বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবুল কালাম আজাদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে টানা পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে প্রতিষ্ঠানটির একদল বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন এলাকাবাসীও। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে-বাইরে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আন্দোলনকারীরা মহাপরিচালকের অপসারণ দাবি করে তার বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের তদন্ত দাবি করেন।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ভবনে টানা পঞ্চম দিনের মতো এই বিক্ষোভ ও মিছিল করে আন্দোলনকারীরা।

এতে বক্তব্য রাখেন, বিনার প্রকল্প পরিচালক মাহবুবুল আলম তরফদার, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রেজা মোহাম্মদ ইমন, কৃষিবিদ মো.

আব্দুর রশিদ, মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন, কর্মচারী নেতা মোহাম্মদ দীপু প্রমুখ।

এ সময় বক্তারা বলেন, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপক্ষে লাঠি মিছিলে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডিজি। পরিবর্তিত পটভূমিতেও ২৭ ছাত্রলীগ নেতার পদোন্নতি চূড়ান্ত করেছেন। বঞ্চিত ব্যক্তিদের জ্যেষ্ঠতা প্রদানে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গড়িমসি করা হচ্ছে। এছাড়াও পালিয়ে অফিস করাসহ ডিজির বিরুদ্ধে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। তার এ সব কারণে প্রতিষ্ঠানটিতে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। তারা অবিলম্বে ফ্যাসিস্টের দোসর এই ডিজির পদত্যাগ দাবি করেন। অন্যথায় তাদের আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা। 

আন্দোলনে দেশের একমাত্র এই কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. হাবিবুর রহমান।

তিনি জানান, বঞ্চিতদের আন্দোলনের স্থবির হয়ে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড। আটকে আছে বেতন-ভাতা ও বিল-ভাইচার এবং ট্যুর বিল। এছাড়াও মন্ত্রণালয়ের একটি অডিট রিপোর্ট আটকা পড়েছে।

তিনি আরো জানান, বেশ অনেক দিন ধরে ডিজি মহোদয় অফিস করছেন না। তার কক্ষে তালা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। প্রতিদিন তারা দাবি আদায়ে বিক্ষোভ মিছিল করছে। এ সব কারণে এই স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে।

একই ধরনের মন্তব্য করেছেন বিনার বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেনসহ একাধিক কর্মকর্তা। তারা বলেন, বিগত সরকারের সময়ে একটি সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে ডিজি পদে নিযুক্ত হন ড. আবুল কালাম আজাদ। ফলে দেশের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে নিয়মিত অফিস না করে ঢাকায় ব্যস্ত থাকেন তিনি। এরই মাঝে বঞ্চিতদের আন্দোলনের কারণে ডিজি এখন আর অফিসেই আসেন না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এ সব বিষয়ে বক্তব্য জানতে মহাপরিচালক ড. আবুল কালাম আজাদের কক্ষে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কল করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে মহাপরিচালকের একান্ত সচিব (পিএস) ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, আন্দোলনকারীরা স্যারের (ডিজির) কক্ষে তালা দিয়ে রেখেছে। তিনি অন্য রুমে বসে কাজ করছেন।
 

ঢাকা/মিলন/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব জ ঞ ন ক কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দুই কর্মকর্তা 

সংস্কার, মানবাধিকার, গণতন্ত্রসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করতে আগামীকাল মঙ্গলবার ঢাকায় আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিকোল অ্যান চুলিক। এ ছাড়া মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বুধবার আসছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশীয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যান্ড্রু আর হেরাপ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর এটাই তাঁর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রথম বাংলাদেশ সফর। সফরে অ্যান্ড্রু আর হেরাপের সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা মিয়ানমারে ভারপ্রাপ্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত সুসান স্টিভেনসনের।

মার্কিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক চুলিক তাঁর চার দিনের সফরে বাংলাদেশে সংস্কার কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা এবং গণতান্ত্রিক পথে ফেরার বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন। তিনি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ করার কথা। 

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে সমকালকে বলেন, নিকোল অ্যান চুলিক বর্তমানে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হলেও, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি না থাকায় এ দপ্তরের দায়িত্ব তিনি পালন করছেন। সফরকালে তিনি সংস্কারে যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে, সে চাহিদাগুলো জানতে চাইবেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমগুলোতে জঙ্গিবাদের মাথাচাড়া দেওয়ার খবর আসায় বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং মানবাধিকার বিষয়ও আসতে পারে। তিনি বলেন, ১/১১-এর সময় সংস্কারে জোর না দেওয়াটা এক প্রকার ভুল মনে করে মার্কিনিরা। সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাওয়ায় সহযোগী হিসেবে থাকতে চায় দেশটি।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পূর্ব এশিয়া বিষয়ে অভিজ্ঞ কূটনীতিক অ্যান্ড্রু আর হেরারের বৈঠকে মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রধান্য পাবে। সফরকালে তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এ ছাড়া প্রধান উপদেষ্টার হাই রিপ্রেজেন্টেটিভসহ বিভিন্ন পর্যায়ে তাঁর বৈঠক করার কথা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এটিকে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) বাস্তবায়নে বাধা হিসেবে দেখছে। কারণ মিয়ানমারের কিছু এলাকা বাদে দেশটিতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। বর্তমানে মিয়ানমার মাদক চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবসা, বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অপহরণ করে আটকে রাখা, নারী ও শিশুসহ মানব পাচারের অন্যমত কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এর সঙ্গে রোহিঙ্গা পরিস্থিতিও রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে দেশটির সেনাবাহিনীসহ বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলো জড়িত। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের অপরাধীরা অপরাধমূলক কার্যক্রম মিয়ানমারের মাটিতে বসে চালাচ্ছে। তাই পুরো পরিস্থিতি আলোচনায় আসবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