কেউ কেউ ‘নৈতিক খবরদারির’ দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁদের মোকাবিলায় উদারপন্থীদের সোচ্চার হতে হবে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
Published: 20th, March 2025 GMT
সমাজে আগে দেখা না গেলেও এখন কেউ কেউ নৈতিক খবরদারি করার দায়িত্ব নিয়েছেন। তারা সংখ্যায় বেশি না হলেও তাদের কণ্ঠস্বর উচ্চ। এ কণ্ঠস্বরের মোকাবিলায় উদারনৈতিক সমাজের পক্ষের মানুষদের সোচ্চার হতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর চীন–মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও নাগরিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত সিটিজেনস প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
দেবপ্রিয় বলেন, ‘এ সময়কালে আমরা সবচেয়ে বড় আন্দোলন করলাম দেশ বৈষম্যবিরোধী হবে, কিন্তু আমরা কি সব বৈষম্যের কথা বলি? আমরা তো সব বৈষম্যের কথা বলি না। আমরা কোনো বৈষম্যের কথা বলি, কোনো বৈষম্যকে এড়িয়ে যাই।’
এ প্রসঙ্গে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘নারী ও পুরুষের বৈষম্যের কথা বলতে গিয়ে আমি তো লিঙ্গবৈচিত্র্যের কথা তো বলি না। আমি যখন জাতীয়তার প্রশ্নে কথা বলি, তখন ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বা তাদের জাতিসত্তার স্বীকৃতির কথা তো বলি না। যে সময়কালে আমরা নতুন আত্মস্বীকৃত জাতীয় সত্তাকে অনুসন্ধানে নেমেছি, তখন আমি বহুত্ব বা বহুধরনের মানুষ নিয়ে যে আমাদের বাংলাদেশ, সেটার কথা তো সেভাবে মনে করি না।’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘নারীর সব সুরক্ষার কথা কি আমরা বলি? তার আইনি সুরক্ষা বা আইনি উত্তরাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে কি আমরা সমানভাবে উচ্চারণ করতে পারি? কারণ হলো যে জিনিসটা আগে সে রকমভাবে ছিল না, এখন এসেছে। একধরনের নৈতিক খবরদারি করার দায়িত্ব কেউ কেউ নিয়েছেন।’
‘জাতীয় এসডিজি রিপোর্ট (ডিএনআর) ২০২৫ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশার অন্তর্ভুক্তি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক–শ্রোতাদের একাংশ। বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, ২০ মার্চ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে: রিপন
দেশ ও জাতি ভীষণ সংকট আর অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, সংস্কার নিয়ে সময় ক্ষেপণ করা হচ্ছে। কিছু কিছু গিনিপিককে একটু বড় জায়গায় পৌঁছানো, স্বাবলম্বিতা অর্জন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা একটি ষড়যন্ত্র। আমরা বলতে চাই, নির্বাচন প্রক্রিয়া বিলম্বিত না করে সোজাসুজি নির্বাচন করার জন্য যা যা করা দরকার সেই সংস্কারগুলো করেন।
মঙ্গলবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে-আইইবি'তে এক দোয়া ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা এবং পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে এক্স- জেসিডি ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (ইইবি) আয়োজিত এই দোয়া ও ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক প্রকৌশলী শোয়েব বাসরী হাবলু। এতে অন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইইবির সভপাপতি প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা প্রকৌশলী খালেদ হাসান ফাহিম প্রমুখ।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টার বক্তব্য উদ্বৃত্ত করে আসাদুজ্জামন রিপন বলেন, তিনি (আইন উপদেষ্টা) কিছু ছাত্রকে বলেছেন বাবারা তোমরা আরও ৫-১০ বছর থেকে দেশটাকে ঠিক করে দিয়ে যাও। আরও ৫ বছর! কেন? এটা ছাত্রদের মাঝে স্বৈরাচারী মনোভাব ঢুকিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। বিনা ভোটে বিনা নির্বাচনে জনগণের প্রতিনিধি ছাড়া একটি সরকার ৫/১০ বছর কি করে থাকে। এর আইনগত কোনো ভিত্তি নাই।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ পরিচালিত হওয়া সম্ভব হয় কিনা? একজন আইন উপদেষ্টা এটা কি করে বলেন, ভাবা যায়? কত বড় একটা ফেসিস্ট-আউট লুক। একটি ফেসিস্টকে তাড়িয়ে যদি আমরা আরেকটি ফ্যাসিবাদী ধারণা বহন করি! যদি একটি অনির্বাচিত সরকার ৫/১০ বছর থাকতে পারে-এই ধরণের আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি করে-আকাঙ্ক্ষাকে উসকে দেয়া এটা একটা জঘন্য অপরাধ। সরকার সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করার কথা বলেছে।
রিপন বলেন, আমরা এমন সরকার ব্যবস্থা চাই-যা গণতান্ত্রিকপন্থায় নির্বাচিত হবে। কিন্তু তা না করে সরকার শুধু প্রধানমন্ত্রী পরপর দুই বার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না এমন সংস্কারের কথা বলছে। এতে জনগণের লাভ কি। আমরা ৫ বছর পর কোনো মোঘল সম্রাট তৈরি করতে চাই না।