরেন্দ্র মোদির মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠছেন মি. ইউনূস। এ কথা সন্দেহাতীতভাবে সত্য দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান বদলে যাচ্ছে। আর এই বদলের নেতৃত্বে হয়তো প্রথম সারির ভূমিকা রাখবেন প্রফেসর ইউনূস।
ইউনূস শুধু যে প্রতিবেশী পরাশক্তিকে সামাল দিচ্ছেন তা নয়, তাকে সমাল দিতে হচ্ছে শেখ হাসিনার রেখে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ মেরামতেও। এই অন্তর্বর্তী সরকার সর্বশেষ ৬ মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছে ৬২ হাজার কোটি টাকা, পাশাপাশি গত বছরের এই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে চার বিলিয়ন ডলার, রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার, দেশের পণ্যের ভর্তুকি বেড়েছে ১২ শতাংশ, বাফুফে থেকে ফিফার দেওয়া নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয়া হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের অনুরোধে। সামাল দিতে হয়েছে কমপক্ষে দেড় শতাধিক প্রতিবিপ্লব!
৩.
আরাকানের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রামে আশ্রয় দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হতে চেয়েছিলেন শান্তিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় নোবেল লরিয়েট। আগের সরকারের ধারণা ছিল রোহিঙ্গা একটি প্রোডাক্ট। যা ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। অথচ রোহিঙ্গা একটি ইস্যু ছিল। আবার কারো কাছে ছিল ট্রার্ম কার্ড। যা ব্যবহার করে চীন এবং ভারতও নিতে চেয়েছিল বিশেষ সুবিধা। খেলাটা আগে থেকেই জানতেন ইউনূস। তাই তিনি বাংলার মসনদে বসার আগেই ভারত নেতাকে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, বাংলাদেশ অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে প্রতিবেশী মিয়ানমার, সেভেন সিস্টার্স, পশ্চিমবঙ্গসহ আশেপাশের সব জায়গাতেই ছড়িয়ে পড়বে অস্থিরতা। এই ঘোষণার মাধ্যমে ড. ইউনূস হয়তো বুঝাতে চেয়েছেন আমি উপমহাদেশ নয়, বিশ্বমঞ্চের খেলোয়াড়। আমার জন্য ফাঁদ তৈরি এতটা সহজ হবে না।
মায়ানমার যখন বাংলাদেশের চোখে আঙুল রেখে কথা বলছে, তখন বুঝতে অসুবিধা ছিল না এর পেছনে কে বা কারা কলকাঠি নাড়ছে। হিতে কখনো কখনো বিপরীত হয়, এখন মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্য নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। আগে ছিল ইয়াঙ্গুনের শাসন, এখন সেখানে আরাকান শক্তির রাজত্ব। এই পরিবর্তন শুধু মায়ানমারকে ভাবনায় ফেলেছে তা নয়, ভাবনার সমীকরণে বসতে হয়েছে ভারত ও বাংলাদেশকেও। ভাবছে বেইজিংয়ের শাসক জিনপিংও। কীভাবে জান্তা এবং বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। অন্যদিকে দিল্লি ভাবছে সামরিক জান্তাদের মাধ্যমে মায়ানমার নিয়ন্ত্রণে রাখবে। তবে কৌশলগতভাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। সরাসরি যোগাযোগ করছে রাখাইনের আরাকান আর্মিদের সঙ্গে। ভারতের প্রভাবশালী ইন্ডিয়া টুডে এক প্রতিবেদনে `Yunus joins hands with arakan army in Myanmar’ শিরোনামে উল্লেখ করেছে, ইউনূসের এই কৌশল শুধু বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে তা নয়, বরং ভারতের জন্য এক বিশাল কূটনৈতিক ধাক্কা হয়ে দাঁড়াবে। বাংলাদেশ যে পরিকল্পনায় সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে, ভারত এবং চীনের মাথা ব্যথার কারণ ইউনূস।
আরকানের সবচেয়ে কাছের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাম বাংলাদেশ। আরাকান যদি রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে নিশ্চয়তা দেয় তাহলে বাংলাদেশও ভাববে তাদের স্বীকৃতি, রাষ্ট্র পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য, অর্থ ও অন্যান্য সহযোগিতার বিষয়ে। আরাকান রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার অর্থ হলো জান্তার পরাজয়, দিল্লির পরাজয়, বেইজিংয়েরও পরাজয়। এর ভেতর দিয়ে ভারত ও চীনের বঙ্গোপসাগর নিয়ে করা পরিকল্পনা ও শত শত কোটি ডলারের অপচয় নিশ্চিত। ড. ইউনূস ভারতের পররাষ্ট্রনীতির কারণে চীন যাচ্ছেন, চীনের কারণে যাচ্ছেন জাপান। জাপানকে কাছে রাখতে আমেরিকার টেবিলে বসছেন। এমন দূরদর্শী নেতা পেয়ে বিশ্ব মঞ্চ সত্যিই আলোকিত।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে যখন ভারত ও চীনকে পাশে পাচ্ছে না বাংলাদেশ, তখনই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস চারদিনের সফরে ১ লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করেছেন কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। অথচ ভারতের সকল মিডিয়া তখনও অন্ধের মতো বলছে দিল্লির স্বর ও সুরে। কলকাতার আনন্দ বাজারের এক প্রতিবেদনের শিরোনাম `উত্তপ্ত বাংলাদেশের তিন দিনের সফরে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব`! ভাবনায় মিলে না, তাদের মিডিয়া কি বৈশ্বিক কোনো খোঁজ খবর রাখে না! নাকি ইচ্ছাকৃত গুজব ছড়াচ্ছে? নাকি গরম খবর ছাড়া তাদের মিডিয়া চলে না! নাকি দেশটির সাধারণ মানুষ মিডিয়ার ওপর আস্থা হারিয়েছে, তাই এমন সংবাদ পরিবেশন করছে!
