‘যখন বুঝতে পারলাম, শ্রোতা আমার কণ্ঠে মেলোডি গান শুনতেই বেশি পছন্দ করেন, তখন থেকে ভক্তদের প্রত্যাশা পূরণের দিকেই মনোযোগী ছিলাম। কিন্তু এও সত্যি যে, ভার্সেটাইল শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে গানের ভুবনে পা রেখেছিলাম। সেই চেষ্টা কখনও থেমে ছিল না। এই সময়ে এসে মনে হলো, এবার গায়কীতে নিজেকে ভেঙে আরও নতুনভাবে নিজেকে তুলে ধরা যায়। মেতে ওঠা যায় নিরীক্ষাধর্মী আয়োজনে। সেই ভাবনা থেকেই গান নিয়ে একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট করে যাচ্ছি।’
অবন্তী সিঁথির এ কথা থেকে স্পষ্ট যে, আগামী দিনগুলোয় শ্রোতারা তাঁকে আরও নতুনভাবে আবিষ্কারের সুযোগ পাবেন। তার আভাসও পাওয়া গেল যখন অবন্তী জানালেন, এরই মধ্যে তাঁর জীবনসঙ্গী অমিত দে’র সঙ্গে একটি এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন। সেখানে সুরকার ও সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন মিঠুন চক্র। সঙ্গে আরও আছেন গীতিকার রাসেল রহমান। শুধু তাই নয়, এই ত্রয়ী ক’দিন আগে ‘সহসা’ শিরোনামে একটি গান তৈরি করেছি।
সামনে আরও কিছু কাজের পরিকল্পনা আছে। এ গেল নিরীক্ষাধর্মী আয়োজনের খবর। তবে যে ধরনের গানের জন্য শ্রোতারা প্রহর গুনে যাচ্ছে, তেমন কিছু গানও প্রকাশ পাবে বছরের বিভিন্ন প্রান্তে। কারণ গত কয়েক মাসে এ সময়ের আলোচিত শিল্পীদের সঙ্গে কয়েকটি দ্বৈত গানও রেকর্ড করে ফেলেছেন। আর সেই গানগুলোয় পাওয়া যায় সময়ের ছাপ।
তাই এ কথা নিশ্চিন্তে বলা যায়, ‘দখিন হওয়া’, ‘মনটা বাড়িয়ে’, ‘গা ছুঁয়ে বলো’, ‘পাখি পাখি মন’, ‘রূপকথার জগতে’, ‘মায়া কারে বলে’, ‘আবছায়া’, ‘কেমন আছো বন্ধু তুমি’, ‘রাগ কমলে ফোন করিস’, ‘এত প্রেম এত মায়া’, ‘জলকণা’, ‘কথার জোনাকি’, ‘তোমার জন্য’, ‘বলে দিলেই তো হয়’, ‘আদরের নাও ছুঁয়ে’-এর মতো শ্রুতিমধুর আরও কিছু নতুন গান এই শিল্পীর কণ্ঠে শিগগিরই শোনার সুযোগ হবে।
এটুকু আশা করা বাহুল্য নয় এ কারণে যে, অবন্তী সিঁথি অনেক দিন আগেই পুরোনো পরিচয় ঝেড়ে ফেলে পুরোদস্তুর গানের মানুষ হয়ে উঠেছেন। কেন এমন সিদ্ধান্ত, তা সরাসরি জানিয়েও দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, শুরুতে ‘শিক্ষক ও শিল্পী’ দুই পরিচয় নিয়ে পথচলা শুরু করেছিলাম। ‘দুই নৌকায় পা দিয়ে চলা কি খুব কঠিন?’ নিজের কাছে এটাই ছিল প্রশ্ন। এও মনে হয়েছিল, পেশা আর নেশার জন্য একসঙ্গে দুই ধরনের কাজ তো করা যেতেই পারে। দেখি না কী হয়। ব্যস, এই ভাবনা থেকেই শিক্ষকতা আর গানের চর্চা চালিয়ে গেছি। কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম, একসঙ্গে দুই রকম পরিচয় বহন করা, কাজ চালিয়ে যাওয়া সহজ নয়। সবাই এটা পারে না।
