ধামরাইয়ে বিএনপি নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 20th, March 2025 GMT
ঢাকার ধামরাইয়ে দিনে দুপুরে বাড়ির পাশে আবুল কাশেম (৫৭) নামে বিএনপির এক নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরিবারের দাবি, মাটি ব্যবসার বিরোধের জেরে তাকে কোপানো হয়। মৃত্যুর আগে হত্যায় জড়িতদের নাম আবুল কাশেম জানিয়ে গেছেন বলে দাবি পরিবারের।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকায় বাড়ির পাশে সড়কের ওপরে তাকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
নিহত আবুল কাশেম (৫৭) ধামরাইয়ের গাংগুটিয়া ইউনিয়নের জালসা এলাকার মৃত রইজ উদ্দিন মাস্টারের ছেলে। তিনি গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন।
আবুল কাশেমের স্ত্রী শাহিদা আক্তার বলেন, “মৃত্যুর আগে কোপানোয় জড়িতদের নাম জানিয়ে গেছেন আমার স্বামী। কোপানোয় জড়িতরা হলো- আব্দুল জলিল, বাছেদ, বাবু, বিল্টু, আলী, আহাদ, সাইম, গফুর ও মালেক। তারা গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা ও ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদের অনুসারি।”
শাহিদা আক্তার আরো বলেন, ‘‘আমার স্বামী মানিকগঞ্জ যাবেন বলে সকালে বাড়ি থেকে রওনা হন। বাড়ি থেকে পাকা সড়কে ওঠার পর সেখানেই তাকে কোপানো হয়। তখন পাশের বাড়ির একজনের ডাক-চিৎকার শুনে দৌড়ে যাই। দিশা না পেয়ে তাকে যখন জড়িয়ে ধরেছিলাম, তখন তিনি নামগুলো বলেন। এরমধ্যে আহাদ আওয়ামী লীগের সময় সারের ডিলারশিপ নিয়েছিলেন। তিনি সারের ডিলারি ব্যাবসা করেন। ওরা মাটির ব্যবসা করে আওয়ামী লীগের সময় কোটিপতি হয়েছে। এখনও ওরা মানুষকে নির্যাতন করে। নির্যাতন করে মেরেই ফেললো আমার স্বামীকে। এরা মুরাদের গ্রুপ করে।’’
নিহতের ছেলে কামরুল হাসান বলেন, ‘‘৫ তারিখের পর আওয়ামী লীগের পট পরিবর্তন হয়, তখন তারা ঢাকা জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মুরাদের সঙ্গে যুক্ত হয়। আমার বাবা গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ছিলেন। উনার সঙ্গে বিরোধ মূলত উনি মাটির ব্যবসা করতেন, মাটির ব্যবসা নিয়ে মূলত বিরোধ। এই বিরোধ নিয়ে কিছু দিন আগে আমাদের ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মফিকুল ইসলাম তাকেও কোপায় এই গ্রুপটা। এর কিছু দিন পর আজকে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাবাকে হত্যা করা হলো। সবাই মুরাদ গ্রুপের রাজনীতি করে।”
গাংগুটিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোজাম্মেল হক মোজা বলেন, ‘‘ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবুল কাশেমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ি থেকে বাজারে যাওয়ার সময় দূর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।’’ রাজনৈতিক বিরোধের কারণে এ হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা তার।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ বলেন, ‘‘প্রথমত, আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। যেহেতু তিনি নাম বলে রেখে গেছেন। তিনি আমার অনুসারী বলেছেন, আমি বলব আমার অনুসারী সারা ধামরাইয়েই রযেছে। তারা যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে, আমি এদের বিচার চাই। এই ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। আমি নিজে তাদের বিচার চাই। আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করি না। কারণ যেটা ন্যায়, যেটা সত্য, সেটি প্রতিষ্ঠিত হোক। মিথ্যা অভিযোগের কারণে যাতে যারা প্রকৃত দোষী, তারা বের হয়ে যেতে না পারে।’’
সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডিউটি চিকিৎসক ডা.
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনচার্জ মো. ইউসুফ বলেন, ‘‘দুপুর ১টার দিকে মৃত অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।’’
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘নিহতের স্ত্রী কোপানোর সঙ্গে জড়িতদের নাম জানিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে হত্যার খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই বিষয়ে তদন্ত চলমান। হত্যায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে চেষ্টা চলছে।’’
ঢাকা/সাব্বির/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়: বাংলাদেশ জাসদ
সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ জাসদ। আজ শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় নিজেদের এ অবস্থান তুলে ধরে দলটি।
আজ সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে বাংলাদেশ জাসদের সঙ্গে আলোচনা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে দলটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। বৈঠকের শুরুতে নিজেদের প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপ পাঠ করেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য মুশতাক হোসেন।
মুশতাক হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করার প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। অবশ্যই চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান উল্লেখ করার ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। সেই সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে নব্বইয়ের গণ–অভ্যুত্থানও তাৎপর্যপূর্ণ। এই গণ–অভ্যুত্থানকেও সংবিধানে মর্যাদার সঙ্গে উল্লেখ করা প্রয়োজন। সংবিধান থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র ও ৭ মার্চের ভাষণ অপসারণ তাঁরা সমর্থন করেন না। দেশের নাম বাংলাতে পরিবর্তনকে তাঁরা অনাবশ্যক বলে মনে করেন।
আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের।আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার পক্ষ থেকে নেওয়া হলেও এ দাবি প্রকৃতপক্ষে জনগণের। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি শেষ করতে চায় কমিশন। এরপর দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা শুরু হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঐকমত্য কমিশন রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজসহ কমিশনের সদস্যরা