গুতেরেস ভারতের মিডিয়াকে চপেটাঘাত দিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইফতার মাহফিলে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বিষয়ে একমাত্র সমাধান তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন’। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও জাতিসংঘ মহাসচিরে সঙ্গে সুর মিলিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের কীভাবে দ্রুত তাদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়, সে ব্যাপারে গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার।’ এমন ইস্যু যখন তাজা তখনই চীন, জাপান, সৌদি আরবের আমন্ত্রণ। বিশ্বরাজনীতির ধারা ঠিক করতেই যেন ইউনূস ছুটছেন!
৪.
ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরে যে রাজনৈতিক সরকার আসবে, কেবল তাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বার্তা ইতোমধ্যে দিয়েছে ভারত। অন্যদিকে শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ইতোমধ্যেই ‘স্ট্রিক গ্লোবাল ডেপ্লোম্যাসি’ নামের সিঙ্গাপুরভিক্তিক একটি লবিস্ট ফার্মকে মাসে দুই লাখ ডলার চুক্তিতে নিয়োগ দিয়েছে। ওই লবিস্ট ফার্ম মার্কিন নেতাদের আওয়ামী লীগের পক্ষে আনার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে জোর প্রচারণা। সেইসাথে আওয়ামী লীগের পরীক্ষিত বন্ধুরা ভারতে বসে সকল ধরনের চেষ্টা ও তদবির করে যাচ্ছে।
মিসরে যখন মুসলিম ব্রাদার হুডের মুহাম্মদ মুরসি ক্ষমতাচুত্য হলেন, তখন তার অনুসারী নেতারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে। এর একটি দেশ তুরস্ক। কর্মীদেরকে স্বাধীনভাবে থাকার সুযোগ করে দেয় রিসেফ তাইয়েফ এরদোয়ান। এর ফলে মিসরের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় সকল ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিন্তু মাস কয়েক পূর্বে রিসেফ তাইয়েফ এরদোয়ান মিসরের মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতাকর্মীদের তুরস্ক ত্যাগের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ত্যাগ না করলে তাদেরকে জেলে দেয়া হবে। নিরুপায় হয়ে কর্মীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় খোঁজা শুরু করে। এমন একটা সময় সামনে হয়তো দেখতে পাব, বৈশ্বিক মঞ্চটা যখন ইউনূসের হবে, ভারত তখন সেখানে আশ্রয় নেয়া আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের হয়তো বাংলাদেশে পাঠাবে, নয়তো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে অন্য কোনো দেশকে ভাবতে বাধ্য হবে।
৫.
সর্বশেষে বলা যেতে পারে, দেশের ভেতরেও প্রফেসর তার ক্লাস ঠিক রাখতে হবে, নয়তো ছাত্র-জনতা উত্তপ্ত হবে, ৩৬ জুলাই তৈরি করবে। রাষ্ট্র পরিচালনা নিয়ে তার পরিকল্পনা অবশ্যই আছে, সেসকল জাতির সামনে হাজির করা, মব দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা, ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। নয়তো রাষ্ট্রের কাঠামো ধ্বসে পড়বে, বিচার ব্যবস্থা যদিও তলানিতে। এসব ঠেকাতে অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য ভূমিকা থাকবে, একটি নির্বাচন ব্যবস্থা দাঁড় করিয়ে বিজয়ী দলের কাছে রাষ্ট্রের হেফাজতের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া। এতদিন তিনি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন না বলেই নিজের ক্ষমতার প্রদর্শন করতে পারেননি, এখন তিনি তা করবেন। কারণ তিনি ভালো জানেন, দেশ আগে। দেশের মানুষ আগে।
লেখক : কবি ও কথাসাহিত্যিক
তারা//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইলন ম স ক ম হ ম মদ র জন ত ক আম র ক র ইউন স র ন সরক র সরক র র আর ক ন র জন য ত র জন মন ত র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
গণমাধ্যমে সমালোচনার পাশাপাশি সরকারের ইতিবাচক দিকও তুলে ধরতে হবে: তথ্য উপদেষ্টা
তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি গণমাধ্যমে সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপগুলোও প্রচার হওয়া উচিত।
বৃহস্পতিবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রাজধানীর তথ্য ভবনে ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
গুজব ও অপপ্রচারের ব্যাপকতা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, সত্য প্রচারের পাশাপাশি গণমাধ্যমকে গুজব ও অপপ্রচার মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। গণমাধ্যমের সমালোচনাকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনা সরকারের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। তিনি বলেন, সরকার গণমাধ্যমের নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করে।
গত ১৬ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকার সমালোচনা করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, সরকার গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। তিনি গণমাধ্যম সংস্কারের ক্ষেত্রে গণমাধ্যম মালিক, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
ইফতার মাহফিল ও মতবিনিময় সভায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের মালিক, সম্পাদক ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।