বৃদ্ধরা জানালেন, তরুণ বয়সে যেসব কাজ না করার জন্য তাঁরা এখন আক্ষেপ করেন
Published: 20th, March 2025 GMT
২০ বছর বয়স থেকে মোটামুটিভাবে একজন মানুষ তাঁর নিজের দায়িত্ব নিয়ে নেন। নিজের কর্মকাণ্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকে। এই বয়সের আগপর্যন্ত একই অর্থনৈতিক বলয়ে থাকা সবার জীবন কমবেশি একই ছন্দে চলতে থাকে। বলা হয়, বয়স কুড়ি পেরোলে আপনার নিজেকে প্রস্তুত করার সময়। আর ত্রিশের কোঠাকে বলা হয় উপার্জন ও অর্জনের সময়। মোদ্দাকথা হলো, এই দুই দশক আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কেননা, এই দুই দশক নির্ধারণ করে দেয় আপনার পরবর্তী জীবন কেমন যাবে।
‘ডোজ অব সোসাইটি’র ইউটিউব চ্যানেলে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকজন সত্তরোর্ধ্ব মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়, তাঁরা তাঁদের ‘ইয়ংগার সেলফ’কে কী পরামর্শ দিতে চান? তরুণদের উদ্দেশে কী বলতে চান বা তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ কী? তরুণ বয়সে কী করেননি বলে তাঁরা আফসোস করেন? সেখান থেকে জনপ্রিয় কয়েকটি উত্তর দেখে নিন—
১.
২. ‘আমি যদি সময়টা ফিরে পেতাম, তাহলে সঙ্গীকে আরও সময় দিতাম। সন্তানদের সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ খেলা করতাম। কেননা, সন্তানেরা দ্রুত বড় হয়ে যায়। তারুণ্য সঙ্গীর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার সেরা সময়। সেই সময়টা আমি অনেক বেশি নিজের পেশাজীবনে ঢেলে দিয়েছি। একটা সময় পার করার পর মনে হয়, জীবনসঙ্গী, পরিবার বা সন্তানদের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতি জীবনের সেরা সম্পদ। কেননা, জীবন একটাই।’
৩. ‘৩০ বছর দমকলকর্মী হিসেবে কাজ করেছি। এর আগে আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করতাম। একজন বিশ্বখ্যাত ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফারের সহকারী হিসেবে কাজ করার সুযোগও পেয়েছিলাম। তবে আমার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের মতো আমিও সহজ আর নিরাপদ বিকল্পটাকেই বেছে নিই। ফায়ারম্যান হিসেবে চাকরিতে ঢুকি। আমি বিয়ে করেছি। সন্তানেরা এখন তাঁদের সন্তান নিয়ে ভালোই আছে। আমাকে সুখীই বলা চলে। জীবনটা যেমন কাটিয়েছি, খারাপ না। তবে মাঝেমধ্যে মনে হয়, যদি তখন সাহস করে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়ে পড়তাম, জীবনটা অন্যরকম হতো। বন আর বন্য প্রাণীদের সঙ্গে একটা রঙিন উত্তেজনাময় জীবন আমার বুকের ভেতর আফসোস হয়ে বিঁধে আছে।’
আরও পড়ুনবয়স্কদের রোজা রাখার ক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের যেসব বিষয় মনে রাখতে হবে১৭ মার্চ ২০২৫এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো অন্যায়, অপরাধ কোরো না। নিজেকে আর নিজের পরিবারকে ছোট কোরো নাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জের চনপাড়ায় মাদক কারবার নিয়ে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্রে মাদক কারবারের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও দুজন।
গতকাল মঙ্গলবার রাত থেকে আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত স্থানীয় যুবদলের দুই পক্ষের নেতা-কর্মীর মধ্যে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে। নিহত যুবকের নাম হাসিব (২৮)। তিনি চনপাড়া পুনর্বাসনকেন্দ্রের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালালেও বর্তমানে বেকার ছিলেন। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিরা হলেন রাসেল (৩০) ও বশর (৩২)। তাঁরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানান হাসপাতালটির পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক ফারুক।
হাসিবের বড় ভাই যুবদল কর্মী বাবু জানান, সংঘর্ষ চলার সময় গতকাল রাত দুইটার দিকে হাসিব গুলিবিদ্ধ হন। মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত তিনটার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানান জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ–সার্কেল) মেহেদী ইসলাম। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর আজ সকালে র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে চনপাড়ায় যৌথ অভিযান চালানো হয়। তবে সংঘর্ষের ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারাবিহর নামাজের পর রবিন নামের এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন চনপাড়া সাংগঠনিক ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনির দেওয়ানের অনুসারীরা। তাঁকে স্থানীয় যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিনকে ছাড়িয়ে নিতে আসেন ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল করিম এবং ২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি গোলাম রাব্বানী। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা দফায় দফায় সংঘর্ষে রূপ নেয়।
স্থানীয় অন্তত দুজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারাবিহর নামাজ শেষে হাতাহাতির ঘটনার পর উভয় পক্ষের লোকজন আগ্নেয়াস্ত্র, টেঁটা, শাবল ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ভোর পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষ চলে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হন।
যুবদল নেতা মনির হোসেন বলেন, ‘চনপাড়াকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা আমাদের রয়েছে। গত রাতে এক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে লোকজন যুবদলের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন। পরে তাঁকে ছাড়িয়ে নিতে আমাদের ওপর হামলা করেন আমাদের দলেরই রাব্বানী, করিম ও তাঁদের অনুসারীরা। আমরা নিজেরা বাঁচার জন্য কেবল তাঁদের প্রতিরোধ করেছি। কিন্তু আমরা কোনো আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করিনি।’
প্রতিপক্ষের লোকজন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে তাঁদের ওপরে হামলা করেছেন বলেও দাবি করেন যুবদলের এই নেতা। তবে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেন মনির।
এ বিষয়ে আবদুল করিম ও মো. রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁদের মুঠোফোনের নম্বরে কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
আজ বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন রূপগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাহ উদ্দিন কাদের।