নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নূরজাহান বেগম (৪৮) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে উপজেলার অভয়পাশা ইউনিয়নের গণিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত নূরজাহান গণিপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার স্ত্রী। হামলার সময় নূরজাহানের স্বামী, সন্তান ও শাশুড়ি আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক দম্পতিকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানিয়েছেন আটপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান। তাঁরা হলেন গণিপুর গ্রামের লাল মিয়া (৬৬) ও তাঁর স্ত্রী মঞ্জুরা বেগম (৫৮)।

পুলিশ, নিহত নূরজাহানের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবুল মিয়ার সঙ্গে তাঁর মামা লাল মিয়া ও তাঁর সন্তানদের জমিজমা–সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তাঁরা পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। গতকাল রাতে লাল মিয়ার দুই ছেলে মাসুদ মিয়া (৪০) ও এরশাদ মিয়া (৩৮) বাবুল মিয়ার ঘরে ঢুকে হামলা করেন। তখন তাঁরা সাহ্‌রি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হামলাকারী ব্যক্তিরা দেশি অস্ত্র দিয়ে বাবুল মিয়াকে আঘাত করতে গেলে তাঁর স্ত্রী নূরজাহান বাধা দেন। এ সময় নূরজাহানকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। এ সময় পাশের কক্ষে থাকা বাবুল মিয়ার ছেলে মারুফ মিয়া (১৮) ও তাঁর মা পরিষ্কারেন্নেচ্ছা (৭০) এগিয়ে এলে তাঁদের ওপরও হামলা করা হয়।

স্থানীয় লোকজন হতাহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক নূরজাহানকে মৃত ঘোষণা করেন। আর বাবুল মিয়া, তাঁর ছেলে ও মাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ওই ঘটনার পর আজ বৃহস্পতিবার সকালে লাল মিয়া ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করে পুলিশ।

বাবুল মিয়ার ছোট ভাই মো.

দীন ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আমার মামা লাল মিয়া ও তাঁর ছেলেরা আমার বড় ভাইয়ের ওপর হামলা করেন। এ সময় ভাবি তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁরা ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন। প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আমার ভাইয়ের পেট কেটে ভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। ভাতিজার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। আমার বৃদ্ধ মায়ের মাত ভেঙে যাওয়াসহ বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

ঘটনার পর পলাতক থাকায় অভিযোগের বিষয়ে লাল মিয়ার ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ হেফাজতে থাকায় লাল মিয়ার সঙ্গেও কথা বলা যায়নি। নেত্রকোনার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাহেব আলী পাঠান প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লাল মিয়া ও তাঁর স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ নিয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা খোরপোশ নিচ্ছেন শ্রাবন্তী?

স্ত্রী শ্রাবন্তী চ্যাটার্জির সঙ্গে পুনরায় সংসার করার জন‌্য মামলা দায়ের করেছিলেন রোশান সিং। কিন্তু তাতে সায় না দিয়ে বিয়েবিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন শ্রাবন্তী। শুধু তাই নয়, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে খোরপোশ বাবদ প্রতি মাসে ৭ লাখ রুপি (প্রায় ১০ লাখ টাকা) অর্থও দাবি করেছিলেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু এ মামলায় স্থগিতাদেশ দেন আদালত।

স্বামী রোশান সিংয়ের সঙ্গে কয়েক বছর আলাদা থাকার পর আইনিভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চ‌্যাটার্জির। কয়েক দিন আগে আনুষ্ঠানিকভাবে আলাদা হয়ে যান এই দম্পতি। কিন্তু খবর রটেছে, শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি খোরপোশ বাবাদ প্রতি মাসে ৭ লাখ রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা) নিচ্ছেন রোশানের কাছ থেকে। কিন্তু এ তথ্য কতটা সঠিক?

শ্রাবন্তীর আইনজীবী শ্যামল খোরপোশ নেওয়ার গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মিউচুয়াল বিচ্ছেদ হয়েছে। কোনো পক্ষেই খোরপোশ লেনদেন হয়নি। যা রটেছে তা সঠিক নয়। বরং শান্তিপূর্ণভাবে সব মিটেছে।”

আরো পড়ুন:

অবশেষে শ্রাবন্তীর বিবাহবিচ্ছেদ

শ্রাবন্তীকে আপত্তিকর স্পর্শ, তেড়ে গেলেন নায়িকা

দীর্ঘদিন ধরে শ্রাবন্তী-রোশান দম্পতির আইনি বিচ্ছেদ নিয়ে টানাপড়েন চলছিল। গত সেপ্টেম্বরে তারা পাকাপাকিভাবে বিচ্ছেদের পথে আরো একধাপ এগিয়ে যান। কেবল বাকি ছিল উভয়ের স্বাক্ষর। গত ৮ এপ্রিল এ মামলার শুনানির তারিখ ধার্য করেন আদালত। সেদিনই বিচ্ছেদের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতার ইতি টানেন এই জুটি। শ্রাবন্তীর প্রাক্তন স্বামী রোশান এসব তথ্য ভারতীয় গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেন।

২০০৩ সালে পরিচালক রাজীবের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন শ্রাবন্তী। এই দম্পতির সন্তান অভিমন্যু। রাজীবের সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর প্রেমিক কৃষাণ ভিরাজকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শ্রাবন্তী ও কৃষাণের বিয়ে হয়। কিন্তু বছর পেরুতেই বিবাহবিচ্ছেদের কথা জানান শ্রাবন্তী। ২০১৯ সালে রোশানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