আসামির বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই, রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত
Published: 20th, March 2025 GMT
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার মাতুয়াইল এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জেরে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় আসামি মো. রফিকুল ইসলামকে (২৭) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আসামি রফিকুল গাইবান্ধার ফুলছড়ি থানার গোপিনাথচরের আবুল কালামের ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মোছাম্মৎ রোকশানা বেগম হেপীর আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয়মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামি যেভাবে একটি ছোট নিরপরাধ শিশুকে (৭) নৃশংস ও পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করেছে তাতে তার এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার এবং পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণের কোনো অধিকার নেই। কারণ তার কাছে কোনো নারী ও শিশু নিরাপদ নয়। তাকে এই শাস্তির মাধ্যমে এই ট্রাইব্যুনাল সমাজের সকলের মাঝে এই দৃষ্টান্ত ও সংবাদ পৌঁছে দিতে চান যে, নারী ও শিশুদের প্রতি এই জাতীয় নৃশংস অপরাধের বিচার হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদীর সাত বছর বয়সী মেয়ে ২০১৭ সালের ১ অক্টোবর ভোর ৬টায় বাড়ি পাশে বাথরুমে যায়। কিন্তু আধাঘণ্টা পরও ফিরে না আসায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা-মা তাকে খুঁজতে থাকে। পরে আসামি রফিকুল ভুক্তভোগী শিশুর বাবাকে ফোন করে জানায় যে, শিশুটি তার কাছেই আছে। এরপর তারা আসামির বাড়ি গিয়ে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পায়। পরে পুলিশের সহায়তায় আসামির ঘরের তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর বাবা যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
পরে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন আসামি রফিকুল ভুক্তভোগী মেয়েকে তার ঘরে নিয়ে যায়। তারপর সে ওড়না দিয়ে ভিকটিমের মুখ পেঁচিয়ে ধরে। ভিকটিম চিৎকার দিতে গেলে বিবাদী ভিকটিমের মুখ চেপে ধরে। এরপর আসামি রফিকুল পূর্ব শত্রুতার জেরে ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর মুখে কম্বল চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে শিশুটিকে হত্যা করে রফিকুল।
২০১৯ সালের ১৫ মে মামলাটির চার্জ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন আদালত। মামলার বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যাম্পিয়নস লিগে ৮ বছর আগের স্মৃতি ফিরিয়ে আনলেন রোনালদো
উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ২০১৬/১৭ মৌসুমের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের খেলা চলছিল। রিয়াল মাদ্রিদের ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো নগর প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করার পর এলইডি এডভারটাইজিং বোর্ডের উপর বসে পড়লেন পর্তুগিজ মহাতারকা। মাঝে প্রায় ৮ বছর অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। এরপর আবারও সেই চ্যাম্পিয়নস লিগেই একই দৃশ্যের অবতারনা করলেন পাঁচ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী ফুটবলার। তবে উয়েফা না, এফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে জাপানের ইয়োকোহামা এফ মারিনোসকে কোয়ার্টার ফাইনালে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় আল নাসর। সৌদি প্রো লিগের তৃতীয় দল হিসেবে তারা উঠে গেল এফসি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে।
এর আগে, রিয়াদ মাহরেজ ও রবার্তো ফিরমিনোর গোল সৌদি প্রো লিগের আল আহল থাইল্যান্ডের বুড়িরাম ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জয় পায়। এই টুর্নামেন্টের শেষ তিন রাউন্ড জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে আল আহলি কার্যত স্বাগতিক হিসেবে খেলছে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় কিং আবদুল্লাহ স্পোর্টস সিটিতে। এরপর একই ভেন্যুতে রিয়াদের আরেক দল আল নাসর জয় পায়।
আরো পড়ুন:
গার্দিওয়ালার ভয়, চ্যাম্পিয়নস লিগে জায়গা হারালে বড় ট্রান্সফার করতে পারবেন না
সান সিরোতে ইন্টারের বায়ার্ন পরীক্ষা
এফ মারিনোসের বিপক্ষে প্রথমার্ধের সাত মিনিট বাকি থাকতে রোনালদো গোল করেন। মার্সেলো ব্রোজোভিচের ডিফ্লেক্টেড শট গোলকিপার পার্ক ইল গিউ এক হাতে ঠেকাতে গিলে, বল উপরে উঠে যায়। রোনালদো ছয় গজ দূর থেকে চমৎকার ভলিতে সেটি জালে পাঠিয়ে দেন।
রোনালদো বর্তমানে সৌদি প্রো লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা। এফসি চ্যাম্পিয়নস লিগে সাত ম্যাচে আট গোল করেছেন। এক গোল বেশি করে যৌথভাবে শীর্ষে আছেন রিয়াদ মাহরেজ, সালেম আল দাওসারি, অ্যান্ডারসন ও জাসির আসানি।
রোনালদো আল নাসরের প্রথম বড় সুযোগ তৈরি করেন। তিনি একটি ব্যাকহিল করে ব্রোজোভিচকে বল দেন। তবে ক্রোয়াট মিডফিল্ডারের শট পার্ক ইল গিউ প্রতিহত করেন। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে, শীতকালীন সাইনিং জন দুরানের একটা শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে ২৭ মিনিটে এই কলম্বিয়ান প্রথম গোল এনে দেন আল নাসরকে।
মিনিট চারেক পর ওটাবিওর পাস থেকে সাদিও মানে ব্যবধান দ্বিগুন করতে ভুল করেননি। এরপর ম্যাচের ৩৮ মিনিটে রোনালদো গোল করে সেই বিখ্যাত উদযাপন করেন।
৪৯ মিনিটে রোনালদো নেতৃত্বাধীন একটি কাউন্টার অ্যাটাকে দুরান তার দ্বিতীয় গোলটি করেন। কলম্বিয়ান এই ফরোয়ার্ড রিবাউন্ড পেয়ে সহজেই গোল করেন এবং আল নাসরকে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন। ৬৬ মিনিটে রোনালদোকে তুলে নেন কোচ স্তেফানো পিওলি। পরে এফ মারিনোসের ওয়াতানাবে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন, ফলে ১০ জন নিয়ে ম্যাচ শেষ করে জাপানের ক্লাবটি।
আল নাসর বুধবার (৩০ এপ্রিল) সেমিফাইনালে মাঠে নামবে। তাদের প্রতিপক্ষ কাতারের আল সাদ ও জাপানের কাওয়াসাকি ফ্রন্টেলের মধ্যে জয়ী দল। অন্য সেমিফাইনাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে চারবারের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন আল হিলাল সৌদির আরেক ক্লাব আল আহলির মুখোমুখি হবে।
ঢাকা/নাভিদ