চট্টগ্রামে ছয় দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ, আটকা কক্সবাজারমুখী ট্রেন
Published: 20th, March 2025 GMT
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে চট্টগ্রাম নগরে সড়ক অবরোধ করেছেন ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। ফলে সিডিএ অ্যাভিনিউ সড়ক বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের ফলে কক্সবাজারমুখী একটি ট্রেনও ২ নম্বর গেট রেললাইন এলাকায় আটকে আছে। বিষয়গুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান।
আজ সকালে ৩০০ থেকে ৪০০ শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেট এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় তাঁরা ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হওয়া নানা বৈষম্যের বিপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁদের দাবি, গত মঙ্গলবার জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের জন্য যে ৩০ শতাংশ কোটার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ২ নম্বর গেট মোড়ে সড়কের ওপরেই বসে আছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁদের হাতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ব্যানারে সেখানে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটসহ আরও বেশ কয়েকটি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছেন। সিডিএ অ্যাভিনিউ সড়কের দুই পাশেই একই সময় ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ রাখা হয়েছে।
চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ আহামদ বলেন, আদালতের এই রায় বাতিল করতে হবে৷ জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদটি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বরাদ্দ ছিল। আদালত যে রায় দিয়েছেন, সেখানে নন–টেকনিক্যালদের কোটা দেওয়া হয়েছে। এটি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্য।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদে বাধ্যতামূলকভাবে ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দিতে হবে এবং ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের সব কারিগরি পদে কেবল কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা প্রয়োজন, বিশেষ করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির জন্য। তৃণমূল পর্যায়েও কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বাড়াতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের আবেদন করার সুযোগ প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া বেসরকারি খাতে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য একটি ন্যূনতম বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে, যাতে তাঁরা ন্যায্য পারিশ্রমিক পান। সর্বোপরি জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ৩০ শতাংশ ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, যেন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য অধিক নিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়।
ঘটনাস্থলে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সদস্যসচিব রইছ উদ্দিন বলেন, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদে সাধারণত নন–টেকনিক্যাল থেকে পাস করা ব্যক্তিরা যোগ দেন। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদটি কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য। নন–টেকনিক্যালদের কীভাবে কারিগরি পদে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর দেশের বন্ধুত্ব ও দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। গত বুধবার মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী মেক্সিকো সিটির ন্যাশনাল প্যালেসে তাঁর কাছে আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে তিনি এ প্রত্যাশার কথা জানান।
মেক্সিকো থেকে বাংলাদেশ দূতাবাস বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
মুশফিকুল ফজল আনসারী মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয়পত্র পেশের সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউমকে শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানান। পাশাপাশি তিনি মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল তাঁর মেয়াদকালে বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি উল্লেখ করেন, চলতি বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপনের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং জনগণের মধ্যে সরাসরি বিনিময় বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
মুশফিকুল ফজল প্রেসিডেন্ট শেইনবাউমের কাছে ঢাকায় একটি মেক্সিকান দূতাবাস স্থাপনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ঢাকায় মেক্সিকোর দূতাবাস স্থাপিত হলে তা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান এবং তাঁর কূটনৈতিক দায়িত্ব পালনে মেক্সিকো সরকারের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বাংলাদেশ ও মেক্সিকোর মধ্যে বন্ধুত্ব আরও গভীর করার এবং দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা শক্তিশালী করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।