মামলা থাকায় কুবির ডেপুটি রেজিস্ট্রারকে সাময়িক বরখাস্ত
Published: 20th, March 2025 GMT
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) বিকেলে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে থেকে এ বরখাস্তের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ জাকির হোসেন সদর দক্ষিণ থানার একটি মামলায় এজহারভুক্ত ৩০ নম্বর আসামি। ওই মামলার এফআইআর নম্বর ৯ এবং জিআর নম্বর ৩২৯। গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
গাজায় হামলার প্রতিবাদে ইবি ও কুবিতে বিক্ষোভ
কুবিতে প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত শিক্ষকের কক্ষ সিলগালা
সরকারি কর্মকর্তা আইন ২০১৮ এর ধারা ৩৯ (০২) এবং সরকারি কর্মচারী বিধিমালা ২০১৮ এর ১২ নং বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে সাময়িক বরখাস্ত হলেও বিধিমালা অনুযায়ী ভাতা পাবেন তিনি।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “তার বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। পাশাপাশি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও তদন্ত করছে। সবমিলিয়েই তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কর্তৃপক্ষ।”
ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলায় দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হয়েছে, বললেন জি এম কাদের
সরকারের অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।
দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের (মনোনয়ন-বাণিজ্য) যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তখন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির রাজনীতি ও নীতিনির্ধারণী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন তিনি। তখন নাকি আমি দুর্নীতি করেছি। যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাকরাইলে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল শেষে জি এম কাদের সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের ৯৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা এ আয়োজন করে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর কাফরুলে জাপার ইফতার অনুষ্ঠানে হামলার পর জি এম কাদের এক ভিডিও বক্তব্যে নানাবিধ ব্যর্থতার জন্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিদায় চান। এরপরই আজ দুদক ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন, পদ-বাণিজ্য ও বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। সন্ধ্যায় জি এম কাদের এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, ‘আমি এমপি (সংসদ সদস্য) থাকা অবস্থায় গমসহ বিভিন্ন সহায়তা দেওয়ার যে বিধান রয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কোনো দায়দায়িত্ব নেই বা ছিল না।’
জাপার চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। জাতীয় পার্টির ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। ফ্যাসিবাদ থেকে দেশকে মুক্তি দিতে যে পথে যেতে হয়, আমরা সে পথেই এগিয়ে যাব। আমাদের জেলে নেওয়া হলে যাব, ফাঁসি দিলে দেবে। এরশাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা জনগণ মেনে নেয়নি, আমাদের বিরুদ্ধে দেওয়া মামলাগুলোও জনগণ মেনে নেবে না।’
সরকারের উদ্দেশে জি এম কাদের বলেন, ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না। বর্তমান সরকারও বিগত সরকার থেকে শিক্ষা নেয়নি। বিগত সরকারের পতন থেকে বর্তমান সরকারও শিক্ষা নিচ্ছে না। এই দিনই শেষ দিন নয়, আরও দিন আছে।
কাফরুলে ইফতার অনুষ্ঠানে হামলার নিন্দা জানিয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘গতকাল আমাদের ইফতার পার্টিতে সন্ত্রাসীরা হামলা করে আমাদের নেতা-কর্মীদের গুরুতর আহত করেছে। সন্ত্রাসী হামলার হাত থেকে গণমাধ্যমকর্মীরাও রেহাই পাননি। মারধর করে ক্যামেরা ভেঙে ফেলা হয়েছে। ইউটিউবারদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। সাধারণ পথচারীরাও হামলার শিকার হয়েছেন। আমরা এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা গতকাল কয়েকবার পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। আমরা কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি। তাঁরা এসে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে সন্ত্রাসীদের তাড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছেন।’
বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে জনগণের যে প্রত্যাশা ছিল, তা ধূলিসাৎ হয়ে যাচ্ছে। নব্য ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আমরা গতকালও বলেছি, বর্তমান সরকার দেশের জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে নৃশংসতার শেষ নেই।...আমি আবারও বলছি, বর্তমান সরকার ব্যর্থ হয়েছে, আপনারা সরে দাঁড়ান।’
জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মীর আব্দুস সবুরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু বক্তব্য দেন। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, লিয়াকত হোসেন, আলমগীর সিকদার, জহিরুল ইসলাম, জহিরুল আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।