ধর্ষণ ও সহিংসতার ঘটনায় শাস্তি না হলে অপরাধপ্রবণতা বাড়বে: নাহিদ ইসলাম
Published: 20th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ ও সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের মেয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি দ্রুত কার্যকর করতে হবে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপতালের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
পটুয়াখালীর দুমকিতে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৮) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ছাত্রী পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক অবস্থা জানতে নাহিদ ইসলাম দুপুরে ওই হাসপাতালে যান। তিনি হাসপাতালের উপপরিচালক দিলরুবা ইয়াসমিনের কক্ষে গিয়ে ছাত্রীর সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এ ছাড়া তিনি ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। পরে নাহিদ ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে ভুক্তভোগী সেই কলেজছাত্রীর খোঁজখবর নিলেন নাহিদ ইসলাম২ ঘণ্টা আগেএ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, দেশে যতগুলো ধর্ষণ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, ‘সেসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃশ্যমান শাস্তি দেওয়া না হলে অপরাধপ্রবণতা বাড়তে থাকবে। বতর্মান সরকার ধর্ষণের ঘটনায় আইন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে পটুয়াখালীর ঘটনাসহ অন্য ধর্ষণের বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। ঘটনার তদন্ত নিয়ে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে না। এ তদন্তে আমরা পুলিশ বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা করব।’
আরও পড়ুনপটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে আটক ১১৭ ঘণ্টা আগেসংবাদ সম্মেলন শেষে নাহিদ ইসলাম ওই ছাত্রীর গ্রামের বাড়ি দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেখানে তিনি ছাত্রীর বাবা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের কবর জিয়ারত করবেন। নাহিদ ইসলামের সঙ্গে আছেন জাতীয় নাগরিক পাটির মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসুদ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্যসচিব মুজাহিদুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব জাহিদ আহসান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ঘটন য় র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
বিগত ১৬ বছর নববর্ষে বিদেশি রাষ্ট্রেরও প্রভাব আমরা দেখেছি: সারজিস আলম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘বিগত ১৬ বছরে যে বাংলা নববর্ষগুলো ছিল, এই নববর্ষে শুধু দলীয় প্রভাব নয়; বরং বিদেশি রাষ্ট্রেরও প্রভাব আমরা দেখেছি। তাদের মতো করে দলের যেমন ছিল, বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্সির ওই রকম করে কনসেপ্ট তৈরি করে এই নববর্ষগুলোর বিভিন্ন ধরনের সেগমেন্ট তৈরি করা হতো, বিভিন্ন ধরনের অপসংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়া হতো।’
আজ রোববার দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার চাকলাহাট ইউনিয়নের শিংরোড নায়েকপাড়া এলাকায় আন্দোলনে নিহত সাগর রহমানের কবর জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথাগুলো বলেন। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন ঢাকার মেরুল বাড্ডা থানার সামনে মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিতে মারা যান সাগর রহমান। আজ তাঁর কবর জিয়ারত শেষে সাগরের মা–বাবাসহ স্বজনদের খোঁজখবর নেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি, এই যে ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষ থেকে বা ক্ষমতার জায়গা থেকে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া, এটি কখনোই সাসটেইনেবল নয়। এটি কখনো আমরা প্রত্যাশাও করি না। আমরা মনে করি যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে ততটুকু স্পেস বাংলাদেশের মানুষকে অলরেডি দিয়েছে যে আমরা আমাদের জায়গা থেকে যা ধারণ করি, আমরা সেটাই প্রকাশ করি এবং করতে পারি।’
এনসিপির এই নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে আগামীতেও যারাই এই বাংলাদেশের সরকারের দায়িত্বে থাকুক না কেন, তারা যেন ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়ার এই সাহসটুকু না করে এবং তাদের জায়গা থেকে বরং আমাদের প্রকৃত যে সংস্কৃতি, সেটাকে ধারণ করার জন্য তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা যেন তারা রাখে।’
সাগরের কবর জিয়ারত নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বড় দায়বদ্ধতা যে আমাদের যারা শহীদ পরিবার আছে কিংবা আমাদের যারা আহত যোদ্ধা আছেন, তাঁদের পরিবারের সঙ্গে থাকা। শহীদ পরিবারটা যেন আমাদের পরিবার হয়ে ওঠে। এটা সত্য যে এক-দেড় হাজার পরিবারের কাছে আমরা চাইলেই যেতে পারি না। কিন্তু আমরা যখন যে এলাকায় যাই, তখন ওই এলাকায় যে শহীদ পরিবার থাকে, তাদের বাসায় যাওয়ার এবং খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করি। আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু করা সম্ভব, সেটা আমরা চেষ্টা করি।’
গাজায় গণহত্যার বিষয়ে সারজিস বলেন, ‘আমরা পুরো বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বকে একটি বার্তাই দিতে চাই, ফিলিস্তিনের গাজায় মজলুম মুসলিম ভাইদের সঙ্গে যেটা হচ্ছে, এটা একটা গণহত্যা। এই গণহত্যার যে রক্ত, এই রক্তের দাগ নেতানিয়াহুর হাতে আছে, এই রক্তের দাগ নেতানিয়াহুকে যারা বিভিন্নভাবে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে, এটা দেশ হতে পারে, ব্যক্তি হতে পারে, তাঁদের প্রত্যেকের গায়ে আছে। আমরা বাংলাদেশের একজন মানুষ হিসেবে পুরো পৃথিবীর কাছে এই আহ্বান জানাতে চাই যে আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় যে ভাইয়েরা আছেন, তাঁদের পক্ষে কথা বলা শুরু করুন।’