এ কারণেই গুণীজনরা বলেন, ‘দুই নৌকায় পা দিয়ে চলতে নেই।’ তাদের সেই কথা মেনেই শেষমেশ একটা পথই বেছে নিয়েছি। যে পথের পথিকদের সখ্য শুধু সংগীতের সঙ্গে। শেষমেশ এই সিদ্ধান্তে এসেছি, কণ্ঠশিল্পী পরিচয় নিয়েই জীবনের বাকি পথটা পাড়ি দেব। আর এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ হয়েছে আমার আমার জীবনসঙ্গী অমিত দে’র কারণে। তাঁর পাশাপাশি শ্বশুরবাড়ির সবার কাছে গানের জন্য উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। সবচেয়ে কাছের মানুষ যখন কোনো কাজে উৎসাহ দেন, অনুপ্রেরণা জোগান সৃষ্টির নেশায় মেতে ওঠার, তখন কোনোভাবেই পিছিয়ে থাকার অবকাশ থাকে না।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১৬ বছর পর দুই বন্ধুর গান
জাহিদ আকবর ও লুৎফর হাসান সবশেষ একসঙ্গে কাজ করেছিলেন ২০০৯ সালে। ক্লোজআপ ওয়ান তারকা সালমার একক অ্যালবামে জাহিদ আকবরের লেখা গানে লুৎফর হাসানের সুরে সেটাই ছিল সর্বশেষ কাজ। তার আগে দুই বন্ধু একত্রে কাজ করেছিলেন ফাহমিদা নবীর গানেও। এছাড়াও একসঙ্গে আরও বেশকিছু কাজ রয়েছে তাদের। তবে গত ১৬ বছরে তাদের আর একসঙ্গে কাজ করা হয়ে ওঠেনি।
১৬ বছর পর আবার আসছে জাহিদ আকবরের কথায় লুৎফর হাসানের গান। ‘আকাশ হয়ে যাই’ শিরোনামে গানটিতে সুর করার পাশাপাশি কন্ঠ দিয়েছেন লুৎফর হাসান। তরিকের সঙ্গীতায়োজনে গানটির ভিডিও নির্মাণ করেছেন ফারহান আহমেদ রাফাত।
গানটি প্রসঙ্গে জাহিদ আকবর বলেন, ‘আকাশ হয়ে যাই’ গানটা আমি যে ধরণের গান লিখতে পছন্দ করি তেমনি একটা ঘোরলাগা প্রেমের গান। গানের বিষয়,শব্দ, বাক্য, উপমা সবকিছুতে প্রেম মিশে আছে। গানটার সুর শুনেছি বেশ আরামদায়ক একটা গান হয়েছে। বন্ধু লুৎফর হাসান নিজেও অসাধারণ গীতিকার। তার জন্য গান লেখা একটু কঠিন। এই কঠিন বিষয়গুলো করতে আমার ভালোলাগে। আকাশ হয়ে যাই সবার হোক।
তাদেরই আরেক বন্ধু সোমেশ্বর অলির লেখা ‘ঘুড়ি’ গান গেয়ে লুৎফর হাসান নিজের জায়গা পাকাপোক্ত করেছেন। যুগ পেরিয়ে তার ক্যারিয়ারে সফল গানের সংখ্যাও বেড়েছে। অন্যদিকে, অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে জাহিদ আকবরের লেখা বিভিন্ন গান জনপ্রিয় হয়েছে। পাশাপাশি সিনেমার গানেও তিনি রেখেছেন সফলতার স্বাক্ষর।
ধ্রুব মিউজিক স্টেশন (ডিএমএস) জানায়, এবারের ঈদ আয়োজনে ‘আকাশ হয়ে যাই’ গানটির ভিডিও প্রকাশ পাবে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে। এর পাশাপাশি গানটি শুনতে পাওয়া যাবে দেশি ও আর্ন্তজাতিক সব মিউজিক প্ল্যাটফর্মে।