ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে দেশীয় ফ্যাশনে অনন্য এক পরিচিতি তৈরি করা সাদাকালো ফ্যাশন ব্রান্ডটি এবার ঈদ উপলক্ষে নিয়ে এসেছে বিশেষ ফ্লোরাল মোটিফ কালেকশন। এই কালেকশন সাজানো হয়েছে কালো-সাদা রঙের অনন্য সমন্বয়ে ফুলের নকশায়, যা আধুনিক ফ্যাশনের সঙ্গে ঐতিহ্যকে ধারণ করে।
সাদাকালো সবসময়ই বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে পোশাকের মাধ্যমে তুলে ধরতে চায়। এই ঈদ কালেকশনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ফুলের মোটিভ, যা প্রকৃতি ও নান্দনিকতার সৌন্দর্যকে তুলে ধরে। শাড়ি, কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, বাচ্চাদের পোশাক সহ নানা বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের পোশাক এই সংগ্রহে রয়েছে।
এছাড়াও রয়েছে বাবা-ছেলে, মা-মেয়ের একই রকম পোশাক যা ঈদের আনন্দকে আরও রঙিন করে তুলবে। এবার প্রথমবারের মতো কো -অর্ড সেট কালেকশন এনেছে সাদাকালো। এবারের ঈদ যেহেতু গরমের মধ্যে পড়বে, সেহেতু আরামদায়ক কাপড়ের কথা মাথায় রেখেই পোশাক ডিজাইন করেছে সাদাকালোর ডিজাইনাররা।
প্রতিষ্ঠানটির উদ্যোক্তা -আজহারুল হক আজাদ বলেন, ‘ঈদ মানেই আনন্দ ও উদযাপন। আমাদের এবারের কালেকশন ফ্যাশনপ্রেমীদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা হবে, যেখানে তারা ঐতিহ্যবাহী পোশাকে পাবেন সমসাময়িক ডিজাইনের ছোঁয়া’।
নতুন এই কালেকশন পাওয়া যাবে সাদাকালোর সকল আউটলেট ও অনলাইন স্টোরে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাহ্রির সময় গাজায় হামলা, কাটছে না দুঃস্বপ্নের রাত
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার বাসিন্দাদের অনেকে তখন গভীর ঘুমে। কেউ কেউ সাহ্রির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এমন সময় বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে চারপাশ। রাতের অন্ধকারে আহত-রক্তাক্ত মানুষের আর্তচিৎকার এবং আতঙ্কিত মানুষের ছোটাছুটি। গত মঙ্গলবার থেকে এমন নৃশংস হামলার মধ্যে রোজা পালনের জন্য সাহ্রি করছেন গাজার বাসিন্দারা। নতুন করে হামলার ফলে জানুয়ারি থেকে চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির কার্যত সমাপ্তি ঘটেছে। এতে আবার দুঃস্বপ্নের রাত ফিরে এসেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এ উপত্যকায়।
১৫ মাস ধরে চলা নৃশংস হামলার পর গত জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি গাজাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছিল। বাড়িঘরে ফিরে ধ্বংসস্তূপ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা শুরু করেছিলেন তারা। পবিত্র রমজানে খাবার সংকটের মধ্যে নতুন করে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর থেকে গাজায় ২০০ শিশুসহ অন্তত ৫০৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯০৯ জন আহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই যুদ্ধবিধ্বস্ত এই অঞ্চলে কমপক্ষে ১১০ জন নিহত হয়েছেন। এ পর্যন্ত ইসরায়েলের আগ্রাসনে গাজায় অন্তত ৪৯ হাজার ৬১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা এক লাখেরও বেশি। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
তিনটি হাসপাতালের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, মধ্যরাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা করা হচ্ছে। আবাসিক ভবনকে লক্ষ্য করে বোমা ফেলা হচ্ছে। বুধবারেও রাতভর গাজায় বোমা নিক্ষেপ করেছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। তারা জানিয়েছে, হামাসের পরিকাঠামোগুলো লক্ষ্য করে এই আক্রমণ চালানো হয়েছে। যদিও হামাসের তরফে বলা হয়েছে, এতে বহু সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছেন।
আবার গাজায় মানবিক সহায়তা ও বাণিজ্যিক পণ্য সরবরাহের জন্য সবক’টি সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে সেখানে খাদ্য সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিছু পণ্যের দাম ২০০ শতাংশের বেশি বেড়ে গেছে।
ইসরায়েল সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মধ্য গাজায় একটি বাফার জোনের দখল নিতেই তারা স্থলবাহিনী পাঠিয়েছে। পাশাপাশি বিমানবাহিনীর আক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনারা বৃহস্পতিবার উত্তরাঞ্চলীয় রাজধানী গাজা শহরের অবরোধ পুনর্বহাল করেছে। তারা বাসিন্দাদের গাজা শহরের উত্তরে যাতায়াতের জন্য প্রধান রাস্তা ব্যবহার না করার জন্য সতর্ক করেছে।
অন্যদিকে ইয়েমেনের হুতি গোষ্ঠীরা ইসরায়েলে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্রের দায় স্বীকার করেছে। যদিও সেটা প্রতিহত করা হয়েছে। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক বিবৃতিতে হুতিদের সামরিক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তেল আবিবের কাছে বেন গৌরি বিমানবন্দর লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়েছিল।
গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরুর পর থেকে উত্তর গাজাকে দক্ষিণ থেকে বিভক্তকারী নেতজারিম করিডোর ৫০০ মিটার প্রস্থ থেকে ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। সুতরাং, এটি এখন আর শুধু করিডোর নেই। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ক্রমাগত সম্প্রসারণে এটি একটি বাফার জোনে পরিণত হয়েছে। ৮ কিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণের জন্য সেনাবাহিনী এলাকার অনেক আবাসিক ভবন ধ্বংস করে দিয়েছে। আশপাশে একটি নতুন প্রতিষ্ঠিত শহর ছিল, যা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। এখন ইসরায়েলি বাহিনী এটিকে আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা করছে। এর অর্থ হলো– আরও কৃষিজমি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে, দখলদার ইসরায়েলের বাণিজ্যিক রাজধানী তেল আবিব লক্ষ্য করে তিনটি দূরপাল্লার রকেট ছুড়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর মধ্যে একটি রকেট আটকে দিতে সমর্থ হয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। বাকি দুটি রকেট খোলা স্থানে পড়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
গাজায় অভিযান বন্ধের দাবিতে ইসরায়েলে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ এবং সেখানে অবরুদ্ধ জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে ইসরায়েলে। বুধবার রাজধানী জেরুজালেমে পার্লামেন্ট ভবনের কাছে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জেরুজালেমে বিগত বেশ কয়েক মাসের হিসেবে গতকালের বিক্ষোভ ছিল সবচেয়ে বড়।