প্রতিবছরের মতো এবারও রমজান ও ঈদের কেনাকাটা আরও সহজ, সাশ্রয়ী ও আনন্দময় করতে দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ নিয়ে এসেছে অনলাইন ও অফলাইন কেনাকাটায় চার হাজার টাকা পর্যন্ত ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক অফার। সুপরিচিত ব্র্যান্ড থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনলাইন ও অফলাইন শপে পোশাক, জুতা, ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও অ্যাকসেসরিজ কেনা, পছন্দের রেস্টুরেন্টে ইফতার ও সাহ্‌রির অর্ডার, গ্রোসারি কেনা, ই-টিকেটিংসহ বিভিন্ন কেনাকাটায় বিকাশ পেমেন্টে উপভোগ করা যাবে ডিসকাউন্ট ও ক্যাশব্যাক অফারগুলো। উল্লেখ্য, সব কটি অফারই উপভোগ করা যাবে ১ এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত।

দেখে নেওয়া যাক উল্লেখযোগ্য অফারগুলো

সুপারস্টোরে ৩০০ টাকা ডিসকাউন্ট: রমজান মাসজুড়ে এবং ঈদুল ফিতর সামনে রেখে গ্রাহকেরা বিকাশ অ্যাপে ‘R2’ কুপন ব্যবহার করে দেশের শীর্ষস্থানীয় সুপারস্টোর মীনা বাজার, ইউনিমার্ট, ডেইলি শপিং, আগোরা, প্রিন্স বাজার, বেঙ্গল মিট, হোলসেল ক্লাব, আপন ফ্যামিলি মার্টসহ বেশ কিছু সুপারস্টোরে ১৫০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট পেতে পারেন। পাশাপাশি, ‘R3’ কুপন ব্যবহার করে সুপারস্টোর চেইন স্বপ্নে বিকাশ পেমেন্টে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিস্তরিত জানা যাবে এই লিংকে।

লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড: বিকাশ অ্যাপে ‘A1’ কুপন ব্যবহার করে ফুটওয়্যার ব্র্যান্ড অ্যাপেক্সে কেনাকাটায় মিলবে ২০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট। সারা লাইফস্টাইলে বিকাশ পেমেন্টে ‘S1’ কুপন ব্যবহার করে পাওয়া যাবে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট। পাশাপাশি আড়ং, বাটা ও ইজি ফ্যাশনে বিকাশ পেমেন্টে পাওয়া যাবে ২০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক। এ ছাড়া আরও শতাধিক লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডে ‘R1’ কুপন ব্যবহার করে বিকাশ পেমেন্টে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডগুলোর তালিকা জানা যাবে এই লিংকে।

রেস্টুরেন্ট: নির্ধারিত ফুডকোর্ট ও রেস্টুরেন্টে বিকাশ পেমেন্টে ‘F4’ কুপন ব্যবহার করে মিলবে ২০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট। এই ফুডকোর্ট ও রেস্টুরেন্টের তালিকায় আছে সিক্রেট রেসিপি, বিএফসি, বার্গার কিং, ডমিনোজ পিজ্জা, পেয়ালা, চিফস লাউঞ্জ ইত্যাদি। পাশাপাশি, ‘C4’ কুপন ব্যবহার করে ২০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ডিসকাউন্ট পাওয়া যাবে টেস্টি ট্রিট, শুমি’স হট কেক, কুপার’স, ওয়েল ফুড, কিভা হান, বাও, বারকোড ক্যাফে, মিঠাই, তাবাক, নর্থ এন্ডসহ বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফেতে। বিস্তরিত তথ্য জানা যাবে এই লিংকে।

অনলাইন শপিং: রমজানজুড়ে ঈদের আগে ন্যূনতম ৫৫০ টাকার কেনাকাটায় অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজে ১০ শতাংশ হারে সর্বোচ্চ ১০০ টাকার ডিসকাউন্ট ভাউচার পাওয়া যাবে। নির্দিষ্ট কিছু অনলাইন শপে বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটায় ২০০ টাকা পর্যন্ত ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে। ক্যাশব্যাক পাওয়া যাবে ফ্যাব্রিলাইফ, এক্সট্যাসি, লোটো, ফ্রিল্যান্ড, বেশি দেশি, শেভার শপ বাংলাদেশ, বিডিশপ, সেবা.

