রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) প্রায় ২ হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিয়ে গণসেহরির আয়োজন করেছে শাখা ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার(২০ মার্চ) রাত আড়াইটায় শেকৃবির টিএসসি কমপ্লেক্সে এ গণসেহরির আয়োজন করে সংগঠনটি। এছাড়া নারী শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রদল কর্মীদের মাধ্যমে পার্সেলের ব্যবস্থা করে তারা।
শেকৃবি শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম জানান, এ ধরনের আয়োজন ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতার রূপ নিক। ভবিষ্যতে শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতো সংগঠনগুলোরও এমন আয়োজন করা উচিত।
শেকৃবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পরামর্শে তারা প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে গণ সেহরির আয়োজন করেন। শিক্ষার্থীদের অনুরোধে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ১,৮০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নিরাপত্তা রক্ষীর জন্য সেহরির ব্যবস্থা করা হয়, যেখানে ২,০০০-এর বেশি মানুষ অংশ নেয়। ছাত্রীদের খাবার তাদের হলে পৌঁছে দেওয়া হয়।
শাখা সভাপতি আহমেদুল কবির তাপস জানান, গত জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা প্রার্থনায় তারা গণ সেহরির আয়োজন করেছেন। এ আয়োজনের আরেকটি উদ্দেশ্য ছাত্রদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও ঐক্য গড়ে তোলা।
তিনি জানান, ছাত্রীদের জন্য আলাদা পার্সেলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক ছাতার নিচে নিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তারেক রহমানের পরিকল্পনার আলোকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এটি ছাত্র সংগঠনের জন্য একটি নতুন দৃষ্টান্ত হতে পারে।
ঢাকা/মামুন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ২০ সংগঠনকে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানমঞ্চে তুলতে প্রশাসনের নিষেধ
‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ অভিযোগ তুলে প্রায় ২০টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ডিসি হিলের পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে মঞ্চে তুলতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসন থেকে সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সংগঠকদের কাছে এই তালিকা পাঠানো হয়। পরে ফোন করে তালিকাভুক্ত সংগঠনগুলোকে আগামীকাল সোমবারের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার জন্য বলা হয়।
এর আগে সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধন করে। ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের নেতৃত্বে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ এই মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মূলত জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস), বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। জেলা প্রশাসক বরাবরে দেওয়া স্মারকলিপিতে এই সংগঠনগুলোকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনের বিষয়ে জাসাস চট্টগ্রামের সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ (শিপন) প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্টের দোসররা নববর্ষ অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। আমরা এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছি। ডিসিকে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। তারা নববর্ষের অনুষ্ঠান করতে পারবে না।’
সংগঠনগুলোর মধ্যে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, নরেন আবৃত্তি একাডেমি, খেলাঘর, রক্তকরবী, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ড্যান্স, ঘুঙুর নৃত্য একাডেমি অন্যতম।
ডিসি হিলে আগামীকাল সকাল সাড়ে ৬টা থেকে নববর্ষ বরণ অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে প্রায় ৫৫টি সংগঠন সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য নাম নিবন্ধন করেছে। শুরু থেকে ডিসি হিলে অনুষ্ঠানের অনুমতি নিয়েও দেনদরবার করতে হয় অনেক। এখন নতুন করে ২০টি সংগঠনকে বাদ দিতে বলায় বিপাকে পড়েছেন আয়োজকেরা।
সম্মিলিত পয়লা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার আমাকে একটা তালিকা পাঠান। পরে ফোন দিয়ে বলা হয় এই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তোলা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। তারা নাকি ফ্যাসিস্টের দোসর।’
সুচরিত দাশ আরও বলেন, ‘স্টাফ অফিসারকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি কোনো সংগঠনকে বাদ দিতে আমরা পারব না। প্রয়োজনে ডিসি হিলের অনুমতি বাতিল করে চিঠি দিয়ে দিক আমাদের। কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তাকে মঞ্চে তুলব না। কিন্তু সংগঠন বাদ দিতে পারব না।’
জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার মো. ইস্রাফিল জাহান তালিকা পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক ভালো বলতে পারবেন।
সহকারী কমিশনার শাহীদ ইশরাক প্রথম আলোকে বলেন, নাগরিক কমিটি, রাজনৈতিক দলসহ সুশীল সমাজ থেকে কিছু সংগঠনের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। তাদের অনুষ্ঠান করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়ে মানববন্ধনও হয়েছে। তাদের একটি তালিকা আয়োজকদের দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা উদীচী কীভাবে ফ্যাসিস্টের দোসর হলো এমন এক প্রশ্নে শাহীদ ইশরাক বলেন, ‘আসলে বিষয়টা বিব্রতকর। আমরা নানামুখী ঝামেলায় আছি।’
তবে বর্ষবরণের অপর অনুষ্ঠান সিআরবির শিরীষতলার আয়োজকদের কাছে কোনো সংগঠনের তালিকা পাঠানো হয়নি বলে জানা গেছে। এই সংগঠনগুলোর অনেকে ওখানেও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেবে।