অনিয়মের অভিযোগে মাদারীপুরে গণপূর্ত অধিদপ্তরে দুদকের অভিযান
Published: 20th, March 2025 GMT
মাদারীপুরে সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণে অনিয়মসহ একাধিক অভিযোগে গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাদারীপুর কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার সকালে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামানের নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়।
গণপূর্ত ও দুদকের অভিযান সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত ব্যয়ে মাদারীপুর সরকারি সমন্বিত ১০তলা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পায় দুদক। এ ছাড়া মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতাল নির্মাণ ও মালামাল ক্রয়ে ব্যাপক অভিযোগ ওঠে। প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে গণপূর্ত অধিদপ্তর মাদারীপুর কার্যালয়ে এ অভিযান চালানো হয়। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে বার্ষিক মেরামত না করে অতিরিক্ত বিল তোলেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। এমনকি গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মরত ব্যক্তিরা নিজেদের ঘনিষ্ঠজনদের নামে লাইসেন্স ব্যবহার করে এই দপ্তরের কাজ বাস্তবায়ন করে বিল তোলেন।
সূত্র জানায়, অনিয়মে সরাসরি জড়িত ছিলেন সাবেক একজন নির্বাহী প্রকৌশলী। বিশেষ সুবিধা দিতে ঠিকাদারদের সঙ্গে যোগসাজশে বিপুল পরিমাণ ঘুষ গ্রহণ করেছেন সাবেক এই কর্মকর্তা। অভিযানে গণপূর্ত কার্যালয় থেকে সংশ্লিষ্ট কাজের নথি জব্দসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে দুদকের দল।
দুদকের মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.
গণপূর্তের মাদারীপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহরিয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমন্বিত ১০তলা ভবন নির্মাণে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির সুযোগ নেই। দুদক কর্মকর্তারা তাঁদের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে আমাদের অফিসেও অভিযান চালিয়েছেন। তাঁরা যেসব নথিপত্র চেয়েছেন, আমরা সবকিছুই সরবরাহ করেছি। আশা করছি, দুদক তথ্য যাচাই-বাছাই করলে বিষয়টি বুঝতে পারবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভবন ন র ম ণ সমন ব ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গরমে লোডশেডিং হলে আগে ঢাকায় হবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, গ্রীষ্ম মৌসুমে যাতে লোডশেডিং কম হয় সেজন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে সরকার। যদি লোডশেডিং হয়, আগে ঢাকা শহরে হবে। পরে দেশের অন্য জায়গায় হবে। আগের মতো শুধু গ্রামে হবে না।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন তিনি।
গ্রীষ্ম মৌসুমে বিদ্যুতের লোডশেডিং সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, দুইটি কারণে বিদ্যুৎ চলে যেতে পারে। উৎপাদন কম হলে যদি লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন সেটি লোডশেডিং। আর ঝড় বৃষ্টিসহ কোনো কারণে যদি ফিউজ চলে যায়, ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে সেটি বিদ্যুৎ বিভ্রাট।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা অনেক বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। রমজানের মতো নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়তো সম্ভব হবে না। তবে আমরা চেষ্টা করবো। তবে লোডশেডিং যদি হয়, এমন হবে না যে শুধু গ্রামে লোডশেডিং হবে। ঢাকাতে প্রথমে লোডশেডিং হবে। পরে অন্য জায়গায় হবে।
তিনি বলেন, তাপমাত্রা বাড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে। এ জন্য আমরা এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রিতে রাখতে বলেছি। এটা রাখতে পারলে এক-দুই হাজার চাহিদা কমবে। এ জন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান উপদেষ্টা।
খাল-নালায় ময়লা ফেললে জেল-জরিমানা
এবার চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা আগের তুলনায় অনেকাংশে কমবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। বৃষ্টির পরিমাণ কেমন হবে তা একটা বড় ফ্যাক্টর। তবে এই দুর্ভোগ এবার অনেকটা লাঘব হবে।
জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের অগ্রগতি আছে জানিয়ে তিনি বলেন, নগরের জলাবদ্ধতা নিরসন কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। তবে একটা জিনিস দেখে খারাপ লাগছে, কিছুদিন আগে খাল পরিষ্কার করা হলেও সেখানে এখন আবার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়েছে। এতে মনে হচ্ছে এই কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে পারি নাই। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হবে। মানুষকে সচেতন করা হবে। ময়লা রাখার বিন দেওয়া হবে। এরপরেও যদি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় তাহলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানাসহ শাস্তি দেওয়া হবে।
কক্সবাজার সড়ক ছয় লেন হবে
এদিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক প্রশস্ত করা হবে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই মহাসড়ক ছয় লেন করা হবে। তবে তা সময়সাপেক্ষ। এখানে জমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সব মিলিয়ে দুই-তিন বছরের আগে হবে না। তবে এই সময় সড়কে দুর্ঘটনারোধে কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অংশে সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। সতর্ক করে সাইন পোস্ট দেওয়া হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়ানো হবে। চালকদের সচেতন করা হবে।
এই সময় সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী জানান, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীত করার জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। এরপর ডিসেম্বরে ডিপিপি প্রণয়ন করা হবে। আগামী জানুয়ারিতে জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণ চুক্তি করার কথা রয়েছে।
রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা
এদিকে ব্রিফিংয়ের সময় রেলওয়ে প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, রেলের শত্রু রেলের কর্মীরা। সিটি করপোরেশন রাস্তা করতে চাইলে, ওয়াসা পানি দিতে চাইলেও রেল নিতে চায় না। তবে এখন থেকে তা হবে না। সিটি করপোরেশন সিআরবিতে রাস্তা করে দেবে। ওয়াসা পানি সরবরাহ করবে। রেলের কাজ হচ্ছে ট্রেন পরিচালনা করা। প্রতিনিয়ত সেবার মান বাড়ানোর কাজ করতে হবে। রাস্তা করা ও পানি সরবরাহ করা রেলের কাজ নয়। এসব করতে গিয়ে রেলের দক্ষতা নষ্ট হয়। অর্থের অপচয় হয়।
রেল উপদেষ্টা বলেন, রেলের এক টাকা আয় করতে আড়াই টাকা খরচ হয়। এভাবে হলে চলবে না। এটি দুই টাকার নিচে নিয়ে আসতে হবে। আর ট্রেনের ইঞ্জিন ও কোচ সংকটে সরকার কাজ করছে।
এ সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।