এক্সওয়াইজেড, পিকাবু, স্টার টেক অথবা, গরুর ঘাসসহ বেশ কিছু অনলাইন শপে। শপগুলোর বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে এই লিংকে।

ইলেকট্রনিকস: স্যামসাং-ইলেকট্রো, র‍্যাংগস ই-মার্ট, মিনিস্টার, স্টার টেক, রায়ানস, বেস্ট ইলেকট্রনিকস, এস্কোয়্যার ইলেকট্রনিকস, ট্রান্সকম ডিজিটাল, সিঙ্গার, সনি র‍্যাংগসসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিকস ব্র্যান্ডের যেকোনো পণ্য কেনাকাটায় বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটায় মিলবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা ক্যাশব্যাক। এ ছাড়া ওয়ালটন প্লাজায় ন্যূনতম ১০ হাজার টাকায় কেনাকাটায় ‘W1’ কুপন ব্যবহার করে বিকাশ পেমেন্টে পাওয়া যাবে ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক এবং পরবর্তী কেনাকাটার জন্য ১০০ টাকার ডিসকাউন্ট কুপন। আর অপ্পো ও শাওমি স্টোরে ১০ হাজার টাকা বা তার বেশি কেনাকাটায় মিলবে ২০০ টাকা ক্যাশব্যাক।

বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে।

ই-টিকেটিং: গ্রাহকেরা ঈদের ছুটির আগে বিকাশ পেমেন্টে ন্যূনতম এক হাজার টাকার বাস টিকিট বুকিংয়ে পেতে পারেন ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক। অফারটি উপভোগ করা যাবে ই-টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম ‘যাত্রী’ এবং ‘বিডিটিকেটস’-এ। পাশাপাশি শ্যামলী পরিবহন, দোয়েল এক্সপ্রেস, ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেস এবং লন্ডন এক্সপ্রেসের বাস টিকিট বুকিংয়েও এই অফারটি উপভোগ করা যাবে।

বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে এই লিংকে।

এই রমজানে এবং ঈদের সময় বিকাশ পেমেন্টে কেনাকাটার সব ক্যাম্পেইন সম্পর্কে জানা যাবে এই লিংকে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০০ ট ক ১০০ ট ক রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বাঙালির প্রাণের উৎসব আজ

রৌদ্রকরোজ্জ্বল বৈশাখী দিন ফিরে এল আবার। সুরে-বাণীতে, সাজসজ্জায়, আহারে-বিহারে, আনন্দ-উল্লাসে আজ সোমবার বাংলার নতুন বছর ১৪৩২ বরণ করে নেবে ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব মানুষ। পুরোনো ব্যর্থতা ঝেরে ফেলে সবার কল্যাণ কামনায় উদ্‌যাপিত হবে নববর্ষের উৎসব। নববর্ষকে আবাহন জানিয়ে বহুকণ্ঠে ধ্বনিত হবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো...।’

বাংলা নববর্ষের চেয়ে বড় কোনো সর্বজনীন উৎসব দেশে আর নেই। এ কারণে মানুষে মানুষে মহাপ্রাণের মিলন ঘটানোর বর্ষবরণের এই উৎসব গভীর তাৎপর্যময় হয়ে আছে আমাদের জীবনে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর এবার নতুন পরিবেশে বর্ষবরণ উৎসব বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য তাই ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।

মূল প্রতিপাদ্য সামনে রেখে জাতীয়ভাবে রাজধানীসহ সারা দেশে ব্যাপক আয়োজনের মধ্য দিয়ে নববর্ষ উদ্‌যাপনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। উৎসব অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে সব জাতিসত্তার প্রতিনিধিদের নিজ নিজ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমনার বটমূলে বর্ষবরণের ঐতিহ্যবাহী অন্যতম প্রধান অনুষ্ঠান আয়োজন করবে ছায়ানট।

রাজধানীর বর্ষবরণের অন্যতম বর্ণাঢ্য আয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শোভাযাত্রা। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র বদলে এবার ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’ নামকরণ করা হয়েছে। এই শোভাযাত্রার যে মোটিফগুলো তৈরি করা হয়েছিল, তার মধ্যে

২০ ফুট উচ্চতার ‘স্বৈরাচারের মুখাকৃতি’ নামের মোটিফটি শনিবার ভোররাতে কে বা কারা আগুনে পুড়িয়ে দেয়। চারুকলা অনুষদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পরও তাদের শোভাযাত্রা বর্ণাঢ্যভাবেই পথে নামবে পয়লা বৈশাখ সকালে।

