ভোলাগঞ্জের সেই বাঙ্কারে পাথর উত্তোলনকালে শ্রমিকের মৃত্যু, আহত ৪
Published: 20th, March 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জের আলোচিত রেলের সংরক্ষিত (বাঙ্কার) এলাকা থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে মারা গেছেন এক শ্রমিক। আহত হয়েছেন আরও চারজন। বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পাথর উত্তোলন করার সময় গাছ পড়ে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিক কয়েছ আহমদ নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুড়ি উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মোনরাজ মেম্বারের ছেলে। আহতরা হলেন- একই এলাকার সবুজ মিয়া, সুজাত আহমদ, ইমরান ও কোম্পানীগঞ্জের শিলাকুড়ি গ্রামের সুরুজ আলী। তাদেরকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান হতাহতের বিষয়টি স্বীকার করে জানিয়েছেন, নিহতের পরিবার অভিযোগ দিলে মামলা নেওয়া হবে।
রেলওয়ের সংরক্ষিত ব-দ্বীপ আকারের বাঙ্কার এলাকা থেকে এক সময় পাথর ক্রাশিং করে রজ্জুপথে সুনামগঞ্জের ছাতকে প্রেরণ করা হত। গত এক দশক ধরে রজ্জুপথ বা রোপওয়ে বন্ধ হওয়ার পর সেখানকার সম্পাদের দায়িত্ব পালন শুরু করে রেলের নিরাপত্তাবাহিনী (আরএনবি)। সরকার পতনের পর বাঙ্কারের টিলা রকম ভূমি থেকে রাতের আধারে শুরু হয় পাথর লুট। প্রায়ই শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও গোপনে তাদের মরদেহ দাফন করা হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গত ৬ মাসে এ নিয়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হলো। প্রতিদিন রাতে শতশত নৌকাযোগে বাঙ্কারের পাথর লুট করে নিচ্ছে শ্রমিকরা। অভিযান করতে গিয়ে হামলারও শিকার হয়েছেন এসিল্যান্ড। গত ৬ মাসে সংরক্ষিত এলাকাটি বিরাণভূমিতে পরিণত করেছে পাথরখেকোরা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কিস্তিতে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল, এসআই প্রত্যাহার
মামলার আসামিকে গ্রেপ্তার না করতে কয়েক দফায় লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে সিলেটের বিশ্বনাথ থানার এসআই মো. আলীম উদ্দিনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ঘুষ নেওয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাকে বিশ্বনাথ থানা থেকে সিলেট পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
জানা গেছে, অভিযুক্ত এসআই আলীম উদ্দিন ঘুষ নিয়েও কথামতো কাজ করেননি। যে কারণে ঘুষের টাকা ফেরত চান ভুক্তভোগী। কিন্তু বিষয়টি বারবার অস্বীকার করেন এসআই আলীম। এর আগে, ঘুষ লেনদেনের পরপর দুই দফার ভিডিও গোপনে ধারণ করে রাখেন ফয়সল নামের ওই ভুক্তভোগী। সেই ভিডিওটি মঙ্গলবার বিকেল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, থানার বৈঠকখানায় বসে গুনে দেওয়া ঘুষের কিস্তি হাসিমুখে পকেটে রাখছেন এসআই আলীম। ভিডিওতে তিনি বলছেন, চার্জ শিটের জন্য লাগবে পুরো ২০ হাজারই। অন্য ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার এমসির জন্য অন্য কিস্তির পুরো ২০ হাজারের জন্য দেন-দরবারও করছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২০ আগস্ট উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের আনরপুর গ্রামের মকবুল আলী ও তার প্রতিপক্ষ জুনেদ হোসেন পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ২০ আগস্ট মকবুল আলী মামলা করেন। আর ওই মামলার তদন্তভার পান এসআই আলীম। এরপর আসামি জুনেদ মামলার বিষয়টি দেখভালের জন্য দাউদপুর গ্রামের ফয়সল আহমদকে দায়িত্ব দেন। এর সুবাধে তিনি মামলার বিষয়ে এসআই আলীমের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করেন। একপর্যায়ে মামলার বিভিন্ন বিষয়ে ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দেন এসআই আলীম। পরবর্তীতে একাধিক সময়ে ২০ হাজার করে ৪ দফা ও ১০ হাজার করে ২ দফা মোট এক লাখ টাকা কৌশলে আদায় করেন তিনি। কিন্তু টাকা নিয়ে কথা মতো কাজ না করে উল্টো ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকেও মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন এসআই আলীম। এরপর ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদ ঘুষের ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেন এবং সিলেট জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।
ভুক্তভোগী ফয়সল আহমদের অভিযোগ, সরলতার সুযোগ নিয়ে হীন উদ্দেশ্যে মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক পেতে দারোগা আলীম তাকে বোকা বানিয়ে লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে মঙ্গলবার তিনি সিলেটের পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি এসআই আলীম উদ্দিন। তবে, বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের সত্যতা এবং ভিডিও ভাইরালের পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এসআই আলীম উদ্দিনকে ক্লোজড করা হয়েছে।