ঠাকুরগাঁওয়ে অপহরণ–হত্যা: অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে ভাঙচুরের পর আগুন, মালামাল লুট
Published: 20th, March 2025 GMT
ঠাকুরগাঁওয়ে অপহৃত মিলন হোসেনের লাশ উদ্ধারের পর অভিযুক্ত একজনের বাড়িতে ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের মহেশপুরের বিট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঠাকুরগাঁও শহর থেকে প্রায় এক মাস আগে অপহৃত হয়েছিলেন মিলন হোসেন (২৩)। গতকাল বুধবার রাতে সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুরের বিট বাজার এলাকা থেকে মিলনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁও চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে। বিষয়টি জানাজানি হলে আজ ভোরে মিলনের এলাকার লোকজন এসে বিট বাজারের ওই বাড়িতে ভাঙচুর শুরু করেন। প্রথমেই বাড়ির জানালা–দরজা ভেঙে মালামাল লুট করা হয়। এরপর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
আজ সকাল ১০টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশে পুড়ে যাওয়া একটি ঘরের অবকাঠামোর কয়েকটি খুঁটি দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও কোথাও ধোঁয়া উড়ছে। ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির মূল কাঠামো ভেঙে তাতে আগুন দেওয়া হয়েছে। রান্নাঘর ও গোয়ালঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। বাড়িতে কয়েকটি দেয়াল ছাড়া কিছুই অবশিষ্ট নেই। উঠানের গাছপালাও কেটে ফেলা হয়েছে। অনেকে দেয়ালের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
গোয়ালঘরের ইট খুলে নিচ্ছিলেন কয়েকজন। তাঁদের কেউ নাম–পরিচয় বলতে রাজি হননি। ইট খুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাঁদের একজন বলেন, ‘এই বাড়ির কিছুই রাখিমোনি।’ এ সময় তিনি অন্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা সব মাটিত মিশায় দেও। খুনির নামনিশানা রাখিবোনি।’
মিজানুর রহমান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নিহত মিলনের বাড়ির এলাকার লোকজন এই ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছেন। বাড়ির মালামাল লুটপাট করতে তাঁদের সঙ্গে এই এলাকার লোকজনও যোগ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম মুসতাক বলেন, মানুষের ঢল এসে ওই বাড়িতে হামলা চালান। এরপর তাঁরা আগুন দেন। তাঁদের সামলানো সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুনদফায় দফায় বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, দেওয়ার পরও হত্যা করা হলো তরুণকে৪ ঘণ্টা আগেমিলন হোসেন হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র র এল ক ঠ ক রগ এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ, ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিয়েও পরিবার পেল লাশ
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করে একটি চক্র। অপহরণ চক্রের দাবি অনুযায়ী, ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলেও কলেজপড়ুয়া ছেলের লাশ পেল পরিবার। এ ঘটনায় জড়িত থাকায় পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলেজছাত্র মিলনের মরদেহও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তার একজন হলেন- সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়র রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। অপরজনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, প্রযুক্তির সহযোগিতায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকার করেছে, অপহরণের শিকার কলেজছাত্র মিলনকে হত্যা করেছে। গ্রেপ্তার সেজান আলীর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচ থেকে মিলনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কলেজপড়ুয়া মিলনকে অপহরণ করে একটি চক্র। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পেছনে প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মিলন। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ফোনে অপহরণের বিষয়টি জানায় চক্রটি। প্রথমে মুক্তিপণের জন্য ৩ লাখ টাকা চায় অপহরণকারীরা। পরে চক্রটি আরও ৫ লাখ দাবি করে। দফায় দফায় টাকার পরিমাণ বাড়াতে বাড়াতে সবশেষ ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারী চক্র। গত ৯ মার্চ রাতে মুক্তিপণের ২৫ লাখ টাকা অপহরণকারী চক্রের কাছে বুঝিয়ে দেন মিলনের বাবা পানজাব আলী।
মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র ও ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও এর চাপাপাড়া এলাকার পানজাব আলীর ছেলে।