পয়লা বৈশাখের উৎসব গত শতকের পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে বাঙালি জাতিসত্তার বিকাশে অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বাঙালি জাতীয়তাবোধের যে উন্মেষ ঘটেছিল, তার বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে সাংস্কৃতিক আন্দোলন। আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তার প্রতিবাদে বিপুল উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বৈশাখী উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। রমনার বটমূলে ১৯৬৭ সালে ছায়ানট প্রথমবারের মতো আয়োজন করে তাদের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান। কালক্রমে বর্ষবরণ উৎসবে যুক্ত হয় আরও অনেক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। চারুকলার শোভাযাত্রা বর্ণাঢ্য করে তোলে আয়োজন। বহু সংগঠনের অংশগ্রহণে বর্ষবরণ বহু প্রাণের বিপুল উৎসবে পরিণত হয়।

বাংলা বর্ষবরণের উৎসব যত আড়ম্বর, উৎসাহের সঙ্গে উদ্‌যাপিত হয়, ব্যবহারিক জীবনে বাংলা সনের প্রয়োগ তেমন ব্যাপক নয়। প্রাত্যহিক জীবনের কাজকর্ম, শিক্ষা, ব্যবসা—সবই গ্রেগরিয়ান দিনপঞ্জি অনুসরণ করেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। তবে বাংলা দিনপঞ্জি পুরোপুরি অব্যবহৃতও নয়। কৃষকেরা চাষাবাদ, ফসল রোপণ, ফসল তোলার ক্ষেত্রে বাংলা সনের হিসাব অনুসরণ করেন। অনেক ধর্ম সম্প্রদায়ও তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের জন্য বাংলা বর্ষপঞ্জি ব্যবহার করে। কাজেই সমাজে নানা ক্ষেত্রে বাংলা বর্ষপঞ্জির প্রয়োগ রয়েছে। সে কারণে নতুন বছর শুরু হলে নতুন প্রত্যাশা নিয়েই মানুষ তাকে বরণ করে নেয়।

নতুন বছরকে বরণ করার রীতি পৃথিবীর বহু দেশের সংস্কৃতিতে বহমান। আমাদের দেশে বছরের পয়লা দিনটিকে কেন্দ্র করে এই উৎসবে তুলে ধরা হয় দেশের গৌরবময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। রাজধানীতে রমনার বটমূলে এবার ৫৮তম বারের মতো ছায়ানট আয়োজন করবে তাদের বর্ষবরণের প্রভাতি অনুষ্ঠান। এবার তাদের অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য ‘আমার মুক্তি আলোয় আলোয়’। সকাল ৬টা ১৫ মিনিটে ভৈরবীতে রাগালাপের মধ্য দিয়ে শুরু হবে প্রায় দুই ঘণ্টার এ অনুষ্ঠান।

এ ছাড়া ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চে সংগীত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুরের ধারার আয়োজনে সকাল ৬টায় শুরু হবে সহস্রকণ্ঠের গানে গানে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

চারুকলা অনুষদের আনন্দ শোভাযাত্রা শুরু হবে সকাল নয়টায়। আগেই জানানো হয়েছে, এবার শোভাযাত্রায় বিভিন্ন জাতিসত্তার প্রতিনিধিরা তাঁদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীকগুলো নিয়ে অংশ নেবেন। শোভাযাত্রাটি টিএসসি, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র, দোয়েল চত্বর, বাংলা একাডেমি হয়ে আবার চারুকলার সামনে এসে শেষ হবে।

সকাল থেকেই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হবে বিসিকের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী লোক ও কারুশিল্প মেলা। এ ছাড়া বেলা সাড়ে তিনটা থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শুরু হবে বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের আয়োজনে ‘ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখীর ঝড়’ প্রতিপাদ্য নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে থাকবে একক ও দলীয় আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনা।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বেলা তিনটা থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে চলবে বৈশাখী ব্যান্ড শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় চীনা কারিগরি দলের পরিবেশনায় শুরু হবে বর্ণাঢ্য ড্রোন শো।

এসব প্রধান অনুষ্ঠান ছাড়াও অনেক এলাকাভিত্তিক এবং বহুতল আবাসিক ভবনগুলোতে ছোট ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। বরাবরের মতো ট্রাকে ভ্রাম্যমাণ মঞ্চ করে অনেক সংগঠন শহর ঘুরে সংগীত, আবৃত্তি পরিবেশন করবে।

রাজধানীর পাশাপাশি সারা দেশেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হবে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও প্রবাসী বাঙালিরা নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেবেন। তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব অনুষ্ঠানের সঙ্গেও দেশবাসীর এক রকমের সংযোগ ঘটে। এমন নানা আয়োজন উদ্যোগের ভেতর দিয়ে কালক্রমে বাংলা নববর্ষের উৎসব আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠছে। প্রসারিত হচ্ছে বিপুল পরিসরে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